জাতীয়

সর্বনিম্ন ১০০ টাকা ভাড়া চান উবার চালকরা

সর্বনিম্ন ১০০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ, চালকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়া, ট্যাক্স মওকুফ ও ঝুঁকিবিমাসহ ১৫ দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন ও মানববন্ধন করেছে ঢাকা রাইড-শেয়ারিং ড্রাইভার্স ইউনিয়ন (ডিআরডিইউ)।

Advertisement

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কর্মবিরতি পালন ও মানববন্ধনে তারা এসব দাবি জানান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০২১ সালে উবার সাত হাজার কোটি টাকা আয় করেছে। কিন্তু রাইড-শেয়ারিং মালিকরা চালক ও যাত্রীদের যুক্তিসঙ্গত প্রাপ্য সেবা দিচ্ছে না। উবার ও অন্যান্য রাইড-শেয়ারিং কোম্পানি সার্ভিস নীতিমালা-২০১৭ অনেক ক্ষেত্রেই অমান্য করে আসছে।

এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হালিম তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক আল-আমিনসহ রাইডশেয়ারিংয়ের চালকরা বক্তব্য রাখেন।

Advertisement

সংগঠনের সভাপতি রাজেশ খান বলেন, যাত্রীদের অভিযোগ আমরা বেশি ভাড়া নেই। কিন্তু যানজট ও অন্যান্য অজুহাতে যে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয় সেই টাকা আমরা পাই না। তা পায় অ্যাপস কোম্পানি। অ্যাপসের বিভিন্ন অযৌক্তিক নীতিমালার কারণে আমরা কম টাকা পাই, যা আমাদের ন্যায্য ভাড়ার চেয়ে কম।

‘কিছুদিন ধরে উবার কোম্পানি আমাদের একটি মেসেজ দিয়ে আসছে নতুন চুক্তিনামার জন্য, যা সম্পূর্ণ ইংরেজি ভাষায় এবং যা আমাদের অনেকের বুঝতে অসুবিধা হয়, না বুঝে অনেকেই এটাতে সম্মতি দেই। রাইড শেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা-২০১৭ এর অনুচ্ছেদ ‘চ’ এর ৭ নম্বর ধারায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে রাইড-শেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অ্যাপ, ওয়েবসাইট এবং মোবাইলে ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষাও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

তাদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো

১. মোটরযানের মালিক ও চালকদের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি করতে হবে। চুক্তিপত্রে সব পক্ষের অধিকার ও দায়িত্বের বিষয় লিখিত ও সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।

Advertisement

২. উবারসহ সব রাইড-শেয়ারকারী কোম্পানিগুলোকে ড্রাইভারদের শ্রমিক হিসেবে মর্যাদা ও অধিকার দিতে হবে।

৩. রাইড-শেয়ারিং অ্যাপসের ওয়েব ও মোবাইলের সব চুক্তিপত্রে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, যা আইনে আছে।

৪. প্রতিষ্ঠান ও চালকদের মধ্যে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান না হলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

৫. আইডি বন্ধের এক মাস আগে লিখিত নোটিশের মাধ্যমে চালক বা গাড়ির মালিককে জানাতে হবে। অভিযোগ প্রমাণ ব্যতীত কোনো আইডি বন্ধ করা যাবে না। এর আগে বন্ধ করা সব আইডি খুলে দিতে হবে ।

৬. রাইড-শেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক চালক ও যাত্রী উভয়ের ঝুঁকিবিমা নিশ্চিত করতে হবে।

৭. সব রাইড-শেয়ারিং চালকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ২৪ ঘণ্টা ড্রাইভার সাপোর্ট নম্বর খোলা রাখতে হবে। যাত্রী ও চালকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলে সমঝোতার ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. মিনিট, কিলোমিটার, বেইজ হিসাব করে পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে। বাইকের ক্ষেত্রে প্রতি ট্রিপে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা, সিএনজি ১৫০ টাকা কারের ক্ষেত্রে ২০০ টাকা নিশ্চিত করতে হবে।

৯. ১০ শতাংশের বেশি কমিশন নেওয়া বন্ধ করতে হবে।

১০. রাইড-শেয়ারিংয়ে থাকাকালীন যদি কোনো চালক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, দায়ভার অবশ্যই কোম্পানিকে নিতে হবে। পূর্বে রাইডে থাকাকালীন খুন হওয়া ব্যক্তি ও ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনা ঘটলে তার পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

১১. সালিশি আইন বাদ দিয়ে বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় আইন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) আইন শ্রমিক মন্ত্রণালয় এবং বিআরটিএ এর আইন কার্যকর করতে হবে।

১২. যাত্রীদের কাছ থেকে বুকিংয়ের নামে ১০ টাকা বুকিং ফি নেওয়া বন্ধ করতে হবে।

১৩. নতুন নিয়ম চালু করে চালকদের কাছ থেকে ট্যাক্স নেওয়া বন্ধ করতে হবে।

১৪. রাইড নেওয়া অবস্থায় যাত্রী কোনো ধরনের মাদকদ্রব্য নিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পরলে চালকরা দায়ী থাকবে না।

১৫. ঢাকা চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ সব বিভাগীয় শহরগুলোতে পর্যাপ্ত পার্কিংয়ের ব্যবস্থা ও বে-আইনি ভাবে পুলিশি হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

এমআইএস/জেএস/জেআইএম