কৃষি ও প্রকৃতি

যে কারণে মিরসরাইয়ে আমনের চাষ কম হয়েছে

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এবার আমন চাষে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৫০ হেক্টর কম জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। সময় মতো বৃষ্টি না হওয়া, সার ও ডিজেলের দাম বাড়ায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। এর কারণে কৃষি নির্ভর পরিবারগুলোতে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় এবার ২৬০০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবাদ হয়েছে ১৯৭৫০ হেক্টর জমিতে। সবচেয়ে বেশি প্রায় ২০০০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে উপজেলার ৬ নং ইছাখালী ইউনিয়নে। কম আবাদ হয়েছে উপজেলার ৪ নং ধুম ইউনিয়নে। এই ইউনিয়নে চলতি বছর প্রায় ১০০০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ করা হয়।

Advertisement

একাধিক কৃষক জানান, এবছর সারের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে তাদের। এক হেক্টর জমি (সাড়ে সাত বিগা)। এতে এক হেক্টর জমিতে পানি সেচ দিতে ১০ লিটার ডিজেল লেগেছে।

বর্তমানে ২৯ টাকা বাড়িয়ে ডিজেল প্রতি লিটার ১০৯ টাকা করা হয়েছে। এতে ১০ লিটার ডিজেল পূর্বের চেয়ে ৩৩৬ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। ভাড়া সেচ পাম্প দিয়ে পূর্বে প্রতিঘণ্টা জমিতে পানি সেচ দিলে নেওয়া হতো ১৫০ টাকা। বর্তমানে তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০০ টাকা এতে কৃষিতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সমস্যায় এবং লোকসানের মুখে পড়ার আশংকা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।

সাহেরখালী ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, প্রতি বছর নিজের কিছু জমি ও বর্গা নিয়ে আরও কিছু জমিতে আমনের চাষ করে থাকেন। এবছর সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায় তিনি আশানুরূপ চাষ করতে পারেননি। তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর পরিবার খাওয়ার জন্য ধান রেখে বাকি ধান বাজারে বিক্রি করা হয়। এবছর বাজারে ধান বিক্রি করা সম্ভব হবে না।

Advertisement

ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার কৃষক মো. সাইফুল্লাহ বলেন, যে পরিমাণে ডিজেল এবং সারের দাম বাড়ানো হয়েছে খরচের সঙ্গে পেরে উঠছি না। সামনে হয়তো চাষাবাদ করা বন্ধ করে দিতে হবে।

দক্ষিণ মঘাদিয়া ঘোনা এলাকার এনামুল হক নামে আরেক কৃষক জানান, এবছর খরচ বেড়ে যাওয়ায় অল্প জমিতে চাষ করেছি। কিছু করার নেই। আগে প্রতি একর জমিতে খরচ পড়তো ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা। এখন খরচ পড়ছে ৩৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা।

মিরসরাই উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাজী নুরুল আলম বলেন, এবার উপজেলায় ২৬০০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে ১৯৫০০ হেক্টর জমিতে চাষ সম্ভব হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। মূলত ভরা মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়নি।

এমএমএফ/জিকেএস

Advertisement