বিনোদন

পণ্ডিত বারীণ মজুমদারকে নিয়ে ছেলে বাপ্পার আবেগঘন স্ট্যাটাস

পণ্ডিত বারীণ মজুমদারের প্রয়াণ দিবস আজ। ২০০১ সালের ৩ অক্টেবর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। ১৯২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) পাবনা জেলার রাধানগরে এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বারীণ মজুমদার। তার পিতা নিশেন্দ্রনাথ মজুমদার ছিলেন একজন সংগীতশিল্পী ও নাট্যকার। মাতা মণিমালা মজুমদার সেতার বাজাতেন।

Advertisement

বারীণ মজুমদারের স্ত্রী ইলা মজুমদার। তিনি একজন উচ্চাঙ্গ সংগীতশিল্পী ছিলেন। তাদের দুই সন্তান। বড় ছেলে পার্থ মজুমদার সংগীত পরিচালক। ছোট ছেলে বাপ্পা মজুমদারও সংগীতশিল্পী ও সংগীত পরিচালক।

এ দিনে বারীণ মজুমদারের ছোট ছেলে বাপ্পা মজুমদার অস্ট্রেলিয়ার এডিলেডে। সেখানে তিনি ও তার ব্যান্ড দলছুট অবস্থান করছে কনসার্টের জন্য। বাবার প্রয়াণ দিবসে এডিলেডে বসে দিনটিকে স্মরণ করেছেন বাপ্পা। নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন বাবাকে নিয়ে কিছু স্মৃতি ও অনুভূতির কথা।

বাবার স্মৃতিচারণ করে বাপ্পা মজুমদার লিখেছেন, ‘আজ ৩ অক্টোবর ২০২২, অস্ট্রেলিয়ার এডিলেডে বসে লিখছি! নানা কারণেই কেমন যেন বিষণ্নতা পেয়ে বসছে! বাবার চলে যাওয়ার সময়গুলো বারবার ভেসে উঠছে চোখের সামনে! কথাগুলো আরও আগেই বলা দরকার ছিল বটে, তবে নানাবিধ দৌড়ঝাঁপে হয়ে ওঠেনি...!’

Advertisement

‘পেশাগতভাবে আমার সংগীত জীবনের বয়স ৩০ বছর! সংগীতকে পেশা হিসেবে নেওয়ার সিদ্ধান্ত আমার জন্য যথেষ্ট কঠিন ছিল। তার মূল কারণ বাবা পণ্ডিত বারীণ মজুমদারের সারাজীবনের সংগীত সাধনা, তার ত্যাগ, সংগীতকে নিয়ে আকাশসম ভাবনার বিনিময়ে যেই লাঞ্ছনা, অপমান, অসম্মান আর পরিশেষে এক অনিশ্চিত জীবন তাকে ঘিরে ধরেছিল তার পুনরাবৃত্তি তিনি তার সন্তানদের জীবনে দেখতে চাননি!’

এ পর্যায়ে বাপ্পা তার মা ইলা মজুমদারের অবদানের কথা উল্লেখ করে লেখেন, ‘পণ্ডিত বারীণ মজুমদার শুধু বেঁচে গেছিলেন কারণ তার পাশে ইলা মজুমদারের মতো একজন জীবনসঙ্গী ছিলেন। যিনি চরম বিপৎসংকুল সময়ে দুর্গতিনাশিনীর মতো পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন!’

‘বাবাকে মিউজিক কলেজ থেকে সপরিবারে বের করে দেওয়ার পর পরিবারের জন্য যখন অন্ন জোগাড় বন্ধ হওয়ার পথে, সেই সময় আমাদের মা ইলা মজুমদার স্কুলে চাকরি নেন। একা হাতে পুরো সংসারের হাল ধরেন! তার যৎসামান্য উপার্জনে বাড়িতে চুলা জ্বলে! দুটো খেয়ে আমরা বেঁচে যাই!’

এ বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তর আলোচনা পরে করতে চেয়েছেন বাপ্পা। তিনি তার লেখা শেষ করেছেন বাবা বারীণ মজুমদারের একটি কথা দিয়ে। যে কথাটি বারীণ মজুমদার তার শেষ জীবন পর্যন্ত বলে গেছেন।

Advertisement

কথাটি হলো, বাবা তার শেষ জীবন অবধি আমাদের জোর গলায় বলে গেছেন, ‘আমি বারীণ মজুমদার ধূলিসাৎ হয়ে যেতাম যদি তোদের মা না থাকতো’....!

‘এখন শারদীয় পূজা....! দেবীর আগমন হয়েছে...! আবার যাওয়ারও সময় হয়ে আসলো.....! কিন্তু আমার কাছে আমার মা-ই হচ্ছেন সেই দুর্গা.....যিনি জীবনের শেষ অবধি দুর্গতিনাশিনী হয়েই ছিলেন তার স্বামী-সন্তান আর সংসারে....! সবাইকে শারদীয় শুভেচ্ছা’ এ কথা লিখে শেষ করেন বাপ্পা মজুমদার।

এমআই/কেএসআর/এএসএম