নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা আগাম আলু চাষের জন্য বিখ্যাত। এ উপজেলার কৃষকরা ভাগ্য পরিবর্তনের অবলম্বন হিসেবে আলু চাষ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আগে থেকেই আলুর চাষের ধুম পরেছে ওই অঞ্চলে।
Advertisement
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের চেয়ে ১০০ হেক্টর বেশি জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। মৌসুমের শুরুতেই বাজারজাত করে বেশি মুনাফা লাভের আশা কৃষকদের।
সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে দেখা যায় এরই মধ্যে আলু চাষের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন কৃষকরা। চলছে আলু বুননের উৎসব। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার এই অঞ্চলের কৃষকরা সারি সারি আলু বুননের সঙ্গে মনে স্বপ্নও বুনছেন। তারা আশা করছেন মৌসুমের শুরুতেই আলু বাজারে তোলার। এতে নতুন আলুর দাম একটু বেশি থাকবে এবং বেশি মুনাফা পাবেন এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।
বংশ পরম্পরায় কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত উপজেলার রনচন্ডি কুটিপাড়া গ্রামের মোজাম্মেল হক। প্রতিবারে ন্যায় এবারও তিনি প্রায় ৫ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন আগাম আলুর। স্বপ্ন দেখছেন শীতের শুরুতে বাজারজাত করে ভালো দাম পাবেন।
Advertisement
মোজাম্মেল হক বলেন, প্রতিবার তো আলু গারি (চাষ করি) গতবার তেমন লাভ হয় নাই। এবার ৫ বিঘা জমিতে ফলাবো। শীত আসতে আসতে আলু বড় হইবে। ওই সময় ভালো দাম পাব। এবার আবহাওয়া ভালো থাকলে ও ঝড়বৃষ্টি না হইলে লাভ হইবে।
মাগুরা এলাকার কৃষক আব্দুল হাকিম বলেন, সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করছি। এবার অনেক বেশি লাভ হওয়ার আশা করছি। এছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে সর্বদা পরামর্শ পাচ্ছি।
আশরাফ উদ্দিন বলেন, আগাম আলু হামার বাব-দাদার সময় থাকি চাষ করি। এটাতে আলু বিক্রি করি বেশি টাকা পাই। এবার ৩ বিঘা জমিতে চাষ করতেছি। ২ লাখের বেশি বিক্রি হবে বলে আশা করছি।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, চলতি বছর ৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এই উপজেলায়। যা গত বছরের চেয়ে ১০০ হেক্টর বেশি। এ অঞ্চলের প্রতিবিঘা জমিতে প্রায় ১২-১৫ বস্তা আলুর চাষ হয়, পরিমাণে যা ৩০-৩৫ মণ পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়াও মৌসুমের শুরুতেই বাজারে আসায় এই আলুর চাহিদা থাকে অনেক বেশি। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৭০ টাকারও বেশি দরে।
Advertisement
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, গত বছর থেকে এ বছর ১০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা নির্ধারণ করা হয়েছে। বেশি দাম পাওয়া যায় বলে এই অঞ্চলের কৃষকরা অনেকটা বেশি আগ্রহী আগাম আলু চাষে। আলুর পর্যাপ্ত ফলনের জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করছে। রোগবালাইসহ বিভন্ন সমস্যায় সার্বক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করছেন কৃষি অফিসাররা।
তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া অনুকূল থাকলে খুব কম সময়ে এই আলু পরিপক্কতা পায়। ৫০ থেকে ৭০ দিনের মধ্যেই আলু তোলার উপযোগী হয়। এবছর ভালো ফলন হবে আশা করা যাচ্ছে।
এমএমএফ/এমএস