গণমাধ্যম

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রয়াত ১৬ সদস্যকে স্মরণ

জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দৈনিক বাংলার সদ্যপ্রয়াত সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য তোয়াব খান এবং সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিনসহ প্রয়াত ১৬ সদস্যের স্মরণে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

Advertisement

শনিবার (৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ সভা হয়।

সভায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য তোয়াব খান, সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, গীতিকার কবি কে জি মোস্তফা, এস এম শওকত হোসেন, রাজা সিরাজ, মো. শামীম মাশরেকী, সৈয়দ আকরাম, খন্দকার আনিছুর রহমান, পীর হাবিবুর রহমান, শামসুল আলম বেলাল, সাগর বিশ্বাস, এ এম মুফাজ্জল, এইচ এম জালাল আহমেদ, আবুল বাশার নূরু, শফিকুল ইসলাম ইউনূস, গিয়াস উদ্দিন আহমেদকে স্মরণ করা হয়। সভায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, করোনা অতিমারির ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই গত এক বছরে আমরা হারিয়েছি আরও অনেক স্বজন, সুহৃদকে। সাংবাদিকতা পেশার উন্নয়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধির ধারাবাহিক যে চর্চা ও প্রয়াস সে অভিযাত্রার বেশ কয়েকজন অগ্রসৈনিককে আমরা হারিয়েছি।

তিনি বলেন, তারা প্রত্যেকেই তাদের চিন্তা-চেতনা দিয়ে সাংবাদিকতাকে সমৃদ্ধ করেছেন। আজকে আমরা যাদের কথা বলছি, তাদের মধ্যে অন্যতম তোয়াব খান। মাত্র কয়েক দিন আগেই আমরা তাকে হারিয়েছি। আমরা ভাবতেও পারিনি তাকে নিয়ে স্মরণ সভা করবো, এ তালিকায় তিনি যুক্ত হবেন। ৮৭ বছর বয়সেও তিনি একটা নতুন পত্রিকার হাল ধরেছেন। একই সঙ্গে আমরা হঠাৎ করেই রিয়াজ ভাইকেও হারিয়েছি। যিনি চারবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের জন্য কাজ করেছেন। আমরা তাদের স্মরণ করি ও সম্মান জানাই। প্রতি বছর প্রয়াত সদস্যদের নিয়ে স্মরণ সভা করে আমরা তাদের সম্মান দিয়ে থাকি।

Advertisement

ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আমরা যাদের কাছে লিখতে শিখেছি তাদের অন্যতম তোয়াব খান, রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, পীর হাবিবুর রহমান। তাদের হারানো আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। পীর হাবিবুর রহমান সত্য প্রকাশ করতে কখনো কুণ্ঠিত হতেন না।

তিনি আরও বলেন, কে কোন দলের রাজনীতি বা কে কোন দলের মতাদর্শের ছিলেন, আমরা কিন্তু সেটা বিবেচনা করিনি। আমরা সাংবাদিকদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, করোনা মহামারির সময় অন্য পেশার মতো সাংবাদিকতা পেশায়ও অস্বাভাবিক ওলটপালট বিপর্যয় ঘটেছিল। জীবিকার অনিশ্চয়তার পাশাপাশি সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনযাপন করাও দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার চাপ সামলাতে না পেরে অনেকের মৃত্যু ত্বরান্বিত হয়েছে। গত এক বছরে আমরা হারিয়েছি ক্লাবের জীবন সদস্য সাংবাদিক সম্প্রদায়ের অভিভাবক ও বাতিঘর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক তোয়াব খান, ক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, বরেণ্য গীতিকার ও কবি কে জি মোস্তফাসহ মোট ১৬ জন সুহৃদ সদস্যকে।

ইলিয়াস খান আরও বলেন, অনন্ত লোকে যারা চলে গেছেন, তাদের আত্মীয়-পরিজনের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা। তাদের প্রিয়জন হারানোর যে মনঃকষ্ট, তার অংশীদার আমরাও। আত্মীয় বিয়োগের আঘাত ও প্রবল শোক সহ্য করার মতো শক্তি ও ধৈর্য যেন আল্লাহ তাদের দান করেন।

Advertisement

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, যারা সাংবাদিকতা করতে চান, লেখালেখি করতে চান, তাদের তোয়াব খান উৎসাহ দিয়েছেন। রিয়াজ উদ্দিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ কাজ করে গেছেন সাংবাদিকদের জন্য। সাংবাদিকদের অধিকার নিয়েও কথা বলেছেন তিনি।

সভায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তরুণ ও প্রবীণ সদস্য, নিহত সাবেক সদস্যদের আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এমআইএস/এমআইএইচএস/এএসএম