দখল আর দূষণে বদলে গেছে সাভারের নদীগুলোর পানির রং। দূষণ ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ নিলেও তা কাজে আসছে না। বরং দিন দিন দূষণের মাত্রা বাড়ছে।
Advertisement
সরেজমিনে কর্ণপাড়া খাল আর ধলেশ্বরী নদী ঘুরে দেখা যায় দূষণের ভয়াবহ চিত্র। নদীর বিভিন্ন অংশে শিল্পকারখানার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। নদীর পাড় দখল করে স্তূপ করে রাখা হয়েছে আবর্জনা। ধলেশ্বরী নদীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে চামড়া শিল্পনগরীর বর্জ্য। বর্জ্য পরিশোধন ছাড়াই সরাসরি ধলেশ্বরীতে ফেলা হচ্ছে।
ধলেশ্বরী নদীর পাড়েই কথা হয় ৭০ বছর বয়সী মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগের রূপ নেই নদীগুলোর। স্বচ্ছ পানি এখন কালো হয়ে গেছে। আগে নদীতে জেলেদের আনাগোনা থাকলেও এখন তা শূন্য। মাছ তো দূরের কথা, অন্যান্য জলজ প্রাণীরও দেখা মেলে না।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, সাভার চামড়া শিল্পনগরীতে সিইটিপির (কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার) ধারণক্ষমতার অনেক বেশি বর্জ্য সৃষ্টি হয়। ফলে এ শিল্পনগরীর তরল বর্জ্য সিইটিপিতে গেলেও অন্যান্য বর্জ্য পরিশোধন ছাড়াই সরাসরি ফেলা হচ্ছে ধলেশ্বরীতে।
Advertisement
পরিবেশবিদ সালাউদ্দিন খান নঈম বলেন, অপরিশোধিত তরল বর্জ্য নদীগুলোকে গ্রাস করছে। এতে নদীর জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। এ দূষিত পানি ব্যবহারের কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
শুধু ধলেশ্বরী নদীতে নয়; বংশী, গাজীখালী, তুরাগ নদীও রয়েছে দূষণের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। সাভার নামাবাজার এলাকায় বংশী নদী ঘুরে দেখা যায়, নদী দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বাজারের বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে।
স্থানীয় আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘মাঝে মধ্যে নদী কমিশনসহ নানা সংস্থার লোকজন এসে দেখে যান। তবে দূষণ ঠেকাতে বাস্তবমুখী কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। দিন যতই যাচ্ছে দূষণের মাত্রা ততই বাড়ছে।’
এ বিষয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, দূষণ ঠেকাতে কাজ চলছে। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। নদী দূষণ ঠেকাতে প্রয়োজনে আরও কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
Advertisement
এসআর/জিকেএস