রাজধানীর আকাশে মঙ্গলবার সকাল থেকেই ছিল মেঘের ঘনঘটা। কোথাও হালকা, কোথাও ভারি বৃষ্টির দেখা মেলে দুপুর গড়ানোর আগেই। এদিন ভোর থেকেই বৃষ্টি শুরু। এর মধ্যে সকাল ১০টা থেকে টানা এক ঘণ্টা চলতে থাকে মুষলধারায় বর্ষণ। দুপুরে ভারি বৃষ্টি কমলেও অব্যাহত ছিল ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি, আকাশে কালো মেঘের ঘুরে বেড়ানো।
Advertisement
এদিন বৃষ্টিতে রাজধানীর অনেক সড়কই তলিয়ে যায়। এতে সকালে অফিসগামী নগরবাসীকে পড়তে হয় জলাবদ্ধতা আর ভয়াবহ যানজটে।
বৃষ্টিতে রাজধানীর কাজীপাড়া, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, এয়ারপোর্ট, বাড্ডা, রামপুরা, নতুনবাজার, কচুক্ষেতসহ বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
বেসরকারি চাকরিজীবি সাদ্দাম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, দেড় ঘণ্টা ধরে বিজয় সরণির জ্যামে বসে ছিলাম। একটা গাড়িও নড়েনি। বৃষ্টি এই শহরের জন্য অভিশাপ।
Advertisement
গণমাধ্যমকর্মী হাসান শান্তানু বলেন, সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে মুগদার মানিকনগর বিশ্বরোড থেকে বাসে উঠেছি, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটে নামবো। দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে রামপুরার বিটিভি টাওয়ারের সামনে আটকে ছিলাম। গাড়ি থেমে ছিল নিস্তল ছবির মতো।
অন্যদিনের তুলনায় বাস কম থাকার অভিযোগও করেছেন যাত্রীরা। সড়কে অবাধে রিকশা চলাচল করতে দেখা যায়। সুযোগ বুঝে সিএনজি অটোরিকশা, রিকশাচালকরা বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন।
কালশী মোড়ে এক ঘণ্টা ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বিপণনকর্মী শারদুল। যাবেন মিরপুর-১ নম্বর। পরে ৭০ টাকা ভাড়া ঠিক করে যান মিরপুর-১২ নম্বরে। সেখান থেকে বাসে উঠবেন বলে জানান।
তিনি বলেন, বাস নেই। ২০ টাকার জায়গায় ১০০ টাকা খরচ হয়েছে। ভিজে জামাকাপড়ও নষ্ট হয়েছে।
Advertisement
মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরেও যাত্রীদের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
রাজধানীর অন্যান্য বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হালকা-মৃদু বৃষ্টিতে অনেক স্থানে রাস্তার একাংশ তলিয়ে চলাচলের জায়গা কমে গেছে। এর ফল্র গাড়িগুলো দ্রুত এগোতে পারছে না। আবার ইঞ্জিনে পানি ঢুকে সড়কেই বিকল হয়ে পড়ে অনেক সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও প্রাইভেটকার। এতে সড়কগুলোতে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
সকালে মিরপুরের শেওড়াপাড়ার, আগারগাঁও, মনিপুরের সড়কের দুইপাশ পানিতে তলিয়ে যায়। যদিও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়ক থেকে নামতে শুরু করে পানি। একই অবস্থা দেখা যায় রাজারবাগ সড়কে। গ্রিনরোডের সড়কেও জমেছিল পানি। প্রধান সড়ক ছাড়া অনেক অলিগলিতেও তৈরি হয় জলাবদ্ধতা।
যদিও মনিপুরের জলাবদ্ধতাকে জলজট বলে উল্লেখ করেছেন মিরপুর-১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইসমাইল মোল্লা।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বিভিন্ন স্থান পর্যবেক্ষণ করে দেখলাম, ড্রেনে জমে আছে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক সামগ্রী। জার ফলে রাস্তায় জলজট সৃষ্টি হয়েছে। জলজটের মূল কারণ ড্রেন এবং খালের সংকীর্ণতা। সুয়ারেজ লাইনের কারণে ড্রেন হয়েছে ছোট। প্লাস্টিক আবর্জনায় ভরে গেছে, পানি নামতে পারছে না।
এটা থেকে মুক্তি পেতে সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকেও সচেতন হতে হবে বলে জানান তিনি।
এসএম/ইএ/জিকেএস