লাইফস্টাইল

ঘুমের যে অভ্যাস অজান্তেই বাড়ায় ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি

ফ্যাটি লিভার ডিজিজের কারণে লিভারে অতিরিক্ত চর্বি তৈরি হয়। একে চিকিৎসার পরিভাষায় হেপাটিক স্টেটোসিসও বলা হয়। সাধারণত এই রোগে আক্রান্তদের মধ্যে তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। এ কারণে অনেক দেরি করে রোগ শনাক্ত হয়, আর ততদিনে লিভারের অনেকটাই ক্ষতি হয়ে যায়।

Advertisement

অ্যালকোহল পান করা বা স্থূলতা ফ্যাটি লিভারের অন্যতম কারণ হতে পারে। অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার সাধারণত যারা নিয়মিত মদ্যপান করেন, তাদের মধ্যে দেখা দেয়। অন্যদিকে নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারে যে কেউই আক্রান্ত হতে পারেন। পরবর্তী সময়ে এটি জীবন-হুমকির কারণ হতে পারে।

বিভিন্ন কারণে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়তে পারে, যার মধ্যে অন্যতম হলো স্থূলতা ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা। সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, ঘুমের অভ্যাসও লিভারে চর্বি জমার কারণ হতে পারে।

ঘুম শরীরকে সুস্থ রাখে। ঘুম না হলে শরীরে ও মনে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। এন্ডোক্রাইন সোসাইটির এক প্রতিবেদনে বলছে, ফ্যাটি লিভারের সঙ্গে ঘুমের এক নির্দিষ্ট অভ্যাসের সংযোগ আছে।

Advertisement

গবেষকরা জানিয়েছেন, ঘুমের বিভিন্ন অভ্যাস যেমন- কম ঘুমানো, নাক ডাকা কিংবা জেগে থাকা আবার দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে।

গবেষণার এক লেখক ইয়ান লিউ জানান, যারা রাতে কম ও দিনে দীর্ঘক্ষণ ঘুমায় তাদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে, সঠিক সময়ে ঘুমালে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি ২৯ শতাংশ কমানো যায়।

গবেষণায় ফ্যাটি লিভারের রোগে আক্রান্ত ৫ হাজার ১১ জন প্রাপ্তবয়স্কের স্ব-প্রতিবেদিত ঘুমের আচরণ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে না ঘুমানো, দেরি করে ঘুমানো ও নাক ডাকা এই রোগের সঙ্গে যুক্ত।

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা, টাইপ ২ ডায়াবেটিস বা মেটাবলিক সিনড্রোম থাকা, বা নির্দিষ্ট প্রেসক্রিপশনের ওষুধ গ্রহণ করা ফ্যাটি লিভার রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের মতে, যাদের রক্তে চর্বির পরিমাণ বেশি, উচ্চ রক্তচাপ বা হেপাটাইটিস সি’র মতো সংক্রমণ বা কিছু টক্সিনের সংস্পর্শে এসেছেন তারাও এই রোগের ঝুঁকিতে আছেন।

ফ্যাটি লিভার রোগের চিকিৎসা করা হয় কীভাবে?

ফ্যাটি লিভার রোগের চিকিৎসার জন্য কোনো বিশেষ ওষুধ নেই। তবে চিকিৎসকরা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে লাইফস্টাইল পরিবর্তনের পরামর্শ দিতে পারেন। আপনার যদি অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার থাকে, তাহলে মদ্যপান ও ধূমপান ছাড়তে হবে অবশ্যই।

এর পাশাপাশি ওজন কমাতে হবে। আপনার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত, যার মানে আপনাকে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবারের পছন্দগুলিতে স্যুইচ করতে হবে ও নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপে লিপ্ত হতে হবে।

আপনি যদি এরই মধ্যে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ খান, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত তা সেবন করুন।

ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমাবেন যেভাবে

ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসা ও প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করতে হবে। এই রোগের ঝুঁকি কমানোর সর্বোত্তম উপায় হলো চর্বিযুক্ত খাবার বাদ দেওয়া।

যা আপনার শরীরে কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়াতে পারে। এর পাশাপাশি একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন ও নিয়মিত ব্যায়াম করুন। অ্যালকোহল এড়িয়ে সীমিত করুন ও সময়মতো ওষুধ খান।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

জেএমএস/এমএস