চলতি বছরের বন্যায় দেশে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ইউনিসেফ বাংলাদেশের জাতীয় শুভেচ্ছাদূত বিদ্যা সিনহা মিম। সম্প্রতি দুই দিনের সফরে সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শন করেন তিনি।
Advertisement
দুই দিনের সফরে মিম সরাসরি দেখেছেন কীভাবে ইউনিসেফ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ল্যাট্রিন, পানি সংগ্রহ কেন্দ্র, স্কুল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো পুনরায় চালু ও পুনর্নির্মাণ ভূমিকা রাখছে। এসময় মিম সমাজকর্মীদের সঙ্গেও দেখা করেন।
গোয়াইনঘাট উপজেলায় শিশুদের সঙ্গে কথা বলার পর মিম বলেন, সিলেটে শিশু ও তাদের বাবা-মায়েদের কাছ থেকে যে গল্পগুলো শুনেছি তা হৃদয়বিদারক। বন্যার কারণে তাদের জীবন ওলট-পালট হয়ে যাওয়ার মধ্যেও তারা অবিশ্বাস্য রকমের দৃঢ়তা দেখিয়েছে। আমাদের অবশ্যই তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং তাদের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠাতে সহায়তা করতে হবে।
১০ বছর বয়সী নাজিমুল মিমকে বলেন, প্রথমে যখন ঘরে পানি আসতে শুরু করে তখন আমি কিছুই আঁচ করতে পারিনি। আমার জামা-কাপড়, বই, ঘরের সব জিনিস কোনো কিছুই বাদ ছিল না। সবকিছু পানিতে ভেসে যায়। আমাকে স্কুলে (আশ্রয়কেন্দ্রে) না নিয়ে আসা হলে আমিও ভেসে যেতাম। তিন-চারদিন না খেয়ে ছিলাম। আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পর সেখানে মুড়ি, চিড়া এসব শুকনো খাবার দেওয়া হয়।
Advertisement
বন্যার পানি কমে যাওয়ার কয়েক মাস পরও লাখ লাখ পরিবার এখনো সেই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ইউনিসেফ পানি, স্যানিটেশন, নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসামগ্রী এবং নির্যাতন থেকে শিশুদের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে সরকারের বন্যা মোকাবিলা কার্যক্রমে সহায়তা করে। এখন পর্যন্ত ইউনিসেফের করা সহায়তা থেকে উপকৃত হয়েছে ১০ লাখের বেশি মানুষ, যাদের ৪০ শতাংশ শিশু।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি মি. শেলডন ইয়েট বলেন, মিমের সফর আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে পানি কমার পরও বাংলাদেশের শিশুরা বন্যা ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। আজ মিম সেই শিশুদের দুর্দশার কথা তুলে ধরছেন, যারা বন্যার কয়েক মাস পরও বিভন্ন সমস্যার সম্মুখীন এবং যাদের এখন সহায়তা প্রয়োজন।
২০২২ সালের মে মাসে বাংলাদেশে ইউনিসেফের জাতীয় শুভেচ্ছাদূত নিযুক্ত হওয়া মিম সিলেটের একটি চা বাগান এবং ইউনিসেফ-সহায়তাপুষ্ট একটি কিশোর-কিশোরী ক্লাবের শিশু-কিশোরদের সঙ্গেও দেখা করেন।
জানা গেছে, প্রায় দুই মাসব্যাপী দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ এ বন্যার ফলে খাদ্য, পানি ও স্যানিটেশন সংকটে ৩৫ লাখ শিশুসহ ৭২ লাখ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়।
Advertisement
এএএম/এমআইএইচএস/জিকেএস