একুশে বইমেলা

বইমেলায় হাবিবুর রহমান জুয়েলের `রাঙা মেঘ হলুদ জোছনা`

গ্রাম বাংলার সাদা-মাটা বৈচিত্রহীন জীবন এবং ব্যস্ত শহরের কংক্রিটময় বিচিত্র জীবনধারা-উভয় বিষয়ই হাবিবুর রহমান জুয়েলের লেখনির মাঝে বরাবর খুঁজে পাওয়া যায়। তার লেখার প্রায় চরিত্রকেই মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের ভেতর দিয়ে এগিয়ে যেতে দেখা যায়।তার এবারের উপন্যাসের মূল চরিত্রের নাম নীলু। মাত্র ১৫ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল তার। কিন্তু বিয়ের চার বছর পরই ডিভোর্স হয়ে যায় নীলুর। উপন্যাসের পুরো ঘটনা তাকে ঘিরেই আবর্তিত।ডিভোর্সি মেয়ে নীলুকে অনেকেই বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সে ভালো করেই বুঝে এটি আবেগ মাত্র। শরীর ভোগ হয়ে গেলে ঠিকই একদিন নানা ছলনায় তাকে ফিরিয়ে দেবে। দেবে না তার প্রাপ্য সম্মান কিংবা মর্যাদা। একটা শপিংমলে একসময় চাকরি নেয় নীলু। সেটির মালিকও দিনের পর দিন তাকে মানসিক যন্ত্রণা দিতে থাকে। তার প্রস্তাবে নীলু রাজি হয় না। একসময় চাকরি যায় নীলুর। খড়কুটোর মতো ভাসতে থাকা জীবনে একটু অবলম্বন খুঁজে বেড়ায় নীলু। একসময় বিবাহিত পুরুষ তারেকের সঙ্গে নিষিদ্ধ ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সে। সেই সম্পর্ক গড়িয়ে যায় অনেক দূর। একদিন তারেকের স্ত্রী পুরো ঘটনাটি জেনে যায়। তারেকের স্ত্রী সন্তানের কথা ভেবে তাকে না বলেই তার জীবন থেকে সরে আসে নীলু। তারেকের সুখের সংসারের আশায় দুঃখের ভেলায় পাড়ি দেয় নীলু।গল্পের শেষটা হয়েছে এভাবে... আকাশজোড়া মেঘ। তার ফাঁক-ফোকর গলে হলুদাভ জোছনার আলো এসে পড়ছে পৃথিবীতে। সেই আলো গায়ে মেখে হাঁটছে নীলু। হাঁটছে আর চোখ মুচছে সে। হাঁটতে হাঁটতে বড় রাস্তার কাছে চলে এলো নীলু। তারপর রাস্তার পাশের রেললাইন ধরে এলোমেলোভাবে এগুতে লাগল সে। কিছু দূর যেতেই রেললাইনের মাঝে হোঁচট খেয়ে নিচে পড়ে গেল। ডান হাঁটুর কাছটা অনেকখানি ছিলে গেছে তার। চাঁদটা কিছু সময়ের জন্য মেঘের আড়ালে চলে গিয়ে আবার ফিরে এল। চারদিক হলুদ জোছনায় ছেয়ে আছে।রেললাইনের পাতের উপর ভাবলেশহীনভাবে বসে আছে নীলু। দূর থেকে ট্রেনের শব্দ ভেসে আসে....।বইটি প্রকাশ করেছে কাকলী প্রকাশনী। প্রচ্ছদ এঁকেছেন ধ্রুব এষ। বইমেলায় ১২ নম্বর প্যাভিলিয়নে এটি পাওয়া যাচ্ছে। গায়ের মূল্য ১৬০ টাকা। এছাড়া কাকলী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত লেখকের ‘মায়ার কাজল’ ‘কেউ নেই’ ‘আজি এ বসন্তে’ উপন্যাস তিনটিও কাকলীর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে।এনই/একে/আরআইপি

Advertisement