করোনাভাইরাসের ধকল কাটিয়ে সশরীরে ক্লাসে ফিরেছে শিক্ষার্থীরা। নিয়মিত ক্লাস করছে, পরীক্ষাও দিচ্ছে। করোনাকালীন ক্লাস-পরীক্ষা সব চলেছে অনলাইনে। এই সময়ে মোবাইল ফোন, ট্যাব ও ল্যাপটপের মতো ডিভাইস ছিল তাদের সঙ্গী। পরবর্তীসময়ে এসব ডিভাইসে আসক্ত হয়ে পড়ে অনেক শিক্ষার্থী। সশরীরে ক্লাস করে সম্প্রতি রাজধানীর মাধ্যমিক স্কুলগুলোর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এতে আশঙ্কাজনক হারে খারাপ হয়েছে ফল। দ্বিগুণ হয়েছে ফেল করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা। অনেক শিক্ষার্থী খাতায় ঠিকমতো লিখতেই পারেনি বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। এর জন্য না লেখার চর্চা, পর্যাপ্ত মনিটরিং না থাকা ও ডিভাইসে আসক্তিকে দায়ী করেছেন শিক্ষাবিদ-অভিভাবকরা।
Advertisement
রাজধানীর প্রথম সারির কয়েকটি স্কুলের অর্ধবার্ষিক বা অর্ধসাময়িক পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বেশি ফেল করা বিষয়ের তালিকায় গণিত, ইংরেজি, বাংলা, বিজ্ঞান ও ধর্মশিক্ষা। ক্লাস অনুযায়ী ফেলের হার ৭০-৯৫ শতাংশ পর্যন্ত।
একাধিক স্কুলের ক্লাস শিক্ষকের দাবি, করোনায় দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা হাতের লেখায় অনেক পিছিয়ে গেছে। সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারছে না। নবম শ্রেণিতে বিশেষ বিষয়ের ওপর জ্ঞানের মাত্রা অনেক কম। সে কারণে ফেলের হার বেড়ে গেছে।
রাজধানীর গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের ২০২২ সালের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল অনুসন্ধানে দেখা যায়, ষষ্ঠ শ্রেণিতে মোট ২৬৭ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৭৮ জন পাস করেছে। পাসের হার ২৯ দশমিক ২১ শতাংশ। সপ্তম শ্রেণিতে ৩০৪ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস ১৫০ জন। পাসের হার ৪৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। অষ্টম শ্রেণিতে ২৭৫ জনের মধ্যে ৬৫ জন পাস করেছে। পাসের হার ২৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
Advertisement
নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে ২৭৮ জন পরীক্ষা দিয়ে তার মধ্যে ৩৮ জন পাস করেছে। পাসের হার ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ, ব্যবসায় বিভাগে ৩১ জনের মধ্যে পাস করেছে মাত্র একজন। দশম শ্রেণিতে টেস্ট পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে ২৮৬ জন পরীক্ষা দিয়ে ২৬ জন পাস করেছে, পাসের হার ৯ শতাংশ। ব্যবসায় বিভাগে ২৬ জন পরীক্ষা দিয়ে কেউ পাস করতে পারেনি।
অথচ স্বাভাবিক সময়ে এ স্কুলে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় ৩০-৪০ শতাংশ ফেল করলেও ক্লাসে একজন পাস করতে পারেনি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সব ক্লাসে আগের তুলনায় ফেলের হার দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আবু সাঈদ ভুইয়া জাগো নিউজকে বলেন, করোনার ক্ষতি এখনো আমাদের শিক্ষার্থীরা ধকল কাটিয়ে ওঠেনি। স্কুল বন্ধ থাকায় তাদের অনেক শিখন ঘাটতি হয়েছে। তবে করোনার মধ্যে আমরা প্রথম ও নিয়মিত অনলাইন ক্লাস শুরু করি। সে কারণে অনেকে পড়ালেখায় এগিয়ে থাকলেও হাতের লেখার গতি ও সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার অভ্যাস ভুলতে বসেছে। অনলাইন ক্লাসের সঙ্গে সবাই যুক্ত হতে না পারায় খুব বেশি সহায়ক হয়নি।
