মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বৈশ্বিক মন্দা ও জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে খাদ্যসহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে বেশ কিছু দেশ। এর মধ্যে সবচেয়ে সমস্যায় রয়েছে গরিব দেশগুলো। আগামী বছর বিশ্ব অর্থনীতির সংকট আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
Advertisement
এ অবস্থায় তুলনামূলক গরিব দেশগুলোকে আরও সহায়তা দেওয়া ও ঋণ আদায়ে ছাড় দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে বলে জানান বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভায় তিনি এ কথা জানান।
ম্যালপাস বলেন, করোনার ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এর প্রভাবে ওলটপালট হয়ে গেছে বিশ্ব অর্থনীতির হিসাব-নিকাশ। এতে গেলো বছরের তুলনায় আগামীতে গোটা বিশ্বের প্রবৃদ্ধি নেমে আসবে অর্ধেকে। জ্বালানির অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে অস্থির পণ্য বাজারের বিষয়ে খুব বেশি সুখবর দেয়নি আইএমএফ। আর তাই ২০২৩ সালে বিশ্ব মূল্যস্ফীতি দাঁড়াবে প্রায় ৯ শতাংশে।
Advertisement
এদিকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য অবকাঠামোসহ বেশ কয়েকটি খাতে বিশ্বব্যাংককে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনায়েদ কামাল আহমেদ বলেন, চলতি বছরের চেয়ে আগামী বছর বিশ্ব অর্থনীতির সংকট আরও বাড়বে। এ বছরই প্রবৃদ্ধি তিন দশমিক দুই শতাংশে নেমে যাবে। এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ। তবে সেই শঙ্কা থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশের জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
মূল্যস্ফীতি যত সম্ভব নিয়ন্ত্রণে রেখে দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়ার পরামর্শ বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্টের।
আইএমএফ প্রধান ও অর্থনীতিবিদ পিয়েরে ওলিভিয়ার গৌরিংচাস বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার ২০২১ সালে চেয়ে ৬ শতাংশ থেকে কমে এবার হবে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। আর ২০২৩ সালে তা আরও কমে দাঁড়াবে ২ দশমিক ৩ শতাংশ।
Advertisement
এদিকে ডলারের শক্তিশালী অবস্থা ছোট অর্থনীতির দেশগুলোকে ভোগাচ্ছে। সে কথাও মনে করিয়ে দিলেন এই অর্থনীতিবিদ।
আইএমএফ প্রধান বলেন, আমাদের হিসাব বলছে ২০২৩ সালে বিশ্বে জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে দাঁড়াবে ৮ দশমিক ৮ শতাংশে। এরপর এ খরচ কিছুটা কমে ছয় ঘরে নামবে। তবে উন্নত বিশ্বে প্রবৃদ্ধি কমায় পুরো পৃথিবী চাপে পড়বে।
তবে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনায়েদ কামাল আহমেদ বলেন, এখনো স্বস্তিতে আছে বাংলাদেশ। এটা ধরে রাখতে হলে সরকারকে আরও জনমুখী উদ্যোগ নিতে হবে।
এমওএস/জেডএইচ/এমএস