খেলাধুলা

শেষ ১০ ওভারের ব্যাটিং-বোলিংয়েই যত সমস্যা

বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তিন জাতি আসরে চার ম্যাচের সবকটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। পরাজয়ের বৃত্তে আটকে থেকেই অস্ট্রেলিয়া যেতে হচ্ছে সাকিবের দলকে।

Advertisement

৪ ম্যাচেজর একটি জয়ও নেই। এই ত্রিদেশীয় আসর থেকে আসলে কি পেল বাংলাদেশ? প্রাপ্তির ভান্ডার তো শূন্য। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার কোন রসদ কি পেল সাকিবের দল? এ আসরে টাইগারদের ভুল-ত্রুটিই বা কি ছিল? ঠিক কোন কোন জায়গায় মার খেলো টিম বাংলাদেশ?

টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার শ্রীধরন শ্রীরাম তা খুঁজে বের করেছেন। এ ভারতীয় বিশেষজ্ঞর ধারনা, আসলে বাংলাদেশ ম্যাচের দ্বিতীয় অংশেই মার খেয়ে যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি। শেষ ১০ ওভারে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে করণীয় কাজগুলো ঠিকমত করা সম্ভব হচ্ছে না।

আজ, বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে শ্রীরাম অনেক কথার ভিড়ে তার দলের ঘাটতির জায়গা চিহ্নিত করে বলেন, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচেই আমাদের সুযোগ ছিল। প্রথম ম্যাচে শেষ ১০ ওভারে আমাদের ১০০ রান করতে হতো। আর আজ (বৃহস্পতিবার) শেষ ১০ ওভারে ১০০ রানকে ডিফেন্ড করা দরকার ছিল। দুটি ম্যাচেই আমরা অভিষ্ঠ লক্ষ্যের চেয়ে পিছনে থেকে থেকে গেছি। দুটি কাজের একটিও আমরা যথাযথভাবে করতে পারিনি; কিন্তু কঠিন সত্য হলো ভাল দল হলে এই শেষ ১০ ওভারে এসব করণীয় কাজগুলো করে দেখাতে হবে। আমাদের তা শিখতে হবে।’

Advertisement

শ্রীরাম যোগ করেন, ‘কোন নির্দিষ্ট একটি জায়গায় নয়, পুরো দলের সামষ্টিক বিষয় এটা।’

দল নিয়ে নানা পরীক্ষা-নীরিক্ষা চলছে। এক ওপেনিং জুটিতেই আনা হয়েছে ঘনঘন পরিবর্তন। এ তিন জাতি আসরে ৪ ম্যাচে তিনটি ওপেনিং জুটি খেলানো হয়েছে। সাব্বির-মিরাজ দিয়ে শুরু। তারপর নাজমুল হোসেন শান্ত আর লিটন দাস আর সর্বশেষ শান্ত ও সৌম্যকে দিয়ে ওপেন করানো হয়েছে।

শ্রীরাম এটাকে কোন এক্সপেরিমেন্ট মানতে নারাজ। তার ব্যাখ্যা, ‘আপনারা এটাকে একটা পরীক্ষা-নীরিক্ষা মনে করছেন; কিন্তু আমরা এটাকে কম্বিনেশনের অংশ হিসেবে দেখছি। ক্রিকেটারদের বিভিন্ন পরিবেশ পরিস্থিতিতে খেলিয়ে আমরা দেখতে চাই কার উত্তর কেমন হয়! আমার মনে হয় আমরা অনেক ধারনা পেয়েছি। আমি মাত্র একমাস আগে এসেছি। এখনো ছেলেদের সম্পর্কে জানছি। ধারনা নিচ্ছি। ছেলেদের সম্পর্কে আমাকে জানতেই হবে।’

নিজেদের বেস্ট পসেবল কম্বিনেশন নিয়ে তার ভাবনা কী? এমন প্রশ্নের জবাবে শ্রীরাম বলেন, ‘আমরা কোন সেরা দলকে খেলাতে চাই, সে সম্পর্কে আমাদের স্বচ্ছ ধারনা আছে। আমার মনে হয় আমি নিজে, অধিনায়ক ও টিম ডিরেক্টর সবারই পরিষ্কার ধারনা আছে।’

Advertisement

টাইগারদের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার জানিয়ে দিলেন তাদের মনে ও চিন্তায় দু থেকে তিন রকমের কম্বিনেশন আছে। তারা অন্তত দুই থেকে তিন রকমের কম্বিনেশন তৈরি করেছেন। সেগুলো পরিবেশ ও পরিস্থিতি বুঝে ব্যবহার করবেন।

শ্রীরাম আরও বলেন, ‘কোন দলের বিপক্ষে আমাদের কম্বিনেশন কেমন হওয়া উচিৎ, সে ধারনাটা আমরা পেয়ে গেছি। আমাদের মাথায় সম্ভাব্য সব বিকল্প তৈরি রাখার কথা ভাবতে হচ্ছে। আমরা খুবই পরিষ্কার যে কখন কোন কম্বিনেশনের প্রয়োগ ঘটাবো।’

কথায় পরিষ্কার সৌম্য সরকারের অ্যাপ্রোচ দেখে সন্তুষ্ট শ্রীরাম। এ বাঁ-হাতি টপ অর্ডার সম্পর্কে বলতে গিয়ে শ্রীধরন শ্রীরাম বলেন, ‘সৌম্য শট খেলতে গিয়ে আউট হয়েছে। সেটাই ছিল তার লক্ষ্য। আমার মনে হয় স্বার্থপরের মত খেলেনি। দলের জন্য খেলেছে। আমরা প্রথম ২ ওভারে ৬-৭ রান পেয়েছি মাত্র। সে রানের গতি বাড়াতে চেয়েছে। আউট হয়ে গেছে। সে তিন নম্বরে নেমে গতদিন একটি ভাল নক খেলেছে। এটা ভাল লক্ষণ। আমাদের কাজ হলো বাকিদের মাঝে আাস্থা স্থাপন করা।’

বাংলাদেশ বিশ্বকাপ দলে পরিবর্তন আসবে- এমন খবর রীতিমত চাওর হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরাও এমন আভাস দিয়েছেন। টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজারের মুখেও তেমন ইঙ্গিত, আমাদের হাতে আরও দুটি দিন আছে। আমরা নিজেদের মধ্যে শলা পরামর্শ করবো। কথা-বার্তা হবে। আমরা এখনো বিশ্বকাপ দলে পরিবর্তন আনতে পারি। আমরা জানি আমরা কি চাই। আপনাদের কয়েক দিনের ভেতরেই জানিয়ে দেব।’

এআরবি/আইএইচএস