তিনি বলেন, ছাত্রদের অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হলেও অনেকে তা কপি পেস্ট করে জমা দিতো। অনেকের ক্ষেত্রে এটি ধরা পড়েছে। তাদের আবারও নতুনভাবে লিখতে দেওয়া হয়েছে। সব শিক্ষকের পক্ষে নকল ধরাও সম্ভব হয়নি। এ পদ্ধতিটিও বেশি কাজে আসেনি বলে শিক্ষার্থীরা অনেক পিছিয়ে গেছে। অটোপাস দেওয়ায় তারা পেছনের অধ্যায় না শিখে ওপরের ক্লাসে উঠে নিজেরাও বুঝতে পারছে না, শিক্ষকদের পক্ষে অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। ওপরের ক্লাসে এ সমস্যা চরমভাবে দেখা দিয়েছে।
Advertisement
এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে নতুন কোনো পদ্ধতি অবলম্বন করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, মিরপুরে ন্যাশনাল বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ে চলতি বছরের অর্ধসাময়িক পরীক্ষার ফলাফলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৫৩ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪২ জন পাস করেছে, সপ্তম শ্রেণিতে ৬২ জনের মধ্যে ৪২ জন, অষ্টম শ্রেণিতে ৫৫ জনের মধ্যে ৩৫ জন, নবম শ্রেণিতে ৫২ জনের মধ্যে ৪০ জন পাস করেছে। ২০১৯ সালের একই পরীক্ষায় পরিসংখ্যানে প্রতিটি ক্লাসে ৫ থেকে ১০ জনের বেশি ফেল করেনি।
জানতে চাইলে ন্যাশনাল বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহমেদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, শিশুরা বাসায় বসে থেকে নানা ডিভাইসের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে। তারা অনাগ্রহী হয়ে পড়েছে বাসায় পড়ালেখায়। অনেকের বাবা-মা স্কুলে এসে আমাদের কাছে অভিযোগ করছেন। কোনো কোনো অভিভাবক এমন পরিস্থিতি দেখে সন্তানের কাছ থেকে জোর করে মোবাইল বা অন্য ডিভাইস নিয়ে ভেঙে পর্যন্ত ফেলছেন।
তিনি বলেন, করোনার মধ্যে যারা সপ্তম শ্রেণিতে পড়তো তারা পর্যাপ্ত পড়ালেখা ছাড়া নবম শ্রেণিতে উঠেছে। তাদের মধ্যে কেউ বিজ্ঞান, ব্যবসায় ও মানবিক বিভাগে পড়লেও এই স্তরের জ্ঞানার্জন করতে পারেনি। সে কারণে পাঠ্যবইয়ের পড়া বুঝতে পারছে না, ফেলের সংখ্যা বেড়েছে। ওপরের ক্লাসে ওঠার আগে তাদের বাড়তি ক্লাস প্রয়োজন ছিল, সেটিও সম্ভব হয়নি। চলতি বছরের এসএসসিতে তাদের কতজন পাস করবে তা নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সব স্কুল-কলেজে লেখাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের অভ্যাস বাড়াতে হবে। ক্লাসরুম আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে।
শিক্ষকদের বাড়তি প্রশিক্ষণ দিয়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক জোর বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে চলতি বছর মাধ্যমিক স্তরে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় ৫০ থেকে ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। যদিও এ প্রতিষ্ঠান থেকে অকৃতকার্যের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশে অপারগতা জানিয়েছেন অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ফৌজিয়া রশিদ।
মতিঝিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (বালক), সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুল, আগারগাঁও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মিরপুরের মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ সব স্কুল অ্যান্ড কলেজে উদ্বেগজনক হারে ফেলের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানা গেছে।
