দেশজুড়ে

ঝিনাইদহে সার সংকট, আমন আবাদ নিয়ে শঙ্কায় কৃষক

ঝিনাইদহে সার সংকটে আমন চাষ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বেশি টাকা দিয়েও চাহিদামতো সার মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা। তবে বিক্রেতারা সংকটের কথা স্বীকার করলেও কৃষি বিভাগ বলছে, জেলায় নেই কোনো সার সংকট।

Advertisement

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৪ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরই মধ্যে রোপণ শেষ হয়েছে ৮০ হাজার ৭৯৮ হেক্টর জমিতে। গত আগস্ট মাসের ২ তারিখে ইউরিয়া সারের দাম বাড়িয়ে ৫০ কেজির বস্তা নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ১০০ টাকা। এছাড়া পটাশ সারের সরকারনির্ধারিত দাম ৬৫০ টাকা, টিএসপি এক হাজার টাকা ও ডিএপি ৭০০ টাকা বস্তা।

সদর উপজেলার চুটলিয়া গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, অনেক কৃষক ফসলের ক্ষেতে কাজ করছেন। কথা হলে তারা বলেন, স্থানীয় দোকান থেকে বাড়তি দামে প্রয়োজনের অর্ধেক সার কিনে জমিতে দিচ্ছেন। সারের তীব্র সংকটের কথা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন চাষিরা।

কৃষক ওলিয়ার লস্কর বলেন, আমরা কোনো সারই পাচ্ছি না। ইউরিয়া যদিও দু-এক বস্তা পাচ্ছি তাও দাম বেশি। ১৩০০-১৪০০ টাকা করে যে যা পাচ্ছে সেই দামে বিক্রি করছে। আর ফসফেট, পটাশ তো পাওয়ায় যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় আমরা ধানের আবাদ করবো কীভাবে। আগে জানলে আমরা ধানের আবাদ করতাম না। এত টাকা খরচ করে আবাদ করে ধানের দাম পাওয়া যায় না, তাহলে আমরা খাব কী? এছাড়া তো আমাদের আর কোনো ইনকাম নেই।

Advertisement

কৃষক রেজাউর লস্কর বলেন, তেল-সারের দাম সে হারে বেড়েছে তাতে কোনো কিছুর হিসাব মিলাতে পারছি না। ধানের দাম তো আর তেমন বাড়বে না। আমরা চাষ করে কী করবো, কৃষকের তো কোনো দাম নেই।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাব-ডিলার হোসেন আলী বলেন, বিসিআইসি ও বিএডিসি গোডাউন থেকে চাহিদার তুলনায় সার কম মিলছে। সরকারি বরাদ্দ কম থাকায় কৃষকরা পর্যাপ্ত সার পাচ্ছে না। যেখানে লাগবে ১০ কেজি সেখানে কৃষক পাচ্ছে পাঁচ কেজি।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আজগর আলী বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আমাদের সারের সংকট না থাকা স্বত্বেও তারা কৃত্রিম সংকটের চেষ্টা করছিল। তারা কিছু মুনাফা অর্জন করার জন্য এমনটা করেছিল কিন্তু আমরা কঠোরভাবে এটা মনিটরিং করছি। যার কারণে গত মাসের যে সার সেটা ৮০০ টাকায় বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছি এবং এই মাসের যে বর্ধিত মূল্য সেই দামে আমরা বিক্রি করছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ইউরিয়া সারের কোনো ঘাটতি নেই, শুধুমাত্র পটাশের ঘাটতি আছে। যে সারের বরাদ্দ দিয়েছিল তার অর্ধেক পেয়েছি। বিএডিসির গোডাউনে সার সরবরাহ দিতে না পারায় আমাদের এই সংকট টা সৃষ্টি হয়েছিল কিন্তু তারপরেও অন্যান্যভাবে সারগুলো জোগাড় করে আমরা চাহিদা পূরণ করেছি।

Advertisement

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এমআরআর/এএসএম