মতামত

সাত খুনের বিচার

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবেশেষে নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের বিচার শুরু হলো। নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ ও হত্যার দুই মামলায় গতকাল সোমবার চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন। এর মধ্য দিয়ে ৩৫ আসামির বিচার শুরু হলো। দুই মামলায় আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আসামিদের মধ্যে আছেন র‌্যাব-১১-এর সাবেক কমান্ডার লে. কর্নেল (বরখাস্ত) তারেক সাঈদ ও সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন।২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের তখনকার প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার গাড়িচালক ও চার সঙ্গী এবং নিরীহ আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালককে দিনেদুপুরে প্রকাশ্যে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই রাতে শরীরে নেশাযুক্ত ইনজেকশন পুশ করে এবং শাসরোধে হত্যা করা হয় তাদের। পরে লাশ গুম করার জন্য পেট কেটে ইটভর্তি দুটি বস্তা শরীরে বেঁধে মেঘনার মোহনায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। তিন দিন পর লাশগুলো ভেসে উঠলে জানা যায়, এগুলো অপহৃত সাতজনের লাশ। অপহরণের পরদিন নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলার বিচার অবশেষে শুরু হলো। এই মামলায় গত বছর ৮ এপ্রিল চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। এই চার্জশিট নিয়ে নারাজি দেওয়া হয় বাদির পক্ষ থেকে। পরে আদালত তা নাকচ করে দিলে এই চার্জশিট দিয়েই বিচার শুরু হলো। চাঞ্চল্যকর এই মামলার বিচার নিয়ে শুরু থেকেই নানা সন্দেহ ও অবিশ্বাস ছিল। প্রভাবশালী মহল জড়িত থাকায় শেষ পর্যন্ত ‘বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কাঁদবে’ কিনা এমন সংশয়ও দেখা দেয়। এরই মধ্যে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে প্রধান আসামী নূর হোসেনকে। তবে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ না করায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এছাড়া অধিকতর তদন্ত ছাড়াই বিচার কাজ শুরু হওয়ায় এ নিয়েও বাদি পক্ষের অসন্তোষ রয়েছে। এ অবস্থায় ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে যে কোনো মূল্যে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে উদ্ধার পেতে এমন একটি চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক ঘটনার ন্যায়বিচার ও প্রকৃত খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া অত্যন্ত জরুরি। এইচআর/পিআর

Advertisement