কুড়িগ্রামে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে ওল কচুর। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকেরা ঝুঁকছেন ওল চাষে। এটি একটি বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন কোন্দ জাতীয় গুল্ম উদ্ভিদ। ওলকচু বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ায় নির্দিষ্ট কিছু রোগের পথ্য হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও সবজি হিসেবে খাওয়া যায় বলে বাজারে এর ভালো চাহিদা রয়েছে।
Advertisement
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় ৮ হেক্টর জমিতে ওলকচুর চাষ হয়েছে। এছাড়া বাড়ি আঙিনা ও পরিত্যক্ত জমিতে বিছিন্নভাবে ওলকচুর চাষ হচ্ছে যার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি।
সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী গ্রামের ওলকচু চাষি আবুল কাশেমের সঙ্গে কথা হয় তিনি বলেন, ওলকচু চাষে কোনো ঝামেলা নেই। তুলনামূলকভাবে উঁচু ছায়াযুক্ত স্যাঁতস্যাঁতে জমিতে সহজেই ওলকচু চাষ করা যায়। এটি চাষে কোনো প্রকার বাড়তি সার ও কীটনাশকের প্রয়োজন পড়ে না। বীজ লাগানোর সময় থেকে ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়।
একটি ওল গাছ থেকে ৭ থেকে ৮ কেজি ওলকচু পাওয়া যায়। প্রতি কেজি কচু ২৫ থেকে ৩০ টাকা ধরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। আগে এই জমিতে আলু চাষ করতেন এখন ওলকচু চাষ হচ্ছে। কেননা আলু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মাটি থেকে না তুললে পচে নষ্ট হয়ে যায় কিন্তু ওলকচু নষ্ট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, আমি বগুড়ায় ওলকচু চাষ দেখে উৎসাহিত হই, প্রথমে ২০টি চারা গাছ এনে চাষ শুরু করি। ফলন ভালো পাওয়ায় এ বছর ২০ শতক জমিতে ওলকচু করেছি। ফসল তোলা পর্যন্ত আমার খরচ হবে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। আর ওই পরিমাণ জমিতে হবে ৮০ থেকে ১০০ মণ ওলকচু হবে। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি ওলকচু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আশা করছি খরচ বাদে ১ লাখ টাকা পাব।
রাজাহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের কাজীপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, আমি ১০ শতক জমিতে ওলকচু চাষ করেছি। রোদযুক্ত উঁচু জমিতে ওলকচুর ফলন ভালো পাওয়া যায়। ওল গাছের তেমন রোগ বালাই নেই,পরিশ্রম খরচ দুটোই কম লাগে। আশা করছি লাভবান হব। আগামীতে আরও বেশি পরিমাণ জমিতে ওলকচু চাষ করবেন বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. শামসুদ্দিন মিয়া বলেন, ওল কচু চাষে খরচ কম লাভ বেশি। এ চাষাবাদে বাড়তি কোনো সার কীটনাশকের প্রয়োজন পড়ে না। ওলকচুর চাহিদা দিনেদিনে বাড়ছে। ওল কচুর বাণিজ্যিক চাষাবাদে কৃষি বিভাগ সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে।
এমএমএফ/জেআইএম
Advertisement