রাশিয়ার গ্যাসের দাম নির্ধারণে ব্যর্থ হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। শুক্রবার রাশিয়ার গ্যাসের দাম নির্ধারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জরুরি বৈঠকে বসেন। হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজার্তো জানিয়েছেন, ওই বৈঠকে দেশগুলো একমত হতে পারেনি। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তরে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
Advertisement
পিটার সিজার্তো বলেন, বৈঠকে কোনো সমাধান আসেনি। ওই বৈঠকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিতর্ক হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহে অথবা তার পরের সপ্তাহে শুধু সদস্য দেশগুলোই নয় বরং ইউরোপীয় কমিশন লিখিতভাবে কিছু প্রস্তাব উপস্থাপন করবে।
ইউরোপীয় কমিশন চলতি মাসের প্রথম দিকে গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়া ঠেকাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের বৈঠক ডাকার পরামর্শ দিয়েছিল। ইউরোপীয় কমিশনের পক্ষ থেকে যেসব পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে একটি ছিল রাশিয়ার পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা গ্যাসের দাম ঠিক করে দেওয়া।
কিন্তু সদস্য দেশগুলো গতকালের বৈঠকে এই প্রস্তাবের বিষয়ে একমত হতে পারেনি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো কোনো সদস্য দেশ বলছে,এ ধরনের পদক্ষেপে হিতে-বিপরীত হতে পারে।
Advertisement
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। তারপর পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়। ইউক্রেনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বিদ্যমান এমন দেশগুলো যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই রাশিয়ার তেল এবং গ্যাস আমদানি কমিয়ে দিয়েছে বা বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ গত বছর ইউরোপে ৪০ শতাংশ গ্যাস সরবাহ করেছে রাশিয়া।
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে জ্বালানি সংকটে পড়েছে ইউরোপের বেশির ভাগ দেশ। ইউরোপীয়রা তাদের আয়ের এক-দশমাংশ জ্বালানিতে ব্যয় করছে। ধনী পরিবারগুলোতে বড় বাড়ি ও গাড়ি থাকার প্রবণতা থাকে, তবে জ্বালানির ব্যয় বৃদ্ধি সাধারণত আয়ের পার্থক্যের মতো বড় নয়।
এজন্য গরিবদের জ্বালানি খরচ বাজেটের তুলনায় বেড়ে যাচ্ছে। দেশগুলোর মধ্যেও এ ধরনের সমস্যা দেখা যাচ্ছে। যেমন- ইউরোপের পূর্বাঞ্চলের সাবেক দরিদ্র কমিউনিস্ট দেশগুলো সমৃদ্ধ নর্ডিক উত্তরের তুলনায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
তাছাড়া দেশগুলোর ঝুঁকিতে থাকার অন্যতম কারণ হলো প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে গ্যাসের পাইকারি মূল্য দ্বিগুণ হয়েছে। একসঙ্গে কয়লার দামও বেড়েছে। এদিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির মূল্য অপরিবর্তিত রয়েছে।
Advertisement
টিটিএন/এএসএম