বর্তমান আর্থিক অবস্থায় ইনভেস্টর (বিনিয়োগকারী) না পেলে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ব্যবসা চালাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
Advertisement
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মানিক বলেন, আমাদের দায়িত্ব দিয়েছিল, অডিট রিপোর্ট পর্যন্ত ও সবকিছু দেখে পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য। যেহেতু আমাদের কাজ শেষ, নতুন করে কিছু করার নেই। তবে আমাদের বলেছিল, কোম্পানি দেউলিয়া করা উচিত, কিন্তু আমরা দেউলিয়া করার মত দেইনি। কারণ এখানে হাজার হাজার মানুষের স্বার্থ জড়িত, যদি কোনো ইনভেস্টর আসে তাহলে কোম্পানি চলতে পারে, এ হলো আমাদের মতামত। কিন্তু বর্তমান আর্থিক অবস্থায় ইভ্যালি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।
তিনি বলেন, আজ আমরা রিজাইন (পদত্যাগ) করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। গতকাল নয়, আজ (বুধবার) আমরা পদত্যাগ করেছি এবং পদত্যাগপত্র হাইকোর্টে জমা দিয়েছি। প্রতিবেদনে ২১ সেপ্টেম্বরের সই রয়েছে। আর এটি কার্যকর হবে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর)।
Advertisement
সাবেক এই বিচারপতি বলেন, অডিট রিপোর্টও আজ জমা দিয়েছি। সেখানে আমরা উল্লেখ করেছি, কোম্পানিটা পতনের জন্য দায়ী ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেল। তিনি কোম্পানিটি প্রতারণার উদ্দেশ্যেই গঠন করেছিলেন। মানুষকে ফাঁকি দিয়ে তাদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। কোনো আইন মানেননি। কাকে কত টাকা দিলো তার কোনো কিছু উল্লেখ নেই। এগুলো অডিট রিপোর্টে এসেছে। এরপর এত কোটি কোটি টাকা লেনদেন করলো তার কোনো হিসাব নেই। যার কারণে আমরা ধারণা করছি মানিলন্ডারিং হতে পারে।
‘আমরা বলেছি, এখন যে অবস্থায় আছে, তাতে কোম্পানি চালানো অসম্ভব। যদি কোনো ইনভেস্টর পায়, কেউ টাকা পয়সা নিয়ে আসেন তাহলেই কোম্পানিটা চালানো যেতে পারে। এভাবে প্রতারণা বন্ধ না হলে কোম্পানি এমনিতেও চলবে না।’
তিনি আরও বলেন, এটা অডিট রিপোর্টে লেখা হয়েছে যে, প্রতারণাটাই হলো কোম্পানি ধ্বংসের মূল কারণ। তারা চেয়েছেন, প্রতারণা করে তাদের পকেট ভরতে এবং সেটাই তারা করেছেন। টাকা-পয়সা তারা কোথায় সরিয়েছেন তারও কোনো হদিস নেই।
এর আগে ইভ্যালির সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং তার মা ও বোনজামাই মামুনুর রশীদকে নতুন পরিচালনা বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এতে আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত বোর্ডের মিটিংয়ে তাদের নতুন পরিচালনা পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়।
Advertisement
এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. কাজী কামরুন নাহার ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইক্যাব) সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিনকে পরিচালনা বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডের বাসা থেকে গ্রেফতার হন ইভ্যালির মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিন।
গত ২১ এপ্রিল চেক প্রতারণার ৯ মামলায় রাসেলকে জামিন দেন আদালত। ওইদিন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জামিন পান তিনি। তবে তার বিরুদ্ধে আরও মামলা থাকায় কারামুক্ত হতে পারেননি তিনি। তবে গত ৬ এপ্রিল জামিনে বের হন শামীমা নাসরিন। তিনি বের হয়ে তার শেয়ারের একটা অংশ মা ও ভগ্নিপতিকে দেন।
এফএইচ/আরএডি/বিএ/জিকেএস