জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে রওশন এরশাদকে সরাতে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল স্পিকার বরাবর যে চিঠি দিয়েছে, তার প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না জানিয়ে স্পিকারের কাছে এবার পাল্টা চিঠি পাঠাবেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা।
Advertisement
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) এ চিঠি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। জাপার সাবেক এ প্রেসিডিয়াম সদস্য সম্প্রতি শৃঙ্খলা ভঙের অভিযোগে দল থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, রওশনকে অপসারণের প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি তুলে মঙ্গলবার স্পিকারের কাছে লিখিতভাবে জানাবেন।
জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠকের দিন তাকে এজেন্ডা জানানো হয়নি বলে জাগো নিউজের কাছে দাবি করেন মশিউর রহমান রাঙ্গা।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘ওইটা বেআইনি করেছে। তারা এটা আমার হাত দিয়ে করিয়েছে। আমি তখনো বলেছি বেআইনি হচ্ছে। তারা পরে এসে বলছে, চিঠিতে তিনটি সই দেওয়া আছে, সেগুলো সব রাঙ্গার সই। মিটিং ডাকছে রাঙ্গা, প্রিজাইড করছে রাঙ্গা, সই করছে রাঙ্গা। আমি বললাম, তাহলে এজেন্ডা কে দিলো?’
তিনি আরও বলেন, ‘এজেন্ডাটা চাইলাম, তারা সেটা দিলেন না। রেজ্যুলেশন লিখলেন তাদের লোক, আমাকে বললেন, সই করতে বলেছেন স্যার (জি এম কাদের), এখানে সই করেন। করে দিছি, স্পিকারের কাছে নিয়ে যেতে বললেন মুজিবুল হক চুন্নু, নিয়েও গেলাম। স্পিকারও বললেন, আর কয়েকটা মাস ছিল। এ কয়েকটা মাসের জন্য তাকে (রওশন এরশাদ) অপমান করবেন আপনারা? আমি বললাম, তাদের অপমান করার শখ হয়েছে তো তাই করলেন। স্পিকার বললেন, দেখি আমি আপার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবো।’
হঠাৎ করেই গত ৩০ আগস্ট কাউন্সিল ডাকেন রওশন এরশাদ। যদিও জিএম কাদেরের দাবি কাউন্সিল ডাকার এখতিয়ার রওশন এরশাদের নেই।
কাউন্সিল ডাকায় ক্ষুব্ধ জিএম কাদেরের নির্দেশে গত ১ সেপ্টেম্বর রওশন এরশাদকে অপসারণে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দেয় জাতীয় সংসদে বিরোধীদল জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল। এরপর ১৮ দিন পেরিয়ে গেছে।
Advertisement
তবে চিঠি দেওয়ার পর ওই চিঠিতে স্বাক্ষরকারী বিরোধীদলের চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা গণমাধ্যমে বলেন, তিনি রওশন এরশাদকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত ছিলেন না। এ কারণে রাঙ্গাকে দলের পদ থেকে অব্যাহতি দেয় জাতীয় পার্টি। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর রাঙ্গা দাবি করেন রওশন এরশাদকে সরানোর প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না।
রাঙ্গা বলেন, আমি স্পিকারকে জানিয়েছি যে এটা নিয়ম মতো হয়নি। সবকিছুর তো একটা নিয়ম আছে। আমি স্পিকারকে লিখিত জানিয়ে দেব। ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই। কারণ এটার মধ্যে কোনো এজেন্ডা ছিল না।
তিনি বলেন, আমি স্পিকারকে জানাবো আমার এ ব্যাপারে আপত্তি আছে। বিষয়টি সঠিক প্রক্রিয়ায় হয়নি।
সাধারণত দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য কোনো সিদ্ধান্ত নিলে স্পিকার সেটি অনুমোদন করেন। সে ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তা এখন স্পিকারের হাতে।
এসএম/ইএ/জিকেএস