রাজনীতি

বিএনপিতে সাবেক ছাত্রদল নেতাদের যথার্থ মূল্যায়ন হচ্ছে?

আগামী জাতীয় নির্বাচন ও আন্দোলন-সংগ্রাম সফল করতে সাবেক ছাত্রদল নেতারাই এখন বিএনপির ভরসা। দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটি থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের আসীন করা হয়েছে। দলের ৮২টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে অর্ধশতাধিক ইউনিটে ছাত্রদলের সাবেক নেতারা দায়িত্ব পালন করলেও কেন্দ্রে সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের বাইরে তেমন কেউ গুরুত্বপূর্ণ পদে নেই। তবে সাবেক নেতাদের দাবি, বিএনপিতে সাবেক ছাত্রদল নেতাদের বেশি ব্যবহার করা গেলে দল আরও শক্তিশালী হবে। দলে জাতীয়তাবাদী শক্তির পূর্ণতা পাবে।

Advertisement

হাজি শামসুল আলম হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনে দায়িত্ব পালন করে এ পর্যায়ে এসেছেন। সাবেক ছাত্রদল নেতাদের বিএনপিতে মূল্যায়ন হচ্ছে জানিয়ে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ১৯৭৮ সালে ছাত্রদল করেছি, তারপর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছি; এখন বিএনপির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। বিএনপিতে সাবেক ছাত্রদল নেতাদের মূল্যায়ন হচ্ছে। ওয়ার্ড ইউনিয়ন পর্যায়েও সাবেক ছাত্রদল নেতারা দায়িত্ব পালন করছেন।

আরও পড়ুন: বিবাহিতসহ নানা অভিযোগ, ছাত্রদলের ৩২ নেতার পদ স্থগিত

৫০২ সদস্য বিশিষ্ট বর্তমান বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটিতে ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদ, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক সভাপতি রুহুল কবির রিজভী সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল যুগ্ম মহাসচিব, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ড. আসাদুজ্জামান রিপন বিশেষ সম্পাদক, সাবেক ছাত্রদল নেতা শিরিন সুলতানা স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক ছাত্রনেতা বিলকিস জাহান শিরিন সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম-আহ্বায়ক এবিএম মোশাররফ হোসেন প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল তথ্য বিষয়ক সম্পাদক, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম সহ-প্রচার সম্পাদক, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল সহ-তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব শেষ করে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য।

Advertisement

ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সাবেক সহ-সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশিদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাসান শ্যামল এখন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে রয়েছেন।

বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ছাত্রদলের সাবেক নেতারাছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজিব আহসান স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবুল কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক।

জেলার নেতৃত্বে ছাত্রদলের সাবেক নেতারা

ঢাকা বিভাগ

Advertisement

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক আহ্বায়ক ও ছাত্রদল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি ছিলেন। নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবীর খোকন ছাত্রদল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ছিলেন। একইসঙ্গে গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি একেএম ফজলুল হক মিলন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুজ্জামান রতন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ছাত্রদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি এবং ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল থেকে ফজলুল হক হলের ভিপি ছিলেন।

ঢাবিতে ছাত্রদল-ছাত্রলীগ সংঘর্ষের ফাইল ছবি

আরও পড়ুন: ছাত্রদলের নেতৃত্বে ‘অবিবাহিত’ শর্ত কতটা যৌক্তিক?

এ বিভাগের মধ্যে ফরিদপুরের আহ্বায়ক সৈয়দ মোদারসের আলী ইছা জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং সদস্য সচিব একেএম কিবরিয়া স্বপন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি, ফরিদপুর মহানগরের সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ ছাত্রদল থেকে ফরিদপুর সরকারি ইয়াছিন কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ও জিএস, মাদারীপুরের সদস্য সচিব জাহান্দার আলী জাহান জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজের জিএস, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম জেলার কুলিয়ারচর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি, নারায়ণগঞ্জের সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক, মানিকগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

চট্টগ্রাম বিভাগ

ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সভাপতি শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক। এ বিভাগের চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ছাত্রদলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করও নগরীর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি, ফেনীর আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সদস্য সচিব আলাউদ্দিন আলাল জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি, খাগড়াছড়ির সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ ভুইয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। বান্দরবানের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি, কুমিল্লা মহানগরের সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান সরকার উত্তর জেলা ছাত্রদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক ও সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সী ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের সদস্য ছিলেন। এছাড়া রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ মো. শাহ আলমও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। তিনি গত ২১ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।

