জাতীয়

দুপুরের খাবার খাওয়া হলো না রনির

বাবাকে সঙ্গে নিয়ে কাজের জন্য বেরিয়েছিলেন রনি। ঠিকাদার ফোন করেছিলো, উত্তর বাড্ডায় যেতে। ফোন পেয়ে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে যান বাবা মফিজ উদ্দিন। কিন্তু দেরি হয়ে যায়। দেখা হয়নি ঠিকাদারের সঙ্গে। তাই সোমবার কাজ মেলেনি। সময় পেরিয়ে দুপুর হয়ে যায়। তাই বাবা ছেলে সিদ্ধান্ত নেন বাসায় ফিরে দুপুরের খাবার খাবেন। কিন্তু দুপুরের খাবার আর খাওয়া হলো না রনির। তার আগেই প্রাণ হারালেন তরতাজা এই তরুণ। ঘাতক বাস কেড়ে নিলো তার প্রাণ। তবে বাবা বেঁচে গেছেন প্রাণে। চোখের সামনে ছেলের মৃত্যু বাবাকে বাকরুদ্ধ করেছে। বেঁচে থেকেও যেন জীবিত নেই তিনি। রাজধানীর বাড্ডায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান পথচারী রনি। পেশায় রংমিস্ত্রি। সোমবার দুপুর সোয়া তিনটার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলের ঠিক পাশে একটি বিপণিবিতানে রাখা হয় রনির বাবা মফিজ উদ্দিনকে। তিনিও পেশায় রংমিস্ত্রি। নিজের চোখে সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় ছেলের মৃত্যু যেন তার চোখের পানি কেড়ে নিয়েছে। শুধু বলছেন, আমি আমার ছেলের কাছে যাব। আমার ছেলের লাশটি কোথায় রাখা হয়েছে। কষ্ট আর বেদনা নিয়ে জানান, উত্তর বাড্ডায় গিয়েছিলাম কাজ খুঁজতে। কাজ পাইনি। বাবা-ছেলে একসঙ্গে রঙের কাজ করি। কিন্তু সোমবার ঠিকাদারের কাছে গিয়েও লাভ হয়নি। তাই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় ফিরছিলাম। পথেই ঘাতক বাস কেড়ে নিলো আমরা ছেলের প্রাণ।ছেলের বয়স ২৯ বছর বলেও জানান তিনি। বলেন, ছেলেকে এখনো বিয়ে দেইনি। দুই ছেলে আর এক মেয়ে আমার। রনি ছিলো সবার বড়। খুবই দায়িত্বশীল ছিলো। সবার প্রতি সে যত্নশীল ছিল। ছোট ছেলে ও মেয়ের বিয়ে হয়েছে। কিন্তু রনি পৃথিবী থেকে চলে গেলো।  মফিজ উদ্দিন রাজধানীর দক্ষিণ বাড্ডার বাসিন্দা। সেখানেই পরিবার পরিজন নিয়ে থাকেন তিনি। পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন রনিও।খুব বেশি কিছু বলার পরিস্থিতি নেই সদ্য ছেলে হারানো বাবা মফিজ উদ্দিনের। এরপরও সব সামলে বললেন, ‘আমি আমার ছেলের কাছে যাব। আর মেয়ের ঘরের নাতিকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নানু কই?  এসএ/এসএইচএস/পিআর

Advertisement