ইরাকের সাবেক শাসক সাদ্দাম হোসেনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আট বছরের পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছে, একমাত্র প্রতিরোধ সংগ্রামের মাধ্যমে আগ্রাসী বাহিনীর হাত থেকে মাতৃভূমিকে রক্ষা করা সম্ভব। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেনি বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একদল ইরানি সেনা কমান্ডার, সৈনিক ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠকে একথা বলেন।
Advertisement
এদিন ওই যুদ্ধ শুরুর বার্ষিকী উপলক্ষে পবিত্র প্রতিরক্ষা সপ্তাহকে সামনে রেখে দেশ রক্ষায় আত্মনিয়োগকারী ব্যক্তিরা দেশটির সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ইরাকি বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ আট বছরের প্রতিরোধ যুদ্ধকে ইরানে পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধ নামে অভিহিত করা হয়।
আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, ওই যুদ্ধে ইরানি জনগণের সামনে এ সত্য দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, আত্মসমর্পন নয় বরং প্রতিরোধের মাধ্যমেই দেশরক্ষা ও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা যায়। তিনি বলেন, ইসলামি বিপ্লবের পর এরকম একটি আগ্রাসন হতে পারে এটা জানা ছিল। সাদ্দাম এ আগ্রাসন চালিয়েছিল ঠিকই কিন্তু তার পেছনে ছিল বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধ থেকে আমাদের অর্জন অনেক। ওই যুদ্ধ আমাদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। কাজেই পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধারা সর্বোচ্চ সম্মান পাওয়ার যোগ্য।
Advertisement
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেনি বলেন, ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরান গোটা বিশ্ববাসীকে কিছু বলতে চেয়েছিল। কিন্তু ইরানের সে বার্তা যেন অন্য কেউ গ্রহণ করতে না পারে সেজন্য বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ইরাকের সাদ্দাম সরকারের মাধ্যমে ইরানের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। তারা একথা বলতে চেয়েছিল যে, যদি কেউ সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তবে তাকে শেষ করে দেওয়া হবে। ইসলামি বিপ্লব যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিল বলেই তারা তেহরানের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, সেই সময় বিশ্বের দেশগুলো প্রাচ্য অথবা পাশ্চাত্য এই দুই ব্লকের যেকোনো এক ব্লকে ছিল এবং এর বাইরে কোনো স্বাধীন দেশ ছিল না বললেই চলে। সেই অবস্থায় একটি দেশের বিপ্লবী সরকার দুই পরাশক্তির কারও অধীনতা মেনে না নিয়ে স্বাধীনভাবে কথা বলবে- এটা কেউ ভাবতেই পারেনি।
আয়াতুল্লাহিল খামেনেনি আরও বলেন, তখন থেকে বিগত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ইরান বিশ্বের সব পরাশক্তিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেছে ও ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে যাবে। তিনি নতুন প্রজন্মকে প্রতিরোধের সংস্কৃতি বুকে ধারণ করার আহ্বানও জানান।
সূত্র: প্রেসটিভি, পার্সটুডে
Advertisement
এমএসএম