জাতীয়

আলোচনার মাধ্যমেই তিস্তা ইস্যু সমাধানের আশা শেখ হাসিনার

বাংলাদেশ ও ভারত নিজেদের মধ্যকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি আশা করি, এমন আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো, এমনকি তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়টিও দ্রুতই আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হবে।

Advertisement

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াদিল্লির ‘হায়দরাবাদ হাউস’-এ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতি প্রদানকালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির প্রতি ভারতবাসীর সহযোগিতার কথা স্মরণ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের জনগণ আমাদের সহযোগিতা করেছে, আশ্রয় দিয়েছে। ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরও এই ভারতের মানুষ আমাদের আশ্রয় দিয়েছে, সহযোগিতা করেছে। এ আশ্রয়-সহযোগিতা আমাদের সারাজীবন মনে থাকবে।’

নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে আমরা এমন কিছু সমঝোতা স্মারক করেছি, যাতে উভয় দেশের উন্নয়ন ও কল্যাণ হবে। এমন কিছু বিষয়ে আমরা মতৈক্যে পৌঁছেছি যা উভয় দেশের মানুষের কল্যাণকর। আমাদের প্রত্যাশা, শুধু বাংলাদেশ-ভারত নয়, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ারও কল্যাণ হোক, সমৃদ্ধি হোক।

Advertisement

বন্ধুপ্রতীম দেশের মধ্যে কিছু বিষয়ে বিরোধ থাকবেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত নিজেদের মধ্যকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছে। ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ‘প্রতিবেশী কূটনীতির’ রোল মডেল।

দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যকার বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।

এগুলো হলো-১. কুশিয়ার নদী থেকে বাংলাদেশের ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহারের সমঝোতা স্মারক। এতে বাংলাদেশের পক্ষে সই করেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার। ভারতের পক্ষে সই করেন জলশক্তি মন্ত্রণালয়ের পানিসম্পদ, নদী উন্নয়ন ও গঙ্গা পুনরুজ্জীবন বিভাগের সচিব পঙ্কজ কুমার।

২. বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা বিষয়ে ভারতের বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (সিএসআইআর) সঙ্গে বাংলাদেশের সিএসআইআরের সমঝোতা স্মারক সই হয়। এতে বাংলাদেশের পক্ষে সই করেন বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আফতাব আলী শেখ। ভারতের পক্ষে সই করেন সিএসআইআরের মহাপরিচালক ড. এন কালাইসেলভি।

Advertisement

৩. বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট ও ভারতের ভুপালে অবস্থিত ন্যাশনাল জুডিসিয়াল অ্যাকাডেমির মধ্যে সমঝোতা স্মারক। এতে বাংলাদেশের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল গোলাম রাব্বানি এবং ভারতের পক্ষে বিচারপতি এ পি সাহি সই করেন।

৪. ভারতের রেলওয়ের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোতে বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য দুদেশের রেল মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা স্মারক সই হয়। এতে বাংলাদেশের পক্ষে ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান এবং ভারতের পক্ষে রেলওয়ে বোর্ডের মুখ্য নির্বাহী পরিচালক ভি জি ভুমা সই করেন।

৫. বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্যপ্রযুক্তিগত সহযোগিতার জন্য ভারত ও বাংলাদেশের রেল মন্ত্রণালয় আরেকটি সমঝোতা স্মারক সই করে। এতে বাংলাদেশের পক্ষে ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান এবং ভারতের পক্ষে দেশটির রেলওয়ে বোর্ডের ইডিটি (ট্রাফিক) দীপক কুমার ঝা সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

৬. ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম ‘প্রসার ভারতী’র সঙ্গে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সমঝোতা স্মারক। এতে বাংলাদেশের পক্ষে সই করেন বিটিভির মহাপরিচালক সোহরাব হোসেন এবং ভারতের ‘প্রসার ভারতী’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মায়াঙ্ক কুমার আগারওয়াল।

৭. বাংলাদেশের বিটিসিএল ও ভারতের এনএসআইএলের মধ্যে মহাশূন্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতাবিষয়ক সমঝোতা স্মারক। এতে বিএসসিএলের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. শাহজাহান মাহমুদ এবং এনএসআইএল চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রাধাকৃষ্ণাণ সই করেন।

এইচএ/এএএইচ/জিকেএস