মরুভূমির ফল সাম্মাম চাষে সফলতা পেয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সোহেল রানা। একই ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মান্নানের তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে।
Advertisement
সোহেল জানান, মধ্যপ্রাচ্যের এ ফলটি বাংলাদেশে রকমেলন নামেও পরিচিত। সাধারণত মধ্য মার্চ থেকে মধ্য জুলাই মাসে এ ফল চাষ করা হয়। চারা রোপণের ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যেই ফল পাওয়া যায়। সাম্মাম গ্রীষ্মকালীন ফল হলেও শীতকাল ছাড়া বছরের যেকোনো সময়ে চাষ করা যায়।
গবেষক জানান, এ গবেষণার অংশ হিসেবে দুটি জাত ক্রিস্টাল ও অ্যারোমা সুইট নিয়ে কাজ করা হয়েছে। বর্ষাকালে এই ফলের মিষ্টতা কম হয়। তাই বর্ষাকালেই গবেষণাটি করা হয়েছে। যেখানে ফলের মিষ্টতা শতকরা ১৩-১৪ ভাগ পর্যন্ত পাওয়া গেছে। প্রথমে ‘সিড ট্রে’ তে চারা গজানোর পর মালচিং শিট ব্যবহার করে সারিবদ্ধভাবে লাগানো হয়েছিল এ গাছ।
এই গবেষণায় মোট চার ধরনের অর্গানিক স্যার ব্যবহার করা হয়েছে। যেখানে গোবরের তুলনায় ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহারে ভালো ফলন পাওয়া গেছে। রসায়নিক স্যার ব্যবহার কিভাবে কমিয়ে আনা যায় সে ব্যাপারেও কাজ করা হয়েছে।
Advertisement
গবেষণা শেষে দেখা গেছে, প্রতিটি ফলের ওজন প্রায় ১.৫- ২.৫ কেজি পর্যন্ত হয়েছে। এছাড়া এতে কীটনাশকমুক্ত ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রাকৃতিক কীটনাশক নিম অয়েল এবং ফল ছিদ্রকারী পোকা দমনের জন্য সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এ ফলের আক্রমণ থেকে বাঁচতে উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে ফল ব্যাগিং করা।
দক্ষিণাঞ্চলের কৃষির জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা লবণাক্ততা। তবে লবণাক্ত জমিতেও এ ফলের আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় আনন্দিত এই গবেষক।
সোহেল রানা জাগো নিউজকে বলেন, সাম্মাম বাঙ্গি গোত্রীয় ফল হলেও এটি অনেক মিষ্টি, সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। প্রতি কেজি ফলের দাম পাওয়া যায় ২০০-৩০০ টাকা এবং প্রতি বিঘা জমিতে ফলন হয় প্রায় ৭০ থেকে ৮০ মণ। এটি চাষাবাদ শুরু হলে কৃষকরা লাভবান হবেন এবং এটি দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিতেও অনেক বড় সুফল বয়ে আনবে।
এ ফল চাষে ঝুঁকি এবং চাষাবাদ সম্পর্কে প্রচারণার অভাবে চাষ কম হয়। তাছাড়া এর বীজ এর সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দামের দিকেও নজরদারি বাড়ানো দাবি গবেষকের।
Advertisement
তত্ত্বাবধায়ক ড. আব্দুল মান্নান বলেন, এ অঞ্চলের আবহাওয়া একটু আলাদা এবং মাটিতে লবণাক্ততা রয়েছে। তবুও আশানুরূপ ফলন পাওয়া গেছে।
রেজওয়ান আহম্মেদ/এমএমএফ/জিকেএস