জনশক্তি রফতানি থেকে প্রাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে মজবুত ভিত্তি দিয়েছে। এ জন্য দক্ষ জনশক্তি রফতানি, জনশক্তি রফতানি আরো বাড়ানো, এবং নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে যারা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন তাদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি। দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বিদেশ গিয়ে যারা অবৈধ শ্রমিক হিসেবে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তাদের বৈধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশেষ করে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অবৈধ শ্রমিকদের বৈধ করার ব্যাপারে অগ্রাধিকার দিতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রফতানি করে বাংলাদেশ। নিকটবর্তী মালয়েশিয়ায়ও রয়েছে অনেক শ্রমিক। এদের অনেকেই অবৈধভাবে অবস্থান করছেন বলে মালয়েশিয়া সরকার বলছে। অবৈধ শ্রমিকরা নানা রকম বিড়ম্বনার শিকার হন। তাদের কাজও জোটেনা। কাজ করলেও পারিশ্রমিক পান না ঠিকমত। ফলে দেশে টাকা পাঠাবেন তো দূরের কথা বিদেশে টিকে থাকাই দায় হয়ে পড়ে। এজন্য অবৈধ শ্রমিকদের কাগজ-পত্রাদি ঠিক করে তাদের বৈধ করে কাজের সংস্থান করে দিতে হবে। আশার কথা হচ্ছে, মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশিসহ বিদেশি শ্রমিকদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমাদ জাহিদ হামিদী। তিনমাসের মধ্যে এ কার্যক্রম শেষ করা হবে এবং পুরো প্রক্রিয়াটি চলবে অনলাইনে। মালয়েশিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক কদিন আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন দেশটিতে অবস্থানরত বিদেশি শ্রমিকদের বৈধতা দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর ওই ঘোষণার সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই বৈধতা পাওয়ার জন্য নিবন্ধন শুরুর সময় ঘোষণা করলেন উপপ্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন টিভিসাতুতে এ খবর প্রকাশ করা হয়।মালয়েশিয়ার সরকারের এ ঘোষণার পর দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা এখন নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। নতুন এই পদ্ধতির মাধ্যমে দেশটিতে অবৈধ ২০ লাখ বিদেশি শ্রমিক বৈধতা পাবেন। এছাড়া অনলাইন পদ্ধতিতে দালালদের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে। এ জন্য যাদের পাসপোর্ট নেই দ্রুত তা করতে অনুরোধ জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার। এ ব্যাপারে শ্রমিকদের সচেতনতা এবং সহযোগিতা কাম্য। আমরা আশা করবো নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি অবৈধ শ্রমিকরা বৈধ হবে। এ ব্যাপারে দুই দেশকেই আন্তরিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি দালাল চক্রের অপতৎপরতা বন্ধেও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। দালালদের চক্করে পড়ে শুধু একজন শ্রমিক নিঃস্বই হন না এতে দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হয়। নষ্ট হয় শ্রমবাজার। এ অবস্থায় জনশক্তি রফতানিতে সার্বিক একটি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। এইচআর/এমএস
Advertisement