বিমানবন্দরের ঢল থেকে শুরু। রাস্তার দুই পাশে হাজার হাজার মানুষের জাতীয় পতাকা দুলিয়ে সাবিনাদের অভিনন্দন এবং বাফুফে ভবনের কাছে জনসমুদ্র; সবই দেখেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। মন্ত্রী হয়ে একজন সাধারণ মানুষের মতো সাবিনাদের ভবনের ওঠার জায়গাও তৈরি করে দিয়েছেন।
Advertisement
কখনও রাগ হয়েছেন, কখনও হেসেছেন। তবে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ফুটবলের প্রতি মানুষের এই ভালোবাসাকে দেখেছেন অসম্ভব ইতিবাচক হিসেবে।
বুধবার রাতে বাফুফে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেও ছিলেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘খেলা নিয়ে মানুষ এত ভালোবাসা দেখাতে পারে, সেটা আমার জীবনেও দেখিনি।’
সংবাদ সম্মেলনে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল আরো বলেছেন, ‘খেলোয়াড়দের আমার পক্ষ থেকে প্রাণঢালা অভিনন্দন। আপনারা জানেন সানজিদা একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিল, সেখানে খোলা বাসের আক্ষেপ করেছিল সে। আমরা এক রাতের মধ্যে সেই ছাদখোলা বাস ব্যবস্থা করেছি।’
Advertisement
‘মেয়েদের কারণেই দেশের সব মানুষ উৎসবে শরীক হয়েছে। আশা করি, মেয়েরা আগামীতে আরও ভালো সাফল্য নিয়ে আসবে। বয়সভিত্তিক দলের পর এবার জাতীয় দলও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, তমা গ্রুপ, এনভয় গ্রুপ ৫০ লাখ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করেছে মেয়েদের জন্য। সরকার থেকে কী করা হবে? প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে কোন কথা হয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ক্রীড়া অন্তঃপ্রাণ মানুষ। তাকে কিছু বলতে হয় না। তিনি বিদেশে। যখন তাকে বিজয়ের খবর দেই, তখন তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন। ওই সময় আশপাশে যারা ছিলেন তাদের বলতেছিলেন, আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।’
‘কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী করোনার মধ্যে বয়সভিত্তিক দলকে বাসায় ডেকে নিয়ে সংবর্ধনা দিয়েছিলেন। আর্থিক পুরস্কার দিয়েছিলেন। আমি ছাদখোলা বাসে থেকে তাকে যে কয়বার ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েছি, প্রত্যেকবারই উত্তর দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশে আসলে তাঁর সঙ্গে কথা বলে মেয়েদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করবো। আমরা মেয়েদের জন্য বড় কিছু দেওয়ার অপেক্ষায় আছি।’
বাফুফে সরকারের কাছে ৪৫০ কোটি টাকা চেয়ে ৫ বছরের একটি পরিকল্পনা জমা দিয়েছে। ওই প্রজেক্ট পাশ হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘৪৫০ কোটি টাকার ডিপিপি প্রস্তুতের কাজ শেষ পর্যায়। এখানে চারটি জেলায় একাডেমি তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি, এই বিজয়ের পর সহজেই প্রকল্পটি অনুমোদন হবে। আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে যাতে প্রকল্পটি দ্রুত পাশ হয়।’
Advertisement
বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘এই সাফল্যের দাবিদার ম্যানেজমেন্ট ও খেলোয়াড়রা। আজকে তারা এই সাফল্য এনেছে। তার সঙ্গে মিডিয়াও আছে। আজকে যে লাখ লাখ মানুষ নারী ফুটবলাদের জন্য ভালোবাসা প্রকাশ করেছে, তা মিডিয়ার কারণে। ফুটবল একা খেলা যায় না। সবার সমর্থনে এটা হয়েছে। খেলোয়াড়, কোচ, স্টাফ, সরকার, মিডিয়া-এই পাঁচে মিলে আমাদের সাফল্য এসেছে। আগামীতে আরও ভালো কিছু করার জন্য আমরা একসঙ্গেই কাজ করতে চাই। এই বিজয়ের মাধ্যমে আমাদের সাফল্য শুরু হলো মাত্র।’
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া জয় করেছে। এখন বাফুফে সভাপতির চোখ এশিয়ায়। কাজী মো. সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘আমরা এখন এশিয়ায় নজর দেবো। জাপান, কোরিয়ার সঙ্গে খেলবো। হয়তো হারবো। আবার জিতবো মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরের সঙ্গে খেললে।’
আরআই/এমএমআর/এএসএম