সালাম মানে শান্তি, প্রশান্তি, কল্যাণ, দোয়া, আরাম, আনন্দ ইত্যাদি। সালাম ইসলামের অভিবাদন পদ্ধতি। একে অপরকে অভ্যর্থনা জানাতে সালাম দিয়ে থাকেন। এ সালাম দেওয়ার রয়েছে সুন্দর পদ্ধতি। কিন্তু একে অপরকে সালাম দিলে কি তাতে সওয়াব হবে? সালামের সওয়াব পাওয়ার ধরনই বা কেমন?
Advertisement
আল্লাহ তাআলা সর্বপ্রথম আদম আলাইহিস সালামকে সালামের প্রশিক্ষণ দেন। তাকে সৃষ্টির পর মহান আল্লাহ ফেরেশতাদের সালাম দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি সালাম দিলে ফেরেশতারাও এর উত্তর দেন। আরবি ‘আসসালামু আলাইকুম’ মানে হলো- আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। সালামের মাধ্যমে পরস্পরের জন্য শান্তি ও কল্যাণ কামনা করা হয়।
সালাম দেওয়া সুন্নাত ও নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ। আর সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব বা আবশ্যক। সালাম দেওয়ায় রয়েছে সুন্দর পদ্ধতি ও সওয়াব পাওয়ার হাতছানি। সালাম দেওয়ার পদ্ধতির ওপর সওয়াব বেশি-কম হওয়া নির্ভর করে। হাদিসে পাকে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিষয়টি এভাবে তুলে ধরেছেন-
হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, একদিন এক ব্যক্তি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে উপস্থিত হয়ে বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম’। নবিজি তার সালামের জবাব দিলেন। এরপর লোকটি বসে পড়লো। তখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এ লোকটির জন্য ১০টি সওয়াব।
Advertisement
এরপর আরেক ব্যক্তি নবিজির খেদমতে উপস্থিত হয়ে বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’। নবিজি তার সালামের জবাব দিলেন। এরপর লোকটি বসে পড়লো। তখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এ লোকটির জন্য ২০টি সওয়াব।
এরপর আরেক ব্যক্তি নবিজির খেদমতে উপস্থিত হয়ে বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। নবিজি তার সালামের জবাব দিলেন। এরপর লোকটি বসে পড়লো। তখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এ লোকটির জন্য ৩০টি সওয়াব।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ, মিশকাত)
এ হাদিস থেকে বুঝা যায়, সালাম দেওয়ায় রয়েছে সুন্দর পদ্ধতি ও সওয়াব পাওয়ার সুযোগ। যে ব্যক্তি সালাম দেবে সে সওয়াব পাবে। শুধু সালাম দিলে ১০ নেকি। সালামের সঙ্গে অভিবাদন বাক্য বাড়িয়ে বললে পর্যায়ক্রমে সওয়াবের পরিমাণও বাড়তে থাকে।
এভাবে সালামের অনেক ফজিলত রয়েছে। সালামের ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যখন দুজন মুসলমানের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়, সালাম-মুসাফাহা (হ্যান্ডশেক) করে তখন একে অপর থেকে পৃথক হওয়ার আগেই তাদের সব গুণাহ মাফ করে দেওয়া হয়। এছাড়া সালামের দ্বারা পরস্পরের হিংসা-বিদ্বেষ দূর হয়। অহঙ্কার থেকেও বেঁচে থাকা যায়। সর্বত্র সালামের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় একে অপরের মধ্যে ভালোবাসা ও সৌহার্দ্য।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পারস্পরিক দেখা-সাক্ষাতে বেশি বেশি সালাম দেওয়ার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এএসএম