সারের কৃত্রিম সংকট ও কারসাজি রোধে সারাদেশে আগস্ট মাসে ৩৮৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত ৩৮৩জন ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীকে ৫৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। এর আগে কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ফাম ভিয়েত চিয়েন সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাংবাদিকদের কৃষিমন্ত্রী জানান, যশোর জেলায় সবচেয়ে বেশি ৬০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এছাড়া ময়মনসিংহে ৩৫টি, নওগাঁয় ৩১টি, ঠাকুরগাঁও ও নড়াইলে ২০টি করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে।
‘নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যারা অনিয়ম করেছে তাদের লাইসেন্স বাতিল করার জন্য। লাইসেন্স দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। আমরা তাদের কাছে সুপারিশ পাঠাচ্ছি, তারা এটা পরীক্ষা করবে এবং অনেক ডিলারের লাইসেন্স বাতিল হবে বলে মনে করছি আমরা।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘এখন চাষিরা ধান লাগানোর জন্য পাগল হয়ে গেছে। তাদের সারও কিনতে হয়। হয়তো ডিলার বলতেছে গাড়ি আসেনি বা কোনো কারণে আজকে সার নেই, কাল আসেন। কৃষক হয়তো বলে না থাকলেও কিছু দাও, তখন চালাকি করে কারসাজি করে দাম বেশি নিচ্ছে। অন্যদিকে আবার ডিসি, এসপি ও কৃষি কর্মকর্তাদের ফোন করলে বলে আমাদের এখানে সারের কোনো সমস্যা নেই। আমাদের গুদামে সারের সংকট নেই, গত বছরের চেয়ে এবার বেশি সার দিচ্ছি। তারপরও কেন দাম বাড়বে। এখানে আমাদের প্রশাসনের কিছুটা ব্যর্থতা নিশ্চয়ই আছে। দাম বাড়ার তো কোনো কারণ নেই। সংকট নেই।’
প্রশাসনের ব্যর্থতার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রশাসনের লোক থাকতে পারে, সেটাও আমরা দেখছি। খুব শক্তভাবে, কঠোরভাবে আমরা এটা করার চেষ্টা করছি। রংপুর ও বগুড়ায় এটা বেশি হয়েছে, আমরা এগুলো তদন্ত করছি।’
আগস্টে আজকে পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে আমদানি করা এক লাখ ৮০ হাজার টন এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) সার দেশে পৌঁছেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী সেপ্টেম্বর মাসে এক লাখ ১৬ হাজার টন সার দেশে পৌঁছাবে। অন্যদিকে, সেপ্টেম্বরে ৫১ হাজার টন ও অক্টোবর ৭০ হাজার টন এমওপি সারের চাহিদা রয়েছে। ফলে চাহিদার চেয়ে মজুত অনেক বেশি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চাহিদার বিপরীতে দেশে সবরকমের সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। বর্তমানে (২৫ আগস্ট) ইউরিয়া সারের মজুত ৬ লাখ ৫৬ হাজার মেট্রিক টন, ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ৩ লাখ ৯৪ হাজার টন, ডাই অ্যামুনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) ৮ লাখ ২৩ হাজার টন, এমওপি ২ লাখ ৭৩ হাজার টন। সারের বর্তমান মজুতের বিপরীতে আমন মৌসুমে (আগস্ট থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত) সারের চাহিদা হলো ইউরিয়া ৬ লাখ ১৯ হাজার টন, টিএসপি ১ লাখ ১৯ হাজার টন, ডিএপি ২ লাখ ২৫ হাজার টন, এমওপি ১ লাখ ৩৭ হাজার টন। বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায়ও সারের বর্তমান মজুত বেশি।’
Advertisement
আরএমএম/এমএএইচ/এএসএম