সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো শুরু হয়নি অপারেশন সুবিধা। চিকিৎসক ও জনবল সংকটের কারণে অপারেশন থিয়েটার চালু করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে নির্মিত ৩১ শয্যা বিশিষ্ট বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করে সরকার। এরপর ২০১৬ সালে একটি নতুন তিনতলা আধুনিক ভবন নির্মাণ করে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। তবে প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে হাসপাতাল নির্মাণের ৩৮ বছরেও অপারেশন থিয়েটার চালু করা সম্ভব হয়নি। এতে রোগীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ আব্দুল কাইয়ুম বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন আন্তঃবিভাগ ও বহির্বিভাগ মিলে গড়ে ৩০০-৪০০ জন রোগী এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় লোকবল সংকটের কারণে এখানে সাধারণ চিকিৎসা ছাড়া কোন অপারেশন হয় না। নষ্ট হয়ে আছে এক্সরে মেশিন।
উপজেলার তেয়াশিয়া গ্রামের হবিবর রহমান নামের একজন বলেন, ‘আমার পুত্রবধূ গর্ভবতী ছিল। চরম ব্যথা হচ্ছিল। ব্যথার অবস্থা বেগতিক দেখে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসেছিলাম। এখানকার ডাক্তাররা নরমাল ডেলিভারি করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে জানান তাকে জরুরিভাবে সিজার করাতে হবে। এখানে সিজারের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে তাকে সিজার করাতে হলো। এতে আমার বেশি টাকা খরচ হয়েছে।’
Advertisement
মোজলেফা খাতুন নামের আরেকজন জানান, ‘হাসপাতালে তো ঠিকমতো পরীক্ষা নিরীক্ষাও হয় না। ডাক্তার পরীক্ষা যা দেয় তাই বাইরের ক্লিনিক থেকে করাতে হয়। কয়েকদিন আগে আমার ভাতিজার হঠাৎ করে পেট ব্যথা শুরু হয়। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ডাক্তার যা পরীক্ষা দিয়েছে সব বাইরে থেকে করাতে হয়েছে। পরীক্ষার কাগজ দেখে ডাক্তার বললো যে তার এপেন্ডিসাইটিস হয়েছে। এখানে তো অপারেশনের কোনো ব্যবস্থা নাই। তাই সিরাজগঞ্জ নিয়ে গিয়ে অপারেশন করাতে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ কয়েকদিন হলো জ্বর। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার দেখিয়েছি। বিভিন্ন পরীক্ষা দিয়েছে তাই ছুটছি ক্লিনিকের দিকে। এখানে তো সব পরীক্ষা করানো যায় না।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোফাখখারুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, চিকিৎসক ও জনবল সংকটের কারণে আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। অপারেশনের জন্য আমাদের এনেস্থিসিয়া মেশিন, ওটি টেবিল, লাইট সহ লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকায় সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, যখন কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয় তখন নতুন ভবনের সঙ্গে সঙ্গে অপারেশনের জিনিসপত্র আমাদের বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। কেন দেওয়া হয়নি আমার জানা নেই। তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে অপারেশন থিয়েটার চালুর জন্য ১০ বার চাহিদা পাঠিয়েছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেগুলো পাইনি।
Advertisement
এসব বিষয়ে জানতে জেলা সিভিল সার্জন ড. রাম পদ রায়ের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এসজে