ডিজিটাল প্রযুক্তি দেশের মানুষের জীবনধারা পাল্টে দিয়েছে। নারী উদ্যোক্তা তৈরিতেও এই প্রযুক্তি অভাবনীয় ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
Advertisement
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি ঘোষণার পর এর গভীরতা না বুঝে অনেকেই বিদ্রূপ করেছেন। বিদ্রূপকারীরা ২০২২ সালে এসে বুঝতে পেরেছেন ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে অনলাইনে কোরবানির পশু কেনাকাটা, ঘরে বসে সরকারি সেবা পাওয়া, কোভিডকালে অচল জীবনযাত্রা সচল রাখা।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় বিআইআইএসএস মিলনায়তনে নারী উদ্যোক্তাদের তিন দিনব্যাপী আঞ্চলিক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ডিজিটাল কমার্স এবং ডিজিটাল মার্কেটিং প্লাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে সাপ্লাই চেইন শক্তিশালীকরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ইউএন ইসক্যাপ ও বিআইআইএসএস।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন কেবল বিশ্বের অনুকরণীয় দৃষ্টান্তই নয়, এই কর্মসূচি ২০৪১ সালে জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্যসমাজ প্রতিষ্ঠা করতে সহায়ক হবে। এর মাধ্যমে দারিদ্র্য ও বৈষম্যহীন উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণ সহজ হবে।
Advertisement
এসময় মন্ত্রী ডিজিটাল বাণিজ্য সম্প্রসারণে ক্রস বর্ডার নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি নারী উদ্যোক্তাদের ৫ম শিল্প বিপ্লবের জন্য তৈরি হওয়ার আহ্বান জানান। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে নিজের ৩৫ বছরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতায় নারীরা তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো করছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি সারা দুনিয়ায় কেবল একটি অনুকরণীয় কর্মসূচিই নয়, ডিজিটাল শিল্পবিপ্লব কর্মসূচি শুরু হয়েছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব কর্মসূচি ধারণা প্রকাশের ৮ বছর আগে। এটিও একটি মাইলফলক ঘটনা।
ডিজিটাল কমার্সে নারী উদ্যোক্তাদের সফলতার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আমাদের নারীরা উপযুক্ত পরিবেশ পেলে ডিজিটাল সভ্যতাকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
মন্ত্রী ডিজিটাল যুগের উপযোগী মানবসম্পদ তৈরিতে মায়েদের ভূমিকা অপরিসীম উল্লেখ করেন। সন্তানকে ডিজিটাল ডিভাইস থেকে নিরুৎসাহিত না করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা ডিভাইস ব্যবহার করবে, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করবেন আপনারা।
Advertisement
তিনি বলেন, একটি ছুরি দিয়ে মানুষ হত্যা করা যায় আবার জীবন রক্ষায়ও ছুরিটি ব্যবহার করা যায়।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, বিআইআইএসএস’র ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক কর্নেল এম এ সাদি, ইসক্যাপের সাউথ অ্যান্ড সাউথ ওয়েস্ট এশিয়ার উপ-পরিচালক ড. রাজেন এস রত্না, ইউএনআরসি প্রতিনিধি মিস সুবর্ণা, সাউথ এশিয়া উইমেন ডেভেলপমেন্ট ফোরামের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতি নাসরিন এফ আউয়াল এবং উইমেন ইন ই-কমার্স বাংলাদেশের সভাপতি নাসিমা আক্তার বক্তব্য দেন।
এ সময় বক্তারা ডিজিটাল কমার্স সম্প্রসারণে নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা আঞ্চলিক এই প্রশিক্ষণকে এই অঞ্চলের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য খুবই ফলপ্রসূ বলে উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা এবং মালদ্বীপ থেকে ১১০ জন নারী উদ্যোক্তা তিন দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন।
এইচএস/কেএসআর/জিকেএস