খুব শিগগির জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২২ উপলক্ষে নওগাঁ জেলার শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তার নাম ঘোষণা করা হবে। তবে এ পদকে একজন বিতর্কিত কর্মকর্তার নাম উঠেছে বলে জানা গেছে। ওই কর্মকর্তার নাম আব্দুল আমিন। তিনি সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। জেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার নামের তালিকায় তার নাম সুপারিশ করেছে যাচাই-বাছাই কমিটি।
Advertisement
আব্দুল আমিনের বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদাবাজিসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তা সত্ত্বেও শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তার নামের তালিকায় তার নাম সুপারিশ করা নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার মহাদেবপুর উপজেলার উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল আমিন। তিনি ২০১৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নওগাঁ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। এর আগেও তিনি বিভিন্ন উপজেলায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে কর্মরত ছিলেন। তবে তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ।
গত ২৪ এপ্রিল আব্দুল আমিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন সদর উপজেলার মঙ্গলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আরিফুর রহমান। তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগ ক্ষতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন জেলা প্রশাসক। তবে অভিযোগের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও অজানা কারণে এখনো সেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি।
Advertisement
মঙ্গলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আরিফুর রহমান বলেন, ‘আব্দুল আমিনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করার পর থেকেই আমাকে শোকজসহ নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে সখ্য থাকায় তিনি সব স্কুল থেকে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করেন। প্রতিটা স্কুল থেকে প্রতি বছর কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা করে চাঁদা নেন। এই ধরনের বিতর্কিত কর্মকর্তা কোনোভাবেই পদকে ভূষিত হতে পারেন না।’
জানতে চাইলে সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল আমিন বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ পদকের তালিকায় নাম আছে এমন কথা আমিও শুনেছি। তবে বিষয়টি অফিস থেকে এখনো আমাকে জানানো হয়নি। কর্তৃপক্ষ আমার যোগ্যতা দেখেই আমাকে পদক দেবে। বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগটিও সঠিক নয়।’
এ বিষয়ে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক নওগাঁ সদর উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ও সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ইতিয়ারা পারভিন বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে আব্দুল আমিনের চলতি বছরের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য ছিল বলেই তার নাম সুপারিশ করে জেলা যাচাই-বাছাই কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। এখানে আমার ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থ নেই। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আছে এমন বিষয় আমার জানা ছিল না।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজা বলেন, ‘কেউ এমন অভিযোগ করে থাকলে সেটি ক্ষতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Advertisement
তিনি আরও বলেন, উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে নামটি আমাদের কাছে এসেছে। তবে এখনো কাউকে চূড়ান্ত করা হয়নি। যাচাই- বাছাইয়ের কাজ চলমান। প্রাথমিক শিক্ষায় যারা বিশেষ অবদান রেখেছেন এমন যোগ্যদেরকেই মূল্যায়ন করে পদক দেওয়া হবে। শিগগির তালিকাটি প্রকাশ করা হবে।
আব্বাস আলী/এসআর/জেআইএম