কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে গত ২৩ আগস্ট বাসা থেকে বের হন কুমিল্লার কলেজপড়ুয়া সাত শিক্ষার্থী। ২৬ দিন পার হলেও খোঁজ মেলেনি তাদের। গোয়েন্দা সূত্রমতে, এই সাত তরুণ কথিত হিজরতের নামে ঘর ছাড়েন। তারা সবাই নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য।
Advertisement
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজ সাত তরুণকে জঙ্গিবাদে জড়ানোর মূল কারিগরকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার নাম শাহ মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ। তিনি কুমিল্লা শহরের একটি মসজিদের ইমাম। তিনি গত এক সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ।
র্যাব জানায়, গ্রেফতার এড়াতে হাবিবুল্লাহ গা ঢাকা দিয়েছেন। তাকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
এদিকে সাত তরুণের কথিত হিজরতের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) এক কর্মীকেও খুঁজছে র্যাব। তার নাম মো. নেছার উদ্দিন (৩৪)।
Advertisement
নেছারের স্ত্রীর বরাত দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, নেছার চার-পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ। তিনি ভোলায় থাকতেন। পরিবার থাকেন গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীতে। প্রতি শুক্র-শনিবার নেছার বাড়ি আসতেন। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও স্বামীর বিষয়ে কিছু জানতে পারেননি তার স্ত্রী।
পুলিশের পাশাপাশি এই সাত তরুণের বিষয়ে র্যাবও অনুসন্ধান চালাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এই তরুণেরা নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য। তাদের উগ্র মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ করার মূল কারিগর কুমিল্লা মসজিদে কোবার ইমাম (কেবল ওয়াক্ত নামাজ পড়াতেন) শাহ মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ।
সূত্র জানায়, নিখোঁজ তরুণরা কোবা মসজিদে নামাজ পড়তেন, সেই সূত্রে তারা ইমাম হাবিবুল্লাহর কাছে ধর্মীয় বিভিন্ন নিয়ম-কানুন জানতে চাইতেন। একপর্যায়ে তাদের জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করেন। পরে সন্দেহ এড়াতে তারা কখনো নুর মসজিদে, কখনো ধর্মসাগরের পাড়ে পার্কে মিলিত হতেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
Advertisement
এ বিষয়ে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আসে, কুমিল্লার নিখোঁজ ৭ তরুণকে আনসার আল ইসলামের মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ করেন শাহ মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ। যার পরিপ্রেক্ষিতে ওই মসজিদকে ঘিরে আশপাশে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি চলতে থাকে। ৭ তরুণ নিখোঁজের পর হাবিবুল্লাহ অসুস্থতার কথা বলে ছুটি নেন এবং এখন পর্যন্ত তিনি তার পরিবারের কাছে যাননি। এমনকি কোনো প্রকার যোগাযোগও করেননি। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে তিনিও নিখোঁজ।
কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মী নেছার উদ্দিন সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, কথিত হিজরতের কথা বলে কুমিল্লার নিখোঁজ ৭ তরুণকে নেছার শারীরিক ও তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণ দিতেন। নেছার উদ্দিনও আনসার আল ইসলামের সদস্য।
টিটি/ইএ/জেআইএম