জোকস

সপ্তাহের রসালাপ: গোপালের রহস্যময় চিঠি

গোপাল ভাঁড় ছিলেন মধ্যযুগে নদিয়া অঞ্চলের একজন প্রখ্যাত রম্য গল্পকার, ভাঁড় ও মনোরঞ্জনকারী। তার আসল নাম গোপাল চন্দ্র প্রামাণিক। তিনি অষ্টাদশ শতাব্দীতে নদিয়া জেলার প্রখ্যাত রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজসভায় নিযুক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন সৎ ও বুদ্ধিমান। বুদ্ধি ও সৎসাহস থাকার কারণে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তাকে তার সভাসদদের মধ্যকার নবরত্নদের একজন হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।

Advertisement

গোপাল শুধু রাজ দরবারেই নয় মজা করতেন সবার সঙ্গেই। একদিন তার এক প্রতিবেশী বুড়ি এসছে তার কাছে। এসে বলছে, বাবা গোপাল, তোমার কি এখন সময় হবে?

গোপাল খুব হাসি হাসি মুখ নিয়ে বললো, কেন দিদিমা? বুড়ি বললেন, অনেকদিন হলো ন্যাপ্লার কোনো খবর পাচ্ছি না, ন্যাপ্লাকে একখানা চিঠি লিখে দাও বাবা।

গোপাল বুড়িকে জিজ্ঞাসা করলো, ন্যাপ্লা কোথায় থাকে দিদিমা? বুড়ি বললেন, হরিপুরে থাকে, তা এখান থেকে প্রায় দশ-ক্রোশ দূর হবে।

Advertisement

গোপাল বললো, দিদিমা, আমি তো এখন চিঠি লিখতে পারব না, আমার যে পায়ে ভীষণ ব্যথা হয়েছে। দিদিমা হেসে বললেন, চিঠি লিখবে হাত দিয়ে, পায়ে ব্যথা হয়েছে তাতে কি হয়েছে? একটু কষ্ট করে লিখে দাও না বাবা।

গোপাল বললো, চিঠি লিখতে হলে পা ঠিক থাকতে হয়, নইলে চিঠি লেখার কোন মানে হয় না। বুড়ি বললেন, তার মানে? তুমি কি হাত পা মিলিয়ে চিঠি লেখ?

গোপাল হেসে জবাব দিলো, তা অনেকটা সে রকমই। আমার হাতের লেখা এরকমই যে আমি ছাড়া সে চিঠি আর অন্য কেউ পড়তে পারে না, বুঝতেও পারে না। সেই চিঠি হয়ে যায় তাদের কাছে এক রহস্যময় বস্তু। যাতে কোনো ম্যাপ আঁকা নাকি কিছু লেখা সেটা বোঝাতে আমাকেই গিয়ে আবার সে চিঠি পড়ে দিয়ে আসতে হয়। এখন আমার পায়ে বড্ড ব্যথা দু’চার দিনের মধ্যে দশ ক্রোশ পথ হেঁটে যেতে পারব বলে মনে হয় না, তাই বলছিলাম আপনি অন্য কাউকে দিয়ে চিঠিখানা লিখিয়ে নিন।

গোপালের কথা শুনে বুড়ি বললেন, তুমি অবাক করলে বাবা, এমন কথা বাপের জন্মেও শুনিনি।

Advertisement

গোপাল বললো, দিদিমা কিছু মনে করবেন না, নেহাৎ পায়ে ব্যথা নইলে আপনার চিঠি অবশ্যই লিখে দিতাম।

লেখা: সংগৃহীতছবি: সংগৃহীত

প্রিয় পাঠক, আপনিও অংশ নিতে পারেন আমাদের এ আয়োজনে। আপনার মজার (রম্য) গল্পটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়। লেখা মনোনীত হলেই যে কোনো শুক্রবার প্রকাশিত হবে।

কেএসকে/এমএস