ঢাকার বিভিন্ন স্কুলের ক্লাস শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, করোনার পরে শিক্ষার্থীরা পেছনের মৌলিক বিষয়গুলো ভুলে গেছে। গণিতের প্রধান সূত্রগুলো মনে রাখতে পারছে না। ইংরেজি, গণিত, ধর্মশিক্ষা, বিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান, জীববিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, হিসাব বিজ্ঞান, ব্যাংকিং, বাংলাসহ অনেক বিষয়ে তারা জানা তথ্য ভুল করছে। ক্লাসে আবারও পড়াতে হচ্ছে। সে কারণে ফেলের সংখ্যা বেড়ে গেছে।
শিক্ষকরা আরও জানান, শিক্ষার্থীদের হাতের লেখার গতি অনেক কমে গেছে। তারা সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছে না। বই পড়ার প্রতি আগ্রহ কমেছে। বাসার কাজ দিলেও কয়েকজন বাদে অধিকাংশ শিক্ষার্থী কোনো রকমে বানিয়ে আনছে। মোবাইল ও অন্য ডিভাইসের প্রতি তাদের আগ্রহ বেশি। অভিভাবকরাও আমাদের কাছে এসে অভিযোগ দিচ্ছেন। বাড়িতে তারা সন্তানদের নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হচ্ছেন। পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের শিখন ঘাটতি লাঘবে বিদ্যালয় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক নাজমুল করিম (ছদ্মনাম) বলেন, আমি বিগত সাত বছর ধরে এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছি। বিগত সময়ে সাময়িক পরীক্ষায় হলিক্রসের ফলাফল কখনো এত খারাপ হয়নি। মাধ্যমিক পর্যায়ে ৪০-৭০ শতাংশ ছাত্রী ফেল করছে। করোনার কারণে তারা নিচের অধ্যায় শেষ না করে নতুন ইউনিটে ওঠায় বিপাকে পড়েছে। সে কারণে শতকরা ৯০ জন ছাত্রীকে ক্লাস শিক্ষকদের প্রাইভেটে যেতে হচ্ছে।
এই স্কুলের শিক্ষার্থী পারপিতা ফাইহার ‘আত্মহত্যা’র ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেয়েটাকে আমি চিনতাম। সে অনেক হাসিখুশি থাকতো। পড়ালেখায় অনেক মনোযোগী ছিল। করোনার কারণে নিয়মিত পড়ালেখা করতে না পারায় প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় ফেল করে। বাবা-মাকে স্কুলে ডাকাটা তার কাছে লজ্জাজনক মনে হওয়ায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আমরা আর কাউকে পারপিতার মতো হারাতে চাই না। শিক্ষার্থীদের কীভাবে ক্লাস অনুযায়ী জ্ঞান দেওয়া সম্ভব, সেই পথ খুঁজে বের করতে হবে।
ভিকারুননিসার মাধ্যমিক স্তরের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন বাসায় বসে থাকায় আমার মেয়ে মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ে। অনলাইন ক্লাসের জন্য তাকে মোবাইল ফোন কিনে দিতে হয়েছিল। সেই ফোন এখন তার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অনেক চেষ্টা করেও তার কাছ থেকে সেটি নেওয়া সম্ভব হয়নি। ডিভাইসের প্রতি তার আসক্ততার কারণে আমরা চিন্তায় পড়েছি। বিষয়টি স্যারদের জানিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ তারিক আহসান জাগো নিউজকে বলেন, করোনায় আমাদের শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছে তা পোষাতে চলমান বাড়তি ক্লাস নেওয়া বা বাড়তি মনিটরিং পর্যাপ্ত নয়। শিক্ষার্থীরা ক্ল্যাসিকাল সাবজেক্টের একটি লেভেল বা লেয়ার অতিক্রম করতে পেছনের জ্ঞানগুলো বুঝতে না পারলে পরের স্তরে সমস্যা হয়। তার মধ্যে ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয় রয়েছে। এগুলোর শিখন ঘাটতি কাটাতে আরও বেশ কিছু কার্যকর প্রোগ্রাম দরকার। প্রতিবেশী শিক্ষার্থীর মধ্যে লার্নার গ্রুপ তৈরি করে ক্লাসরুমের বাইরেও কিছু কার্যক্রমে যুক্ত করা যায়। এর মাধ্যমে অন্যদের কাছে শেখার সুযোগ তৈরি হবে।
