সীমান্ত নিয়ে আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার সেনাদের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১০ জনে। গত বৃহস্পতিবার থেকে চলে দু’পক্ষের তুমুল লড়াই। ইয়েরেভান ও বাকু এই সংঘাতের জন্য একে অপরকে দায়ী করছে। গত দুই বছর ধরে দ্বন্দ্বে লিপ্ত দেশ দুটির সেনাবাহিনী।
Advertisement
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি আগামীকাল ইয়েরেভান সফর করবেন বলে জানা গেছে।
ককেশাসের প্রতিবেশি দেশ দুটির যুদ্ধ শুরু হয় ২০২০ সালে। এর আগে ৯০ এর দশকে যুদ্ধে জড়ায় আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া।
দেশ দুটির মধ্যে দ্বন্দ্ব মূলত নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চলকে ঘিরে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সীমানা অনুযায়ী নাগোর্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ। তবে সেখানকার বাসিন্দারা জাতিগতভাবে আর্মেনীয়।
Advertisement
উভয়পক্ষ একে অপরকে দুষছে সর্বশেষ সংঘর্ষের জন্য। যদিও আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় গত বৃহস্পতিবার দুপক্ষের লড়াই থামে।
এদিকে, যুদ্ধবিরতির পর আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের নিহত সেনার সংখ্যা ৭১ থেকে বেড়ে ৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
অপরদিকে, আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান জানান, এখন পর্যন্ত আর্মেনিয়ার নিহত সেনার সংখ্যা ১৩৫ জন। তবে তিনি মন্ত্রিসভাকে বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটাই চূড়ান্ত সংখ্যা নয়। আরও অনেকে আহত হয়েছেন।
আর্মেনিয়ার মানবাধিকারবিষয়ক ন্যায়পাল ক্রিস্টিনা গ্রিগরিয়ান জানান, আজেরি বাহিনীর গুলিতে একজন বেসামরিক নাগরিকও নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ছয়জন।
Advertisement
আর্মেনিয়ার সেনা বাহিনীর চিফ অব স্টাফ এডুয়ার্ড আসরিয়ান অভিযোগ করে বলেছেন, আজেরি সেনারা নৃশংসতা ঘটিয়েছে। আর্মেনীয় সেনাদের মৃতদেহ বিকৃত করার অভিযোগও করেন তিনি।
জেরমুক শহরে বিদেশি কূটনীতিকদের তিনি বলেন, ‘এটি একটি ভয়াবহ নৃশংসতা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন’।
ক্রিস্টিনা গ্রিগরিয়ান জানান, দু’পক্ষের সংঘাতের কারণে বহু আর্মেনীয় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আজারবাইজান নিরীহ বাসিন্দাদের টার্গেট করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করছে বাকু।
সীমান্ত সংঘাতের জেরে এর আগে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে যুদ্ধে জড়ায় দেশ দুটি। সে সময় ছয় সপ্তাহের লড়াইয়ে নিহত হয় প্রায় ৬ হাজার পাঁচশ জন। পরে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কালেকটিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশন (সিএসটিও)-এর একটি প্রতিনিধিদল (সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোর মস্কোর নেতৃত্বে গঠিত একটি সংগঠন) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইয়েরেভানে পৌঁছেছে। আর্মেনিয়া এটির সদস্য হলেও আজারবাইজান নয়।
গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের মধ্যে মধ্যস্থতায় একটি প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করে।
সূত্র: এএফপি, এনডিটিভি
এসএনআর/এএসএম