কৃষি ও প্রকৃতি

শরীয়তপুর জেলা পরিষদ ভবনে ছাদবাগান

ছাদে উঠলেই চোখে পড়বে সবুজের সমারোহ। সারি সারি বিভিন্ন ফলের গাছ সেখানে রোপণ করা হয়েছে। বছর ঘুরতেই সেখানে বিভিন্ন গাছে এসেছে ফলন। রোপণ করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ওষধি গাছ। রয়েছে বাহারি ফুল গাছও। ছাদবাগান পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে। এমন দৃশ্য কোনো আবাসিক ভবনের ছাদের নয়, শরীয়তপুর জেলা পরিষদের ভবনের ছাদের।

Advertisement

শুধু ছাদে নয়, পরিষদের ফাঁকা জায়গায় রোপণ করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের গাছ। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব গাছ সংগ্রহ করা হয়েছে। আছে অনেক ধরনের দুর্লভ গাছও। অনেক গাছে এরই মধ্যে ফল এসেছে।

ছাদবাগানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দেশি-বিদেশি মিলে প্রায় ৩০ ধরনের শতাধিক গাছ রয়েছে। এর মধ্যে দুর্লভ মিয়াজাকি আমের গাছ রয়েছে। এছাড়া মাল্টা, সফেদা, রকমারি জামরুল, কমলা, আঙুর, আপেল, বিভিন্ন প্রজাতির আমগাছসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ চোখে পড়েছে। বারোমাসি আমের মুকুল এসেছে। একাধিক গাছে কমলা, পেয়ারা ও মাল্টা ফল ধরেছে। ফলন এসেছে সফেদা গাছেও। এছাড়া বড়ই ও লেবুগাছে নতুন কুঁড়ি এসেছে।

সেখানে দেশি-বিদেশি মিলে শতাধিক গাছের মধ্যে দুর্লভ জাপানি মিয়াজাকি, জাপানি কাঁঠাল, থাইল্যান্ডের ব্যানানা ম্যাংগো, সাদা জাম, চেরি, ত্বীন গাছও রয়েছে। রয়েছে নিম, অর্জুন, হরিতকি, বহেড়া, বাসক পাতা, অশোকসহ বিভিন্ন ঔষধি গাছ। এছাড়া পরিষদের কম্পাউন্ডে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ। দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়।

Advertisement

ছাদ বাগানসহ পরিষদের ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির আম, পেয়ারা, কাঁঠাল, কলা, জাম, লেবু, জামরুল, চুঁই ঝাল, কামরাঙাসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ রোপণ করে বাগান করেছেন শরীয়তপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম হোসেন। এরই মধ্যে কলা ও পেয়ারার ফলন এসেছে।

তার ভাষ্য, ভালো লাগা ও শখ থেকেই পরিষদের ছাদ ও পরিষদের ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন ফল, ঔষধি এবং ফুলের গাছ রোপণ করে বাগান করেন তিনি। বিভিন্ন স্থান থেকে গাছ সংগ্রহ করেছেন তিনি।

জানা যায়, ২০২১ সালের ২৩ মে জেলা পরিষদে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন মো. শামীম হোসেন। দায়িত্ব নেয়ার পর ২৪ মে থেকে জেলার বিভিন্ন সড়কের পাশে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কম্পাউন্ডে, নদী ও খালের পাড়ে ফল ও ঔষধি গাছ লাগানো শুরু করেন তিনি। প্রায় আড়াই বছরে তিনি ৩০ হাজার গাছ রোপণ করেছেন। তবে ১ জুন থেকে পরিষদের ছাদে প্লাস্টিকের ড্রামে গাছ লাগানোর কার্যক্রম শুরু হয়। মহামারি করোনাকালীন সময়ও গাছ লাগানো কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন তিনি।

তিনি বলেন, বাগান করা আমার শখ ও ভালোলাগা। জেলা পরিষদের ছাদ দেখে মনে হয়েছে, এখানে বাগান করা সম্ভব। তখনই পরিকল্পনা করি বাগান করার। আমাকে বাগান করতে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দিয়েছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার। সহযোগিতা করেছে পরিষদের সকল সদস্যরা। শুধু পরিষদের ছাদে নয় পরিষদের ফাঁকা জায়গায়ও বাগান করেছি। ঢাকা, যশোর, খুলনা শরীয়তপুর ও মাদারীপুর থেকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ সংগ্রহ করা হয়েছে।

Advertisement

তবে পরিষদের সদস্যদের নিয়ে বাগান তৈরি এবং রক্ষণাবেক্ষণ করেন তিনি। ছাদবাগান রক্ষণাবেক্ষণ নিজেরাই করেন বলে জানান জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম হোসেন। কাজটি চ্যালেঞ্জিং বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, বাগানের রক্ষণাবেক্ষণ নিজেরাই করি। তবে প্রয়োজন হলে বাইরে থেকে লোক নিয়োগ করা হয়। বাগানটি অর্গানিক হওয়ার কারণে রোগবালাই রোধে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়। অর্গানিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফল ও সবজি খুবই সুস্বাদু।

মো. ছগির হোসেন/এমএমএফ/জেআইএম