বিশ্বজুড়ে দ্রুত উজাড় হচ্ছে বন। দূষিত হচ্ছে সমুদ্রের পানি। আর তার জেরে কমে যাচ্ছে বন্যপ্রাণীর জনসংখ্যা। বিশ্ব বন্যপ্রাণী তহবিলের (ডব্লিউডব্লিউএফ) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন বলছে, ১৯৭০ সালের পর থেকে পৃথিবীতে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা কমে গেছে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি।
Advertisement
লন্ডনের জুওলজিক্যাল সোসাইটির (জেডএসএল) সংরক্ষণ ও নীতি বিষয়ক পরিচালক অ্যান্ড্রু টেরির মতে, এটি ‘গুরুতর পতন’। এ ঘটনা আমাদের বলছে, প্রকৃতি উন্মোচিত হচ্ছে এবং প্রাকৃতিক দুনিয়া শূন্য হয়ে যাচ্ছে।
পাঁচ হাজারের বেশি প্রজাতির প্রায় ৩২ হাজার বন্যপ্রাণীর অবস্থার বিষয়ে জেডএসএলের ২০১৮ সালের তথ্য ব্যবহার করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে ডব্লিউডব্লিউএফ। এতে দেখা গেছে, বন্যপ্রাণীর সংখ্যা গড়ে ৬৯ শতাংশ কমে গেছে। এর জন্য বন উজাড়, মানুষের হস্তক্ষেপ, দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয়েছে।
লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি কমে গেছে। ওই অঞ্চলগুলো মাত্র পাঁচ দশকে ৯৪ শতাংশ বন্যপ্রাণী হারিয়েছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রাজিলের আমাজনে পিংক রিভার ডলফিনের সংখ্যা ১৯৯৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ৬৫ শতাংশ কমেছে।
Advertisement
টেরি বলেন, এই ফলাফলের সঙ্গে ডব্লিউডব্লিউএফের ২০২০ সালের মূল্যায়নের ব্যাপক মিল রয়েছে। এতে দেখা যায়, বন্যপ্রাণীর সংখ্যা প্রতি বছর প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমে যাচ্ছে।
ডব্লিউডব্লিউএফ-ইউকে’র বিজ্ঞান বিষয়ক পরিচালক মার্ক রাইট বলেন, প্রকৃতি তখনো ভয়ংকর দশায় ছিল, এখনো আছে। যুদ্ধে অবশ্যই হার হচ্ছে।
তবে প্রতিবেদনে কিছুটা আশার আলোও দেখা গেছে। কঙ্গোর কাহুজি-বিয়েগা জাতীয় উদ্যানে গরিলার সংখ্যা ১৯৯৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ৮০ শতাংশ কমে গেলেও ভিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যানের নিকটবর্তী পর্বতে এই প্রাণীর সংখ্যা ২০১০ সালে প্রায় ৪০০টি থেকে বেড়ে ২০১৮ সালে ৬০০’র বেশি হয়েছে।
এরপরও দ্রুতগতিতে বন্যপ্রাণী কমে যাওয়া ঠেকাতে বাড়তি সহযোগিতার আহ্বান জোরালো হচ্ছে। বিশ্বের উদ্ভিদ ও প্রাণীদের রক্ষায় নতুন কৌশল তৈরির জন্য সারা বিশ্বের প্রতিনিধিরা আগামী ডিসেম্বরে মন্ট্রিলে সমবেত হবেন। বিশ্বব্যাপী প্রাণী সংরক্ষণ প্রচেষ্টার জন্য অর্থায়ন বৃদ্ধির বিষয়েই বেশি আহ্বান জানানো হচ্ছে। ডব্লিউডব্লিউএফ-এর আফ্রিকার আঞ্চলিক পরিচালক অ্যালাইস রুহওয়েজা বলেন, প্রকৃতিকে রক্ষার জন্য আমরা ধনী দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
Advertisement
কেএএ/টিটিএন