দেশজুড়ে

আটকে রেখে সাদা স্ট্যাম্পে সই নেওয়ার অভিযোগ যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে

বরগুনায় অবসরপ্রাপ্ত এক সেনাসদস্যকে মারধর করে আটকে রেখে জোরপূর্বক সাদা স্ট্যাম্পে সই নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে তিনি হলেন জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়ের আদনান অনিক।

Advertisement

বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মশিউর রহমানের বাসায় বসে এই সই নেওয়া হয় বলে ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন।

ভুক্তভোগীর নাম মো. মহিসন। তিনি তালতলী উপজেলার চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৯ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান।

সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে বরইতলা ফেরিতে উঠি। ওইদিন বামনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন থাকায় বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও অন্যান্য নেতাকর্মীরাও ওই ফেরি করে যাচ্ছিলেন। এসময় ফেরিতে আমাকে ও আমার ভাই আল আমিনকে মারধর করেন যুবলীগ নেতা অনিকের ১০-১৫ জন লোক।

Advertisement

ভুক্তভোগী মহিসন আরও বলেন, তাদের মারধরে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। পরে রাত আড়াইটার দিকে জ্ঞান ফিরলে আমার ভাই আল আমিন বলেন, আমরা বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মশিউর রহমানের বাসায় আছি।

‘কিছুক্ষণ পর সোহাগ, সিরাজ, অনিকসহ আরও কয়েকজন ওই বাসায় উপস্থিতি হন। এসময় সেখানে বসে আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক সাদা স্ট্যাম্পে সই নিয়ে আমাকে ও আমার ভাইকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তারা ছেড়ে দেন।’

সংবাদ সম্মেলনে মহিসন আরও অভিযোগ করে বলেন, অনিক যখন বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন তখন তার সঙ্গে ৫০ শতাংশ শেয়ারে আমার ড্রেজার ব্যবসা নিয়ে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী আমার পাওনাদারদের দেনা পরিশোধ করার কথা ছিল অনিকের। এরপর ড্রেজার তালতলী নিয়া যাই। চুক্তি হওয়ার পর দুই মাসের মতো তালতলীতে ছিল ড্রেজার। একদিন রাতে সিরাজের মাধ্যমে ড্রেজারটি তালতলী থেকে রাতের আধারে বরগুনায় নিয়ে যাওয়া হয়।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, চুক্তির কোনো শর্তই জুবায়ের আদনান অনিক মানেননি। ফলে পাওনাদাররা মহিসনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

Advertisement

মহিসন বলেন, এরপর প্রায় ১৪ মাস পর জানতে পারি যে, আমার ড্রেজার মঠবাড়িয়াতে আছে। নাম পরিবর্তন করে ড্রেজারটি মেসার্স সুহা এন্টারপ্রাইজ নামে পরিচালিত হচ্ছে। উক্ত ড্রেজারের স্টাফদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, এই ড্রেজারের মালিক ইউসুফ সোহাগ।

স্ট্যাম্পে সই নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে যানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মশিউর রহমান তা অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, আমার বাসায় কোনো স্ট্যাম্পে সই নেওয়া হয়নি। এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। অনিকের সঙ্গে মহসিনের ড্রেজার নিয়ে ঝামেলা ছিল। সেটা সালিশে বসে ব্যবস্থা করেছিলাম। সেখানে সইয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তখন তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যানও উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের বিষয় জুবায়ের আদনান অনিক বলেন, সাদা স্ট্যাম্পে সই নেওয়া হয়নি। বৈঠক করে লেখা স্ট্যাম্প সই নেওয়া হয়েছে। মশিউর রহমানের বাসায় বসে হয়েছে বৈঠক। তবে কোনো মারধর করা হয়নি।

চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, মহসিনের সঙ্গে আমার যে চুক্তি হয় সে অনুসারে আমি তাকে ৬ লাখ টাকার পাইপ কিনে দেই। নগদ ৫০ হাজার টাকা দেই। এরপর আর তার কোনো খবর ছিল না। অনেক চেষ্টার পর আমি তাকে ধরে নিয়ে আসি। এরপর সালিশের মাধ্যমে আমাকে ৯ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরে ড্রেজার বিক্রি করে টাকা নিতে বলেন মহসিন।

জেডএইচ/