রাজশাহী বিভাগ

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রেজাউল করিম বাদশা জেলা ছাত্রদলের সদস্য, সিরাজগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু ছাত্রদল থেকে সিরাজগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস, পাবনার সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট খন্দকার মাকসুদুর রহমান মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হাবিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক, জয়পুরহাটের প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক গোলজার রহমান জেলা ছাত্রদলের সদস্য, নওগাঁর আহ্বায়ক আবু বক্কর নান্নু ও সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ দুজনই জেলা ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। নান্নু নওগাঁ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও জেলার সদস্য এবং পলাশ কলেজের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন।

খুলনা বিভাগ

খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও মহানগর সভাপতি, খুলনার আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সুন্দরবন কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস এবং জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস, যশোরের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবু ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও জেলার সভাপতি, সাতক্ষীরার সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ ইফতেখার আলী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি, নড়াইলের সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম খুলনা বিএল কলেজ ছাত্রদলের ক্রীড়া সম্পাদক ও জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক, ঝিনাইদহের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি, কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন ছাত্রদল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (ডাকসু) ক্রীড়া সম্পাদক পদে প্রার্থী, ঝিনাইদহের সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন।

মাঠ পর্যায়ে আন্দোলন-সংগ্রামে বাধার মুখে ছাত্রদল-ফাইল ছবি

বরিশাল বিভাগ

বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক, বরিশাল দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক মজিবুর রহমান নান্টু ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন কেন্দ্রীয় বিভাগীয় সহ-সভাপতি ও জেলার আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিব আখতার হোসেন মেবুল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি, বরগুনার সদস্য সচিব তারিকুজ্জামান টিপু উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক, পিরোজপুরের আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও জেলা সদস্য সচিব গাজী ওহিদুজ্জামান লাভলু জেলা ছাত্রদলের সভাপতি, ভোলা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন।

সিলেট বিভাগ

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা ও জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহম্মদ চৌধুরী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি, সিলেট মহানগর সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি, সুনামগঞ্জের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক, মৌলভীবাজারের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রদল থেকে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি এবং হবিগঞ্জের যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ জি কে গউছ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন।

রংপুর বিভাগ

রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু কারমাইকেল কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য সচিব মাহফুজ-উন-নবী ডনও একই কলেজের ছাত্রদলের সভাপতি, রংপুর জেলার সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকুও কারমাইকেল কলেজের ছাত্রদলের নেতা, দিনাজপুরের সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ কচি জেলার পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি, পঞ্চগড়ের সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি, কুড়িগ্রামের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ ফজলুল হক শাখা সংসদের সহকারী ক্রীড়া সম্পাদক, গাইবান্ধার সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুন্নবী টিটুল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন।

ময়মনসিংহ বিভাগ

ময়মনসিংহ জেলা বিএনপি দক্ষিণের আহ্বায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি, ময়মনসিংহ মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি, ময়মনসিংহ উত্তরের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও অবিভক্ত জেলা ছাত্রদলের সভাপতি এবং জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আহমেদ তায়েবুর রহমান হিরণ গৌরীপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক, জামালপুরের সভাপতি ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম ছাত্রদল থেকে সরিষাবাড়ী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি, নেত্রকোনার সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হেলালী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন।

ছাত্রদলের সাবেক নেতারা যারা বিএনপি থেকে ঝরে পড়েছেন

১৯৮৩ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন আবুল কাশেম চৌধুরীর। এরশাদ সরকারের সময় বিএনপি ছেড়ে চলে যান জাতীয় পার্টিতে। এর কিছুদিন পরই রাজনীতি থেকে সরে যান তিনি। ১/১১-এর সময় তিনি পিডিপিতে যোগ দিলেও বর্তমানে কোনো দলের সঙ্গে যোগাযোগ নেই তার।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে ছাত্রলীগ নেতাদের পাশেই কর্মসূচি করলো ছাত্রদল

