যুক্তরাষ্ট্রে কমেই চলেছে গ্যাসোলিন বা পেট্রলের পাইকারি দাম। পরিশোধকরা বাড়তি উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ায় আগামী মাসগুলোতে এর দাম আরও কমবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকরা। খবর রয়টার্সের।
Advertisement
যুক্তরাষ্ট্রে পরিশোধিত জ্বালানি বা পাতন পণ্যের মজুত এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। সাধারণত অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করে যেসব পণ্য পাওয়া যায় সেগুলোকেই পাতন পণ্য বলা হয়। এর মধ্যে রয়েছে পেট্রল, ডিজেল, কেরোসিন, জেট ফুয়েল, হিটিং অয়েল প্রভৃতি।
ইউরোপসহ বাকি বিশ্বে ব্যাপক চাহিদার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এসব পণ্য উৎপাদনের হার বেশি চলছে। দেশটিতে পেট্রলের চাহিদা এতদিন বেশি থাকলেও এখন কিছুটা কমতির দিকে। কারণ তাদের ড্রাইভিং মৌসুম কিছুদিনের ভেতর শেষ হতে চলেছে।
মার্কিন পরিশোধকরা অবশ্য বছরের শুরুতেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, পেট্রলের চাহিদা কমে গেলেও মধ্যম পাতন পণ্যের (ডিজেল, জেট ফুয়েলসহ অন্যান্য হালকা জ্বালানি) নিম্ন মজুত পূরণের জন্য তারা উচ্চ হারে উৎপাদন চালিয়ে যাবেন।
Advertisement
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার তথ্যমতে, অরগানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) জোটভুক্ত দেশগুলোতে গত জুন মাসে মধ্যম পাতন পণ্যের মজুত ছিল সর্বমোট ৪৮ কোটি ৩৬ লাখ ব্যারেল, যা গত ফেব্রুয়ারির তুলনায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ কম।
যুক্তরাষ্ট্রে পেট্রলের বর্তমান মজুত পাঁচ বছরের গড়ের কাছাকাছি। কিন্তু আগামী দিনগুলোতে তা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
এক ব্যারেল অপরিশোধিত তেল ও তা পরিশোধনের পর পওয়া পেট্রোলিয়াম পণ্যগুলোর সামগ্রিক মূল্যের পার্থক্যকে ‘ক্র্যাক স্প্রেড’ বলা হয়। গত বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রে পেট্রলের ক্র্যাক স্প্রেড ১৪ দশমিক ৫৯ মার্কিন ডলারে নেমেছে, যা গত ফেব্রুয়ারির পর থেকে সর্বনিম্ন।
সাধারণত পেট্রল উৎপাদনে পরিশোধকদের লাভ হয় বেশি। কিন্তু পাতন পণ্যের বৈশ্বিক ঘাটতির কারণে সম্প্রতি হিটিং অয়েলের দাম বেড়েছে। এর ক্র্যাক স্প্রেড বর্তমানে ৬৩ দশমিক ২০ ডলার, যা এবারের গ্রীষ্মের শুরুতে ওঠা রেকর্ড দামের কাছাকাছি।
Advertisement
পরিশোধন বিষয়ক পরামর্শক জন আউয়ার্স বলেন, পরিশোধকরা এই মুহূর্তে পেট্রল উৎপাদন করতে চাচ্ছেন না। কিন্তু তারা ডিজেলের সঙ্গে এটি উৎপাদনেও বাধ্য হচ্ছেন। এ কারণেই পেট্রলের অতিরিক্ত উৎপাদন হচ্ছে।
এক ব্যারেল অপরিশোধিত তেল থেকে ডিজেলের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ পেট্রল পাওয়া যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের সূত্র বলছে, তাদের পরিশোধনাগারগুলো বর্তমানে ৯৩ শতাংশ সক্ষমতায় চলছে। আরবিসির ধারণা, দেশটিতে চলতি বছরে এ পর্যন্ত পেট্রলের চাহিদা অন্তত ৪ দশমিক ৪ শতাংশ কমে গেছে।
আমেরিকান অটোমোটিভ অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, দেশটিতে বর্তমানে পেট্রলের খুচরা দাম প্রতি গ্যালন (৩ দশমিক ৭৮ লিটার) ৩ দশমিক ৭৬ ডলার। গ্যালনপ্রতি রেকর্ড ৫ দশমিক ০২ ডলারে ওঠার পর এর দাম টানা ১১ সপ্তাহ কমেছে।
কেএএ/জিকেএস