দেশজুড়ে

ভ্যানচালকের প্রসূতি স্ত্রীকে গাড়িতে করে হাসপাতালে নিলেন ইউএনও

গভীর রাতে প্রসব বেদনায় কাতর এক প্রসূতি নারীকে নিজের গাড়িতে করে হাসপাতালে পৌঁছে দিলেন মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরুল হাসান। হাসপাতালের সিট ভাড়াসহ যাবতীয় খরচও পরিশোধ করেন তিনি। এমন মানবিকতার পরিচয় দেওয়ায় প্রশংসায় ভাসছেন ইউএনও ইমরুল হাসান।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত দেড়টার দিকে দৌলতপুর উপজেলার আবুডাঙ্গা গ্রামের ভ্যানচালক নাজমুল হোসেনের স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হয়। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন স্বজনরা। কিন্তু মধ্যরাত হওয়ায় কোনো যানবাহন পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই প্রসূতি মায়ের সঙ্গে কাঁদছিলেন দিশেহারা স্বজনরাও। পরে একজনের পরামর্শে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করার সিদ্ধান্ত নেন তারা।

এমন সময় উপস্থিত হন দৌলতপুর ইউএনও ইমরুল হাসান। তিনি নিজের গাড়িতে করে প্রসূতি মাকে নিয়ে যান মানিকগঞ্জ মুন্নু মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে ওই রাতেই তার নরমাল ডেলেভারির ব্যবস্থা করেন। রাত ৩টা ৪৫ মিনিটে কন্যাসন্তান প্রসব করেন ওই নারী। এ সময় পযর্ন্ত অপারেশন থিয়েটারের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন ইউএনও।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে মা ও নবজাতককে দেখতে পুনরায় হাসপাতালে যান ইউএনও ইমরুল হাসান। এ সময় তিনি হাসপাতালের বিল পরিশোধ করাসহ নবজাতককে নতুন পোশাক উপহার দেন। তিনি শিশুটির নাম রাখেন ‘নুর-ই জান্নাত’।

Advertisement

প্রসূতির স্বামী নাজমুল হোসেন বলেন, ‘মধ্যরাতে স্ত্রীকে নিয়ে যখন বিপদে পড়েছিলাম আল্লাহ তখন ফেরেশতার মতো ইউএনওকে পাঠান। তিনি নিজে গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। শুধু তাই নয়, হাসপাতালের যাবতীয় খরচও তিনি বহন করেছেন। সন্তানের নাম রেখেছেন। নতুন পোশাক কিনে দিয়েছেন। এতে আমরা সবাই খুশি। দোয়া করি আল্লাহ ইউএনওর মঙ্গল করুক।’

এ বিষয়ে দৌলতপুর ইউএনও ইমরুল হাসান বলেন, ‘রোববার মধ্যরাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে পায়চারি করছিলাম। হঠাৎ কান্নার আওয়াজ শোনা যায়।সামনে এগিয়ে গিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানাতে পারি প্রসূতি মাকে হাসপাতালে নিতে হবে। কিন্তু কোনো যানবাহন পাওয়া যাচ্ছে না। এমন বিপদ দেখে ড্রাইভারকে ডাকলাম। এরপর প্রসূতি মা ও তাদের স্বজনদের গাড়িতে তুলে হাসপাতালে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করি।’

তিনি আরও বলেন, পরিবারটি খুবই দরিদ্র। এজন্য হাসপতালের যাবতীয় খরচ নিজেই বহন করেছি। তাদের অনুরোধে নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে। পরে আলেমদের সঙ্গে আলোচনা করে নামটি রাখা হয়।

বি এম খোরশেদ/এসআর/জেআইএম

Advertisement