আন্তর্জাতিক

রানির মতো পোশাক পরায় থাই অধিকারকর্মীর ২ বছর জেল

রানির মতো পোশাক পরে রাজতন্ত্রের অবমাননার অভিযোগে থাইল্যান্ডে এক অধিকারকর্মীর দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। ২৫ বছর বয়সী জাতুপর্ন ‘নিউ’ সায়েউয়েং ২০২০ সালে ব্যাংককে একটি রাজনৈতিক বিক্ষোভ চলাকালে গোলাপি রঙের সেই পোশাক পরেছিলেন। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) দেশটির আদালত এ রায় দেন।

Advertisement

তবে তিনি রাজতন্ত্রের অপমানের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন যে তিনি কেবল একটি ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেছিলেন সেদিন। তবে থাইল্যান্ডে কঠোর আইন রয়েছে যেখানে রাজা ও অন্যান্য রাজপরিবারের সদস্যদের সমালোচনা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ২০১৯ সালে সিংহাসনে আরোহণ করার পর থেকে, মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে যে ক্ষমতাশালী রাজতন্ত্রের সংস্কারের দাবিতে একটি প্রতিবাদ আন্দোলনকে দমন করার জন্য কর্তৃপক্ষ ক্রমবর্ধমানভাবে লেসে-ম্যাজেস্টি আইন প্রয়োগ করছে।

দেশটির আইনী সংগঠনগুলো বলছে, ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে, তিন বছরে অন্তত ২১০ জন বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে লেসে-ম্যাজেস্টি আইন ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে।

Advertisement

এ রায়ের কঠোর সমালোচনা করছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। জাতুর্পনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তার মেয়াদ অবিলম্বে কমিয়ে দুই বছর করা হয়।

তিনি ২০২০ সালে গোলাপি সিল্কের পোশাক পরে একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে তিনি লাল গালিচায় হাঁটেন। এসময় একজন পরিচারক তার মাথায় একটি ছাতাও ধরে ছিলেন।

রাজা মাহা ভাজিরালংকর্ন ২০১৬ সালে তার বাবা মারা যাওয়ার পর ক্ষমতায় বসেন। দেশটির রাজকীয় আইন অনুসারে রাজ শাসনের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা নিষেধ এবং আইন ভঙ্গ করলে কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।

রাজার স্ত্রী, রানি সুথিদা, প্রায়ই পাবলিক ইভেন্টের জন্য রেশম পোশাক পরেন। থাই রাজপরিবারের সদস্যদের জন্য প্রায়শই অনুষ্ঠান এবং অন্যান্য ইভেন্টগুলোতে প্যারাসোল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় পরিচারককে।

Advertisement

আদালতের রায়ের আগে প্রকাশিত একটি সাক্ষাত্কারে জাতুপর্ন বলেছেন ‘কাউকে উপহাস করার কোনো উদ্দেশ্য আমার নেই। আমি সেদিন নিজের জন্য পোশাক পরেছিলাম, থাই ঐতিহ্যের পোশাক পরেন নিজের সংস্করণের জন্য’।

রেড কার্পেট প্রতিবাদ, সে বছর রাজতন্ত্র ও সামরিক সরকারের প্রভাবের সমালোচনা করা বেশ কয়েকটি ঘটনার মধ্যে একটি। একই সপ্তাহে রাজা ভাজিরালংকর্নের কন্যাদের মধ্যে একটি ফ্যাশন শো অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় মঞ্চস্থ হয়েছিল এটি।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘মক ফ্যাশন শোটি ছিল দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ পাবলিক ইভেন্ট যা রাস্তার উৎসবের মতো’। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য শাস্তি দেওয়া উচিত নয় বলেও মনে করেন তিনি।

গত বছর, একজন সাবেক বেসামরিক কর্মচারী যাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজপরিবারের সমালোচক বলে মনে করা হয় তাকে ৪৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

তবে সর্বশেষ রায়ের ব্যাপারে রাজপরিবারের তরফে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সূত্র: বিবিসি

এসএনআর