ভাষার মাস, বইমেলার মাস। বইপ্রেমীরা বছরজুড়েই অপেক্ষায় থাকেন ফেব্রুয়ারির। কিন্তু মেলা আসলে প্রচণ্ড ভিড় আর উত্তেজনার কারণে বেশিরভাগ সময়ই পছন্দের এবং প্রয়োজনীয় বইগুলো কেনার সুযোগ হয়ে উঠে না। তবে কিছু বিষয় বিবেচনা করলে এই সমস্যা কিছুটা দূর হতে পারে।হাতে সময় কম থাকলে কোনো বিজ্ঞাপন দেখে কিংবা কারো কাছে কোনো বইয়ের গুণের কথা শুনে পছন্দ করতে পারেন বই। আর সেই বইয়ের নাম যদি মোবাইলে নোটে সেভ বা অন্য কোনো কাগজে লিখে রাখেন। ওই নোট মেলায় যাবার দিন রিমাইন্ডার দিয়ে রাখেন তাহলে কিন্তু মিস হবার চান্স নেই।মেলায় প্রায় সব স্টলেই ক্যাটালগ দেয়া হয়। কোনো বন্ধু বা পরিবারের কোনো সদস্য আগে মেলায় গেলে তাকে দিয়ে ক্যাটালগ আনিয়ে রাখতে পারেন। এতে বাসায় বসেও ঠাণ্ডা মাথায় ইচ্ছামত পছন্দ করতে পারবেন। এর মাধ্যমে মেলা থেকে শান্তিমত কেনাকাটা করার সুযোগ তৈরি হবে।বইয়ের চয়েজ ভালো কিংবা বইয়ের বাজারে সারাদিন ঘুরতেও অসুবিধা নেই এমন কাউকে সঙ্গে নিলে আপনার সুবিধাই বেশি হবে। চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে আকৃষ্ট না হয়ে বইয়ের লেখার মান দেখুন। সেক্ষেত্রে বইয়ের ফ্ল্যাপ পড়া অবশ্যই জরুরি। সিঙ্গেল কাব্যগ্রন্থ কিংবা উপন্যাস হুট করেই না কিনে খোঁজ নিয়ে দেখুন ওই লেখকের কোনো সমগ্র বর্তমান মেলায় আছে কিনা। এতে অর্থ সাশ্রয়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনার সংগ্রহও বেশ সমৃদ্ধ হবে।আপনার হাতে একদিনের বেশি মেলায় যাওয়ার সুযোগ থাকলে কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, নতুন লেখক, পুরাতন লেখক, লিটলম্যাগাজিনের জন্য আলাদা আলাদা দিন ভাগ করে নিন। দেখবেন উত্তেজনা আর চাপ দুটাকেই দমিয়ে বেশ ভালো বই সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।কিছু বই বছরজুড়ে পাওয়া যায়। আর কিছু বইয়ের উপর মেলা উপলক্ষে ২৫ শতাংশের বেশি ছাড় দেয়া হয়। সেসব বই মেলা থেকে না নেয়াই মনে হয় বুদ্ধিমানের কাজ। স্টলের বিক্রেতাদের মিষ্টি কথায় ভুলবেন না। নিজের বুদ্ধি বিবেচনা আর রুচিবোধের বিবেচনা করে বই কিনুন।তাড়াহুড়ো করে একসঙ্গে সব বই না কেনাই ভাল। একটু ঘুরে, চা-কফি খেতে পারেন। দেখবেন বেশ এনার্জি পাচ্ছেন। বই কেনার ক্ষেত্রে সব সময় উৎসব আর ছুটির দিন বর্জন করুন। কারণ এসময় মেলায় প্রচণ্ড ভিড় থাকে এবং অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা থাকে।কথায় আছে ‘বই কিনে কেউ কোনদিন দেউলিয়া হয় না।’ তবে বই কেনার জন্য টাকা আলাদা করে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। এক্ষেত্রে বইমেলার জন্য আগে থেকেই বেশ কিছু টাকা জমানো যেতে পারে।উপহার হিসেবে বই সর্বশ্রেষ্ঠ, এই কথা সবাই জানি! পরিবার,বন্ধু আর প্রিয় মানুষদের এই মাসে বই উপহার দিয়ে একটা সারপ্রাইজ দেয়া যেতে পারে। তাছাড়া কাছের মানুষদের একটা লিস্ট করে রাখুন। পছন্দানুযায়ী বই কিনুন।এরপর তাদের জন্মদিনে একে একে গিফট করুন।সর্বশেষে মেলা প্রাঙ্গণে অতিরিক্ত ফেসবুক চেকইন এবং সেলফি তোলা বন্ধ করুন। এতে করে আপনি এবং দর্শনার্থী সবাই মিলে সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারবেন। ধারণা করা যায় সারা বছরের জন্য কিছু সুন্দর সুন্দর বই পেয়ে যাবেন।এফএইচ/একে/আরআইপি
Advertisement