১৯৮১ সালে আহ্বায়কের পদে আসেন গোলাম সারোয়ার মিলন। পরে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। বিএনপির রাজনীতি ছেড়ে এরশাদ সরকারের সময় জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়েছেন। সেখানে মানিকগঞ্জের একটি আসন থেকে এমপি এবং শিক্ষা উপ-মন্ত্রী হয়েছিলেন। পরবর্তীসময়ে জাতীয় পার্টির রাজনীতি থেকে সরে যান তিনি। ১/১১ এর সময় আবারও রাজনীতিতে সক্রিয় হন ফেরদৌস কোরেশীর দল পিডিপিতে। পরবর্তীসময়ে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্পধারায় যোগ দেন। গত সংসদ নির্বাচনে বিকল্প ধারার কুলা প্রতীক নিয়ে মানিকগঞ্জ-৪ আসনে নির্বাচন করে পরাজিত হন।

১৯৮৬ ও ৮৭ সালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন জালাল আহমেদ। বিএনপির রাজনীতি ছেড়ে এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। পরে রাজনীতি ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়।

১৯৯০ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত আমানউল্লাহ আমানের আহ্বায়ক পদে থাকাকালীন যুগ্ম-আহ্বায়কের পদে ছিলেন সানাউল হক নীরু। বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে একাধিকবার দুর্ব্যবহার করে বর্তমানে দলচ্যুত। ২০০৩ ও ২০০৪ সালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলে সাহাবুদ্দিন লাল্টু। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে অভিমানে দল ছেড়েছেন তিনি। বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন লাল্টু।

ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের মধ্যে মারা গেছেন যারা

১৯৭৯ সালে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক ছিলেন কাজী আসাদুজ্জামান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রনেতা সর্বশেষ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে মৃত্যুবরণ করেন।

নানা হয়রানি উপেক্ষা করে মাঠে থাকে ছাত্রদল-ফাইল ছবি

১৯৭৯ সালে ছাত্রদলের প্রথম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন আকম গোলাম হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নেতা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন দীর্ঘদিন। বিএনপির একজন বুদ্ধিজীবী হিসেবে তার ছিল খ্যাতি। বেশ কয়েক বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।

ছাত্রদল প্রতিষ্ঠার পর তখনকার সময়ে জিয়ার জনপ্রিয়তার জন্য অনেক মেধাবী তরুণ অনুপ্রাণীত হয়ে ছাত্রদলে যোগদান করেন। মাহবুবুল হক বাবলু তাদেরই একজন, তিনি তুমুল জনপ্রিয় এক ছাত্রনেতা ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাহবুবুল হক বাবলু ও তার সহোদর সানাউল হক নীরু আশির দশকের কিংবদন্তির নাম। ঢাকা শহরে তখন ছাত্রদলের যে মিছিল বের হতো নীরু-বাবলু সে মিছিলের নেতৃত্ব দিতেন। স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে তখন এ দেশের ছাত্রসমাজ আন্দোলনে একাট্টা। নীরু-বাবলু ছিলেন এই আন্দোলনের মধ্যমণি। ১৯৮৭ সালের ১০ মার্চ ছাত্র ধর্মঘট আহ্বান করা হয়। এর আগে ৯ মার্চ মুহসীন হলে খুব কাছ থেকে বাবলুকে গুলি করা হয়। এরপর ঘটনা ধামাচাপা দিতে শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। রক্তাক্ত বাবলুকে তৎকালীন পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেই তিনি মারা যান। বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়া হাসপাতালে বাবলুর মরদেহ দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি মাহবুবুল হক বাবলুকে সর্বকালের সেরা সংগঠক হিসেবে উল্লেখ করেন।

আরও পড়ুন: বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে খোকন-শ্যামল

ছাত্রদলের প্রথম কেন্দ্রীয় সভাপতি এনামুল করিম শহিদ। ১৯৭৯ সালের শেষ দিকে পদ পান তিনি। বিএনপির রাজনীতি ছেড়ে এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। সেখানে কোনো পদ-পদবি মেলেনি তার। পরে রাজনীতি ছেড়ে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নামে কলেজ প্রতিষ্ঠা করে সেখানেই অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কয়েক বছর আগে তিনি অবসরে যান। ২০২১ সালের ৬ জুলাই তার মৃত্যু হয়।

১৯৮৬ সালের শেষ দিকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হয়ে ১৯৮৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছিলেন। এরশাদ সরকারের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলে বোমা হামলায় নিহত হন তিনি। ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন নাসিরুদ্দিন আহমেদ পিন্টু। এরপর ২০০০ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ছিলেন কেন্দ্রীয় সভাপতি। অষ্টম জাতীয় সংসদে ঢাকার লালবাগ-কামরাঙ্গীচর আসনে সংসদ সদস্যও ছিলেন। ২০০৯ সালে সংঘটিত পিলখানায় বিডিআর হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৫ সালের ৩ মে তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে মারা যান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরের যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলেন।

