খেলাধুলা

শুভ জন্মদিন ‘মাশরাফি: দ্য লিডার’

মাহফুজুর রহমান

চোট তার ক্যারিয়ারকে বারবারই থমকে দিতে চেয়েছে। তবু চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা নিয়ে মাঠে ফিরেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। তিনি যে হারতে শেখেননি, ক্যারিয়ারে একের পর এক চোটও কাবু করতে পারেনি নড়াইল এক্সপ্রেসকে।

Advertisement

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা অধিনায়ক কে? প্রশ্নটা উঠলে এখনও একবাক্যে বেশিরভাগ মানুষ বলে উঠবেন মাশরাফির নামটি। জাতীয় দল থেকে আনুষ্ঠানিক অবসরে যাননি। কিন্তু মাশরাফি সাবেক হয়ে গেছেন, তাকে আর জাতীয় দলে দেখা যাবে না নিশ্চিত।

তাই বলে কি তার অর্জন ভুলে গিয়েছে এই জাতি? কখনই না। দেশের ক্রিকেটের এই কিংবদন্তি খেলোয়াড় হিসেবে যতটা না মানুষের মনে জায়গা করে রেখেছেন, তার চেয়েও অনেক বেশি অধিনায়ক হিসেবে। ‘মাশরাফি: দ্য লিডার’ নামটিই তার সঙ্গে বেশি মানানসই।

২০১৪ সালের কথা। একের পর এক ব্যর্থতায় বাংলাদেশের ক্রিকেট তখন ধুঁকছে। বিশ্বকাপের ঠিক আগে নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হলো মাশরাফির কাঁধে। মাশরাফির জাদুর ছোঁয়া পেয়ে জিততে ভুলে যাওয়া দলটিই হয়ে উঠলো অপ্রতিরোধ্য।

Advertisement

২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেললো কোয়ার্টার ফাইনাল। এরপর বাঘের থাবায় একে একে কুপোকাত হতে থাকলো ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো পরাশক্তিরা।

১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর নড়াইলে জন্ম হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই রূপকথার নায়কের। ২০০১ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হয় আন্তর্জাতিক অভিষেক। প্রথম টেস্টেই নিজের জাত চেনান মাশরাফি।

সে সময় জিম্বাবুয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারতো না বাংলাদেশ। অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার, হিথ স্ট্রিকদের সেই সোনালি যুগে মাত্র এক ইনিংস বল করার সুযোগ পেয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন মাশরাফি। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

লাল-সবুজের জার্সি গায়ে একে একে ৩৬টি টেস্ট, ২২০ ওয়ানডে আর ৫৪টি টি-টোয়েন্টি খেলেন মাশরাফি। বোলিংয়ের সঙ্গে ব্যাটিংটাও টুকটাক পারতেন। যত্ন পেলে বিশ্বমানের অলরাউন্ডার হতে পারতেন মাশরাফি। কিন্তু একের পর এক চোট তার ক্যারিয়ারটাকে পূর্ণতা দেয়নি। দেশের হয়ে সর্বশেষ খেলেছেন ২০২০ সালের মার্চে।

Advertisement

২০০৯ সালের পর আর টেস্ট খেলেননি। তাই প্রথম টেস্টে জয় পাওয়ার পরও এই ফরম্যাটে তাকে আলাদা করা যায়নি। তবে মাশরাফি সবচেয়ে সফল ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে। তার অধীনে ৮৮টি ওয়ানডে ম্যাচে ৫০টিতেই জয় পায় বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে তার নেতৃত্বে ২৮ ম্যাচে ১৭ হারের বিপরীতে ১০টিতে জয় টাইগারদের।

বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বদলে দেওয়ার এই কারিগরের আজ ৩৯তম জন্মদিন। টাইগারদের সাবেক সফল অধিনায়ককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভক্ত-সমর্থকসহ তার অগ্রজ-অনুজ ক্রিকেটারদের অনেকেই।

অনেক দিনের সতীর্থ মুশফিকুর রহিম তো ‘কিংবদন্তি’ লিখেই শুভকামনা জানিয়েছেন সাবেক অধিনায়ককে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুশফিক লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন কিংবদন্তি। আপনার জন্য অনেক দোয়া ও শুভকামনা রইল।’

জাতীয় দলের তরুণ অফস্পিনিং অলরাউন্ডার শেখ মেহেদি হাসান লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন মাশরাফি ভাই, আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।’

দেশের জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার আতহার আলীর কাছে মাশরাফি সবসময়ই একজন চ্যাম্পিয়ন। তিনি লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন চ্যাম্প। দিনটির জন্য অনেক শুভকামনা।’

মাশরাফির একসময়ের সতীর্থ নাফিস ইকবাল লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন মাশরাফি বিন মর্তুজা। তোমার সাথে কাটানো সময়গুলো সবসময়ই মজার। ভালো থাকবে।’

এমএমআর/জেআইএম