‘শুধু ক্লাসরুমে ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে না। অ্যাসাইনমেন্টগুলো আরও চিন্তা-ভাবনা করে প্রজেক্টভিত্তিক করে তুলতে হবে। যেন শিক্ষার্থীরা ক্লাসের বাইরে, বাড়িতে ও অবসরে বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে তার সমস্যার সমাধান করতে পারে। এভাবে তার ঘাটতি পূরণ করতে হবে। শিক্ষকরা শুধু বিষয় নির্বাচন করে দিলেন আর শিক্ষার্থীরা বাসায় থেকে তা লিখে জমা দিলেই শিখন ঘাটতি পূরণ হবে না। ক্লাসরুমে পড়িয়ে শিখন ঘাটতি পূরণ হবে তাও সঠিক নয়। অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষকদের সংযোগ তৈরি করা হবে। প্রতিদিনের যে কার্যক্রম সেটি শিক্ষার্থীরা কীভাবে করতে পারে বাবা-মাকে বোঝাতে হবে। তারা সেটি জানলে সন্তানকে সহযোগিতা করতে পারবেন।’
এই শিক্ষাবিদ আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত যেসব ক্লাস নেওয়া হবে তাতে অবশ্যই পেছনে অসম্পন্ন বিষয়বস্তুর ওপর জ্ঞানার্জনে ধারণা দিতে হবে। তেমনি শিক্ষকদের মাধ্যমে কিছু প্রজেক্টভিত্তিক ডিজাইন তৈরি করা যায়, যা শিক্ষার্থীর ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে সহায়ক হবে। লার্নিং অভিজ্ঞতার ডিজাইন করাটা শিক্ষকদের জন্য অনেক জরুরি। হোম বেজড, কমিউনিটি বেজড, ডিসট্যান্স এবং ফেস-টু-ফেস হাইব্রিড মোডে শেখাতে হবে।যদিও দ্রুত সময়ের মধ্যে শিখন ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার আশার আলো দেখছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, পৃথিবীজুড়ে করোনার ভয়াবহ আঘাত থেকে কেউ বের হয়ে আসতে পারেনি। বাংলাদেশে করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শিক্ষাখাতে। ক্লাস, পরীক্ষাসহ শিক্ষাব্যবস্থার স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছিল। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা অনলাইন ক্লাস ও অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম চালু করি। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সঙ্গে সংযুক্ত রাখা সম্ভব হয়। শিক্ষকরাও প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অনলাইনে পাঠদান চালিয়েছেন। মন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের ডিভাইস, আর্থিক সংকট ও ইন্টারনেটের গতি কম থাকায় নিরবচ্ছিন্নভাবে অনলাইন শিক্ষা মাধ্যমে কিছু প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। কিছু শিক্ষার্থী পিছিয়ে পড়ে। সে কারণে ক্লাস ও পরীক্ষার ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাদের জন্য শিখন ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে ক্লাসে বিশেষভাবে মনিটরিংয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যে কোনো ধরনের সংকট মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে ব্লেন্ডেড এডুকেশন সিস্টেম (অনলাইন-অফলাইন) চালু করা হচ্ছে। করোনাই আমাদের এ ধরনের চিন্তা করতে বাধ্য করেছে।এমএইচএম/এএসএ/এমএস