নিজেকে মেলে ধরতে শুরু করেছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটের সফল পারফরমার, কার্যকর ক্রিকেটার ও ম্যাচ উইনার নুরুল হাসান সোহান জাতীয় দলের জার্সি গায়েও নিজের ‘ক্যারেক্টার শো’ করেছেন। দেখিয়ে দিয়েছেন তার ভেতরে বারুদ আছে। শুধু জ্বলে ওঠার অপেক্ষা। কিন্তু আঙ্গুল ফ্র্যাকশ্চার হঠাৎই সে পথে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে।
Advertisement
জিম্বাবুয়ের মাটিতে শেষ পর্বে ইনজুরির কারণে খেলতেই পারেননি। পরে এশিয়া কাপেও মাঠের বাইরেই কাটাতে হলো।
আশার কথা নিউজিল্যান্ড সফর ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরেছেন নুরুল হাসান সোহান এবং শুধু ১৫ জনের দলেই জায়গা পাননি। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ডেপুটি হয়েই এসেছেন ফিরে।
আঙ্গুলের ফ্র্যাকশ্চারের জায়গায় ব্যথা আছে। তবে তা নিয়ে তেমন মাথা ব্যথা নেই সোহানের। এ সম্পর্কে তার কথা, ‘ব্যথা তো থাকবেই। ব্যথা কমিয়ে যতটুকু পারা যায় খেলতে হবে। এটা বড় কোন ব্যাপার হবে না। আমি এটা নিয়ে কনসার্ন নই। ইনশাআল্লাহ ঠিক হয়ে যাবে।’
Advertisement
সহ অধিনায়ক হওয়াটা কিভাবে দেখছেন? আজ তারও জবাব দিয়েছেন সোহান। বলেছেন, ‘ভাইস ক্যাপ্টেন হয়ে দলে ফেরা নিয়ে বাড়তি কোন উচ্ছ্বাস, আবেগ নেই। তার চেয়ে বড় হলো দল। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বেশ কিছুদিন ধরেই ভাল খেলছে না বাংলাদেশ। আর দল হিসেবে ভাল করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
এ উপলব্ধি থেকেই আরো বলেন, ‘সবসময় আমার লক্ষ্য থাকে যেন দলের জন্য কিছু করতে পাররি। বেশ কিছুদিন ধরে টি-টোয়েন্টিতে ভাল করতে পারছি না। মনে হয় যে দল হিসেবে ভাল করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর আমরা যে খুব খারাপ খেলেছি তাও না। কিন্তু আমরা ক্লোজ ম্যাচ যেগুলো আমাদের দিকে আসতে পারব এই জায়গাটায় হেরে যাচ্ছি। ফিফটি ফিফটি বা সিক্সটি-ফরটি চান্স থাকে যে ম্যাচগুলোতে, সেগুলো আমাদের দিকে কিভাবে আনা যায়? সে চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছে মাথায়।’
আর তাই মুখে এমন কথা, ‘এ জায়গাগুলোতে উন্নতি করার একটা জায়গা আছে আমাদের।’
নিউজিল্যান্ডে তিনজাতি ক্রিকেটে অংশ নেওয়ার আগে আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা প্রস্তুতি কার্যক্রমে সহায়ক উপাদান হিসেবে কাজ করবে এমন বিশ্বাস সোহানের। তিনি বলেন, ‘আমরা যত ম্যাচ খেলব তত ম্যাচ টেম্পারমেন্ট বুঝে ওঠার জন্য ভাল হবে। অভিজ্ঞতাও হবে। আমার কাছে মনে হয় যে আমরা যে নিউজিল্যান্ড যাওয়ার আগে একটা ক্যাম্প করতে পারছি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারছি সেটা খুব ভাল হবে।’
Advertisement
কিন্তু আরব আমিরাতের সঙ্গে খেলে কি লাভ হবে? সোহানের জবাব, ‘যার সাথেই খেলি না কেন, এটা একটা অভিজ্ঞতা হয়। কোনো দলকেই তো টি-টোয়েন্টিতে ছোট করে দেখতে পারবেন না। যেদিন যারা ভাল খেলবে তারাই জিতবে। আমার কাছে মনে হয় যে, এটা বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে খুব ভাল সুযোগ যে ম্যাচ খেলতে পারছি।’
নতুন টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার শ্রীধরন শ্রীরামের সঙ্গে কথা হয়েছে। সে কথোপকোথনের সূত্র ধরে সোহানও মনে করেন, নতুন টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ঠিকই বলেছেন। কোচের সঙ্গে আমি একমত, আমাদের পারফর্ম করা খুব দরকার। সে সঙ্গে ইমপ্যাক্ট ফেলাও গুরুত্বপূর্ণ। বড় বড় রান করার চেয়ে ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী ইমপ্যাক্ট ইনিংসগুলা খুব গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষকরে টি-টোয়েন্টিতে।’
সোহানের আশা নিউজিল্যান্ডের তিনজাতি টুর্নামেন্ট আর বিশ্বকাপে যদি বাংলাদেশ একটি বা দুটি ম্যাচ জিতে যায়, তাহলে দলের চেহারা পাল্টে যাবে।
মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদসহ এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সিনিয়রদের ছাড়াই খেলবে বাংলাদেশ। তার প্রভাব কি পড়বে? এমন প্রশ্নের জবাবে সোহানের একটাই কথা, ‘আমাদের অভিজ্ঞ পারফরমারদের অবদান অন্যরকম। ওনারা আমাদের অনেকদূর নিয়ে গেছেন। এখন আমরা যারা আছি, আমাদের কাজ হল এই অবস্থা থেকে আরও এগিয়ে যাওয়া।’
এআরবি/আইএইচএস/