২০০৫-২০০৯ পর্যন্ত শফিউল বারী বাবু ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক। সর্বশেষ তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। ২০২০ সালের ২৮ জুলাই মারা যান।

১৯৯২ সালের শেষ দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এম ইলিয়াস আলী। সাবেক এই সংসদ সদস্য ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে নিজ বাসায় ফেরার পথে রাজধানী ঢাকার মহাখালী থেকে নিখোঁজ হন। তখন থেকেই কোনো হদিস মেলেনি তার। ইলিয়াস আলী ছিলেন একসময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক থাকাকালেই গুম হয়েছিলেন তিনি। পরে জাতীয় সম্মেলনে ইলিয়াস আলীর নাম আর কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাখা হয়নি। এ নিয়ে সিলেট বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। তবে তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদী লুনা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা।

ছাত্রদলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে সভাপতি পদে এবং সবশেষ ডাকসু নির্বাচনের ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা মো. এরশাদ খান বর্তমানে যুবদলের পদপ্রত্যাশী। বিএনপিতে সাবেক ছাত্রদল নেতাদের যথার্থ মূল্যায়ন হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের একটা বড় অংশ এখনো সাংগঠনিক কাঠামোর বাইরে আছে। মৌলিক জায়গাগুলোতে এখনো ছাত্রনেতারা সেভাবে আসেনি। সরকারের পতনের জন্য ছাত্রনেতাদের দায়িত্বশীল পদে বসানো হলে সরকার পতন আন্দোলন ত্বরান্বিত হবে।

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ইকবাল হাসান শ্যামল বলেন, ছাত্রদল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রোডাকশন হাউজ। ছাত্রদলের সাবেক নেতারাই বিএনপির মূল চালিকাশক্তি। বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোতে ধারাবাহিকভাবে ছাত্রদলের সাবেক নেতারাই নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ছাত্রদলের নেতাদের সবসময়ই মূল্যায়ন করে এবং ভবিষ্যতেও করবে।

ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু বলেন, বরাবরের মতো সাবেক ছাত্র নেতাদের দিয়ে বিএনপি আন্দোলন রূপরেখা বাস্তবায়ন করছে। সেই ধারাবাহিকতায় যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ছাত্রদল নেতারা এসেছেন। বিএনপি’র গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করছেন। স্থায়ী কমিটিতে ছাত্রদলের নেতাদের অংশগ্রহণ সীমিত, প্রত্যাশা করি যারা ওই পর্যায়ে উন্নীত হয়েছেন তাদের ব্যাপারে দল বিবেচনা করবে। ছাত্রদলের মাধ্যমে যদি জাতীয়তাবাদী কর্মী তৈরি হয় তাহলে সেটার পূর্ণতা পাবে। আরও প্রত্যাশা করবো আগামী আন্দোলন সংগ্রাম যারা উপযোগী রয়েছেন তাদের দল গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেবে।

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, সারাদেশেই তো এখন লিডিং পয়েন্টে সাবেক ছাত্রদল নেতারা। আমাদের থানা ও জেলা কমিটির অধিকাংশ জায়গায় যারা নির্বাচিত হচ্ছেন তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড ছাত্রদল। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমরা এই কাজ করছি। ছাত্রদলের সাবেক নেতারা বিএনপিতে মর্যাদাসম্পন্ন দায়িত্ব পালন করছে।

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেন, ‘আমরা খুশি।’

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বিএনপিতে সাবেক ছাত্রদল নেতাদের মূল্যায়ন তার চেয়ে বড় কথা বিএনপি নেতারা অধিকাংশ যারা আছেন সাবেক ছাত্রদলের। যাদের বয়স এখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৬৫ ঊর্ধ্ব। সারাদেশে সাবেক ছাত্রদলের নেতাদের দলে আরও বেশি যদি ব্যবহার করা যেত তাহলে বিএনপি ভালো করতো। শুধু বিএনপি নয়, তারা অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনে দায়িত্ব পালন করছে। সেজন্য হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সাবেক ছাত্রদল নেতাদের বিএনপির নেতৃত্বে আসার বিষয়টি ইতিবাচক। ছাত্রদল নেতারা রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই আন্দোলন-সংগ্রামে সম্পৃক্ত থেকে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। দলের প্রতিও তারা অনুগত। ছাত্ররাজনীতির অভিজ্ঞতা থেকে আগামী দিনে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন।

কেএইচ/এসএইচএস/এমএস