সাহিত্য

আরিফুল হাসানের নয়টি কবিতা

১. কুমারী কাশবনে

Advertisement

মেঘ ভাঙছে নীলের অভিঘাতেশরৎ ছড়িয়ে পড়ছেপূর্বদিক থেকে বয়ে আসা বাতাসদোল দিচ্ছে কুমারী কাশের শীষে

ক্ষেত থেকে উড়ে যাচ্ছে শাদা বকরোদ খেলে ছায়াবাজি শেষ শালুকের ফুলে বসেছে ভ্রমরজল ও জমিনের সন্ধিচ্ছেদ হবে।

২. দ্বিতীয় যুদ্ধের পর

Advertisement

তৃতীয় রাত এবং চতুর্থ রাত তুমি উজাগর থাকলেপঞ্চমরাতে তোমার যুদ্ধবন্দি সামনে এসে দাঁড়ালোতুমি তাকে কুর্ণিশ করলেসে তোমার বুকে তলোয়ার গেঁথে দিলো অবলীলায়। এমন একটি যুদ্ধের পর তুমি নিহত হলেফুলের বাগানে ঢেকে গেল কীট, তুমি বেঁচে গেলে।

৩. আমার যখন হলে

আমার যখন হলে তখন আরেকটা গান গাইকবিতা শোনাই আরেকটা তোমাকেআমারই তো আছো, এতো তোমার তাড়া কিসের বলো?আরেকটা প্রেম দেই, আরেকটু দেই প্রেমতোমার আমার ভালোবাসায় ভরুক রে হেরেম।

৪. অন্য বাসরে

Advertisement

দুটো পথ পাড়ি দিয়ে, তুমি খেয়া নৌকা ভেড়ালে ঘাটায়আলকাতরার কালো ঘ্রাণ, মনে হলো হেমন্তআমার ঘরে আজ ফসলের উৎসব।খেয়া নৌকোয় পাল তুলে দিলেআমি ছৈয়ের ভেতর থেকে চোখ মেলে দেখিকূলহীন জল শুধু আছড়ায় গলুইয়ের উপরথরথর কাঁপে বুক, ঘর ছেড়ে পাবো নাকি অন্য বাসর?

৫. নিশিবিলাসীর হৃদে

মনে করো লাবণ্যেতুমি ঝরে পড়বে চৈতালি রাতএ বনের পথে, ঝিরিঝিরি হাওয়ায়মাতাল আঁধারে তুমি ছন্দ হারাবে।

চাঁদে ও জ্যোৎস্নায়, নিশিবিলাসীর হৃদেযে থাকে ঘুমিয়ে তাকে জাগাও এবার।

৬. বিলোল অন্তরে

পাথরে অরণ্য ফুটে; সবুজ আঁচলে, ঝুলে থাকে বারোমাসএক পশলা মেঘ, কিছু দুরন্ত বাতাসআর একটা হিমহিম উষ্ণতার বাসর।আমাকে অকিঞ্চিৎকর তামাটে ভাবলে পুড়ে যায় ঘর।

৭. মানুষে ও বিলাপে

বিলোপ করেছি ইতিহাস, মুছে দিয়েছি পথরেখাযাত্রা থেকে গন্তব্যের উধাও জেনেছি, হেঁকেছিদামদর লোভের হাটে। তবু মৃত্যুরং জোসনাফ্যাকাসে জীবনের কৌমার্য ভেঙে এঁকে দেয় বিরল প্রেমের ইতিহাস এ প্রেমহীনে।তখন মানুষে মানুষে ফিসফিস, ঘরে ঘরে মর্সিয়া।

৮. যদি তুমি নষ্ট হয়ে যাও

বরবাদ করে গেছো নিজের বাসর, অতঃপর, তুমিএকেকটা সোনার বার লুফে নিতে গেলেবরবাদ করে দিলে ভেতর বাহির।মঙ্গলের চিন্তায় তখন নিশি ও বিলাস হয় হয়রানহায় তামার মানুষ, তুমি কেন মেঘফুল শরতের?

৯. পথেরও ফুরোবার দিন আছে

সমস্যা সামলাও, যদি তুমি দৃষ্টিকটু হওএ সৌন্দর্যে আগ বাড়াও নিজের দুহাতে।

যদি ঘাসে, শয্যায় পাল তোলো বৈশাখী রঙেজেনে রেখো, পথেরও ফুরোবার দিন আছে।

এসইউ/জিকেএস