শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় প্রেমিক সাহরিয়ার নাজিম জয়কে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছেন প্রেমিকার দেবর। এমন অভিযোগ স্বজনদের। এ ঘটনায় মামলা হলে আদালতের নির্দেশে জয়ের মরদেহ দাফনের দুমাস আটদিন পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। রোববার (৯ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গোসাইরহাট পৌরসভার দাশেরজঙ্গল গ্রামের কবর থেকে তার মরদেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় গোসাইরহাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুজন দাস গুপ্ত ও গোসাইরহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ওবায়দুল হকের উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
সাহরিয়ার নাজিম জয় (২০) শরীয়তপুরের গোসাইরহাট পৌরসভার দাশেরজঙ্গল গ্রামের জামাল সরদারের ছেলে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি বড়। জয় গোসাইরহাট সরকারিসামসুর রহমান কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
জয়ের বাবা জামাল সরদার বলেন, ‘আমার ছেলে সাহরিয়ার নাজিম জয়ের সঙ্গে বড় ভাই কামাল উদ্দিন সরদারের মেয়ে সানজিদা আক্তার তিশার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে আমার ভাই তিশাকে এক বছর আগে গোসাইরহাট বটনা গ্রামের বাচ্চু সরদারের ছেলে জিতু সরদারের (২৬) কাছে বিয়ে দেয়। বিয়ের পরও তিশা জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতো। তাই জিতু সরদার জয়ের উপর ক্ষিপ্ত ছিল। ১ আগস্ট দুপুরে জিতু সরদারের ভাই রাকিব সরদার (২২) মোবাইল ফোনে জয়কে বাড়ির উঠানে ডেকে নেয়। মোটরসাইকেলে গোসাইরহাটের গরিবের চর নিয়ে যায়। বিকেল সাড়ে ৩টায় তিশার শ্বশুর বাচ্চু সরদার (৫৫) আমাকে ফোন দিয়ে বলে আপনার ছেলে গরিবের চর বালুরচর এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছে, আপনি গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন।
জামাল সরদার আরও বলেন, কিন্তু ছেলের শরীরে ফাটা কিংবা কাটা ছেড়া দাগ ছিল না। জিতু সরদার, কামাল উদ্দিন সরদাররা মিলে ময়নাতদন্ত না করে তড়িঘড়ি করে রাত ১০টার দিকে আমার বাড়ির পাশে জানাজা শেষে জয়ের দাফন সম্পন্ন করে। এ নিয়ে থানায় মামলা করতে গেলেও নেয়নি। তাই ৬ সেপ্টেম্বর জিতু সরদার, রাকিব সরদার, বাচ্চু সরদার, সানজিদা আক্তার তিশা, মো. কামাল উদ্দিন সরদার, ফেরদৌসী বেগম, মাইনুল সরদারের নাম উল্লেখ করে ৫-৭ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ছেলের হত্যাকারীদের বিচার দাবি করছি।
Advertisement
গোসাইরহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ওবায়দুল হক জাগো নিউজকে বলেন, আমরা শুনেছি জয় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। মরদেহ দাফনের পর আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। পরে তারা আদালতে মামলা করেছেন। ওই সময় ময়নাতদন্ত হয়নি। তাই আজ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গোসাইরহাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুজন দাস গুপ্ত জাগো নিউজকে বলেন, ওই সময় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফন করা হয়েছিল। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আজ ৯ অক্টোবর শরীয়তপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম কবর থেকে মরদেহ তোলার নির্দেশ দেন। তাই মরদেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি।
মো. ছগির হোসেন/এসজে/এমএস
Advertisement