কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত শতাধিক নেতাকর্মী আহতের খবর পাওয়া গেছে। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
বর্তমানে উপজেলা সদরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বুধবার (৩১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
আহতদের মধ্যে মো. মাইন উদ্দিন, রাসেল মিয়া, নুর নবী মিদুল, স্বপন, সুমন মিয়া, সালাউদ্দিন, মানিক মিয়াজী ও ইব্রাহিমের নাম জানা গেছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ভোলায় পুলিশের গুলিতে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতা নিহতের প্রতিবাদে নাঙ্গলকোট উপজেলা সদরে বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। ওই সমাবেশে যোগ দিতে সকাল ৭টা থেকে বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে জড় হতে থাকেন।
Advertisement
সকাল পৌনে ১০টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হয়ে রেলগেইট এলাকায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তাদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
নাঙ্গলকোটের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা আবদুল গফুর ভূঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে উপজেলায় আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষাণা করি। গতকাল রাত থেকে পুলিশ বিভিন্নভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে। সকাল সোয়া ১০টার দিকে শান্তিপূর্ণ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে রেলগেইট বটতলা এলাকায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর পাথর নিক্ষেপ করে হামলা চালায়। এতে আমাদের অন্তত শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তাদেরকে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও উপজেলা সদরের বাইরে বিভিন্ন সড়কে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের আটক করে তাদের কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করা করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ সাদেক হোসেন ভুঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, মাননীয় অর্থমন্ত্রীর নির্দেশ নাঙ্গলকোট শান্তির জায়গা, কোনো অস্থাতেই এখানে অশান্তি করা যাবে না। যদি অশান্তি করে আপনারা তাদের প্রতিহত করবেন। সে অনুসারে আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থানে ছিলাম। বাজার আমাদের দখলেই ছিল। এক পর্যায়ে তারা মিছিল বের করে আমাদের কর্মীদের ওপর পাথর নিক্ষেপ করেন। জবাবে আমাদের কর্মীরাও পাল্টা পাথর নিক্ষেপ করে। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি তাদের পাথরের আঘাতে আমাদের ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশাঙ্কাজনক। তাকে কুমিল্লায় নেওয়া হয়েছে। তাবে আহতদের নাম জানাতে পারেননি তিনি।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা উপজেলা সদরে বিক্ষোভের নামে নৈরাজ্য চালিয়েছে। ভাঙচুর করেছে দোকানপাট। হামলা চালিয়েছে পুলিশের ওপরও। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন জাগো নিউজকে জানান, হামলা চলাকালে আমিসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
জাহিদ পাটোয়ারী/এফএ/জেআইএম