`হাজার বুদ্ধের দেশ` মিয়ানমার। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচে বড় দেশ। দেশটিতে বুদ্ধের হাজার হাজার মূর্তি রয়েছে। রয়েছে অগণিত প্যাগোডা। কয়েক শতাব্দী ধরে পর্যটকরা দেশটির রাজধানী ইয়াঙ্গুনে আসেন সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থাপত্য শোয়েডাগন প্যাগোডা দেখতে। ধর্মীয় আচার পালনের কেন্দ্রবিন্দু এই প্যাগোডা। মিয়ানমারের সেরা ১০টির অন্যতম আকর্ষণীয় স্থাপনাও এটি। সোনার পাত দিয়ে মোড়ানো এই বৌদ্ধ মন্দিরটির উচ্চতা ৯৯ মিটার।সরেজমিন পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শোয়েডাগন প্যাগোডা সম্পূর্ণ সোনায় মোড়া রয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। পোল্যান্ড থেকে আসা পর্যটক ফেডরিক স্মিথ শোয়েডাগন প্যাগোডা বিষয়ে জাগো নিউজকে বলেন, মিয়ানমার সম্পর্কে পোল্যান্ডে পাওয়া সব বই পড়ে আমরা জেনেছি এই প্যাগোডার উপরাংশ ২৭ মন গোল্ড দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। পৃথিবীর অন্যতম ও আলোচিত প্যাগোডা এটি। এই নিয়ে তিনি দু’বার এসেছেন এই অনন্য স্থাপনাটি দেখতে।শোয়েডাগন প্যাগোডার সিকিউরিটি কর্মকর্তা অং হো চেন জাগো নিউজকে বলেন, এটি আড়াই হাজার বছর আগে তৈরি হয়েছিল। পৃথিবীর আশ্চর্যতমের মধ্যে এটি এখন অন্যতম বলে মিয়ানমারবাসী মনে করেন। এটি নির্দিষ্ট ধর্মের উপাসনালয় হলেও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ এখানে ভিড় জমায়। পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে এখানে জুতা, ব্যাগ, ছাতাসহ প্রবেশ নিষিদ্ধ। তবে কখনো কোনো অপ্রিতিকর ঘটনার অবতারণা ঘটেনি। ভেতরে মূল স্তম্ভের কাছে পৌঁছামাত্র এখানে আসা মানুষগুলোর মন কেমন জানি শীতল হয়ে যায়। অং হো চেন এর মতে, এটি বুদ্ধের আশির্বাদ।বাংলাদেশ থেকে যাওয়া পর্যটক আনিছুর রহমান বলেন, শোয়েডাগন প্যাগোডা এতো সুন্দর ও মূল্যবান প্যাগোডা যা দেখে আমি অবিভূত। সাত দিনের সফরে যাওয়া আনিছুর সস্ত্রীক বেড়াচ্ছিলেন। জানালেন, মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুর ট্যুরের পরিকল্পনা পরিবর্তন করে মিয়ানমারে এসেছি। সবমিলে কেমন কেমন দেখলেন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বল্লেন, ‘এক্সিলেন্ট’।উল্লেখ্য, বৃটিশদের শাসনামল থেকেই ইয়াংগুন মিয়ানমারের সামরিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এ শহরের লোকসংখ্যা ৫০ লাখেও বেশি। অষ্টাদশ শতাব্দীতে এটি ছিল নদীর পাশে অবস্থিত একটি জেলেপাড়া। তবে বর্তমানে তা দেশের সবচে বড় বন্দরে পরিণত হয়েছে।শোয়েডাগন প্যাগোডার পূর্ব দিকে রাজপরিবারের হ্রদ এলাকা, হ্রদের পূর্ব দিকে সুন্দর কালাওয়ে প্রাসাদ, উত্তরে আংসান পার্ক দেখার মতো। হ্রদের পাশ ঘেষে কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে পথ। এ পথ ধরে হাঁটলে হ্রদের চারদিকের সুন্দর প্যাগোডা ও স্থাপত্যের দৃশ্য উপভোগ করা যায়।আরএম/বিএ
Advertisement