বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনকে জলদস্যু ও বনদস্যুমুক্ত করতে দুঃসাহসিক একাধিক অভিযান চালিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা। সেই অভিযানে সুন্দরবন আজ জলদস্যু ও বনদস্যুমুক্ত। এসব অভিযানের ওপর ভিত্তি করেই নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র ‘অপারেশন সুন্দরবন’।
Advertisement
সুন্দরবনে র্যাবের দুঃসাহসিক অভিযান নিয়ে বাংলাদেশে প্রথম ওয়াইল্ড লাইফ অ্যাকশন থ্রিলার মুভি এটি। গত ২৩ সেপ্টেম্বর চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকাসহ সারাদেশের ৪৫টি প্রেক্ষাগৃহে এ সিনেমা চলছে।
ছবিটির প্রচারের অংশ হিসেবে শনিবার (১ আগস্ট) বিকেলে খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে হাজির হয় ‘অপারেশন সুন্দরবন’ টিম। সেখানে তাদের বরণ করে নেন খুলনার সিনেমাপ্রেমীরা। এসময় প্রিয় নায়ক সিয়াম আহমেদ, নায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে কাছে পেয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন দর্শকরা। খুলনার আতিথেয়তায় তারাও মুগ্ধ হন।
কুয়েট ফিল্ম ক্লাব ও খুলনা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (খুসাস) উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে টিম অপারেশন সুন্দরবনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে লিবার্টি এবং শঙ্খ সিনেমা হলে টিম অপারেশন সুন্দরবনের পক্ষ থেকে সিনেমা হলের স্টাফদের উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়।
Advertisement
র্যাব জানায়, সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা রক্ষা, মৎস্য ও বনজ সম্পদের সংরক্ষণ সর্বোপরি সুন্দরবনকে বাঁচানোর লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ৩১ মে থেকে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর পর্যন্ত অভিযান চালায় র্যাব। সেই অভিযানে ৩২টি বাহিনীর ৩২৮ জন জলদস্যু ৪৬২টি অস্ত্র ও বিপুল গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এরপর ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে জলদস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন।
সুন্দরবনে র্যাবের সেই ‘রোমাঞ্চকর অভিযান’ জনসাধারণের সামনে তুলে ধরার জন্য নির্মিত হয়েছে অপারেশন সুন্দরবন। র্যাব ওয়েলফেয়ার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড প্রযোজিত ‘অপারেশন সুন্দরবন’ পরিচালনা করেছেন দীপংকর দীপন।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়েছিল ছবির টিজার। চলতি বছরের ২৯ জুলাই মুক্তি পায় ট্রেলার। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিয়াম আহমেদ, নুসরাত ফারিয়া, জিয়াউল রোশান, রিয়াজ আহমেদ, দর্শনা বণিক, মনোজ প্রামাণিক, তাসকিন রহমানসহ র্যাবের বেশ কয়েকজন সদস্য।
অপারেশন সুন্দরবন’-এ সুন্দরবনে র্যাবের বিভিন্ন অভিযানের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সেই সঙ্গে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে একসময় দস্যুদের অবাধ বিচরণ ছিল। স্থানীয় মানুষ জীবিকা নির্বাহে ব্যাপকভাবে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু দস্যুদের ভয়ে তারা বনজ সম্পদ আহরণ করতে পারত না। সুন্দরবন এখন দস্যুমুক্ত।
Advertisement
খুসাসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি স ম হাফিজুল ইসলাম ও কুয়েট ফিল্ম সোসাইটির টেকনিক্যাল সেক্রেটারি আকিব জুবায়ের বলেন, সুন্দরবনে র্যাবের জলদস্যু ও বনদস্যুদের বিরুদ্ধে দুঃসাহসিক অভিযান নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘অপারেশন সুন্দরবন’ কলাকুশলীরা তাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে অভিনয় করে সুন্দরবন ও এর ওপর নির্ভরশীলদের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আশা করছি এ ছবি দর্শকদের মুগ্ধ করবে।
অনুষ্ঠানে দর্শকদের উদ্দেশে নুসরাত ফারিয়া বলেন, খুলনা এসে খুব ভালো লাগছে। সিনেমাটি সবাইকে নিয়ে দেখবেন। একবারে মন না ভরলে কয়েকবার দেখবেন। ‘অপারেশন সুন্দরবন’-এ খুব কষ্ট করে কাজ করেছি আপনাদের জন্য। এখানে যেভাবে আমাদের দেখতে এসেছেন আমরা চাই, হলেও আপনারা সিনেমাটি দেখতে এভাবেই ভিড় করবেন।
আলমগীর হান্নান/এমআরআর/জেআইএম