বছর দুই আগে জার্মানির হানাউ শহরে দুটি সিসা বারে হামলা চালিয়েছিল একজন উগ্র ডানপন্থি। এতে প্রাণ হারান নয়জন। পরে হামলাকারী তার মাকে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করে। ওই বার দুটিতে সাধারণত তুর্কি ও কুর্দিরা যাতায়াত করতো।
Advertisement
হানাউয়ের ওই ঘটনার পর মুসললিমদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন, তা জানতে একটি কমিশন গঠন করে বার্লিনের সিনেট। কমিশনের সদস্য করা হয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও গবেষকদের।
সরকারি হিসাব না থাকলেও ধারণা করা হয়, বার্লিনের ৩৮ লাখ বাসিন্দার প্রায় ১০ শতাংশই মুসলিম ধর্মাবলম্বী।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে কমিশন তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ এতে বলা হয়েছে, বার্লিনের মুসলিমরা প্রতিনিয়ত বর্ণবাদ ও বৈষম্যের শিকার হন। চাকরিতে নিয়োগসহ বিভিন্ন সেবা পেতে সমস্যায় পড়েন তারা। কিন্তু সচেতনতার অভাবে মুসলিমবিরোধী আচরণ ও অপরাধগুলোর খবর ঠিকমতো প্রচার পায় না।
Advertisement
প্রতিবেদনে কিছু পরামর্শও দিয়েছে কমিশন৷ যেমন-
মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যের বিষয়টি যেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিচারক, পুলিশরা আরও ভালোভাবে বুঝতে পারেন সেজন্য তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
গণমাধ্যমে মুসলিমদের আরও ভালোভাবে তুলে ধরতে হবে, যেন সাধারণ মানুষের মনে তাদের সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা না থাকে৷
মুসলিমবিরোধী বর্ণবাদ তদন্ত করতে বার্লিন পুলিশে আলাদা বিভাগ চালু করতে হবে৷
Advertisement
২০০৫ সালে বার্লিনে চালু হওয়ায় ‘নিরপেক্ষতা আইন’ বাতিল করতে হবে৷ এই আইনের কারণে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধর্মীয় বা মতাদর্শিক প্রতীক বহন করে এমন কোনো পোশাক পরতে পারেন না৷ এই আইনের কারণে মুসলিম নারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন৷ শুধু হেডস্কার্ফ পরার কারণে বেশি যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাদের চাকরি না দেওয়ার উদাহরণ রয়েছে৷
যদিও ২০১৫ সালে জার্মানির সাংবিধানিক আদালত হেডস্কার্ফের ওপর নিষেধাজ্ঞা সংবিধানের পরিপন্থি বলে রায় দিয়েছিলেন৷ ২০২০ সালে ফেডারেল লেবার কোর্টও একই মত দেন।
সূত্র: ডয়েচে ভেলেকেএএ/