সিলেট-কৈলাশটিলা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-আশুগঞ্জ জাতীয় কনডেনসেটবাহী গ্রীডলাইন থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। দীর্ঘদিন তেল চুরি বন্ধ থাকলেও চলতি শীতে ঘন কুয়াশার ফলে আবারও তেল চুরি বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর ফলে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে তেমনি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটারও শঙ্কা রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিলেটের কৈলাশটিলার বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ পর্যন্ত ১৭৫ কিলোমিটার এলাকায় মাটির নিচে পাইপ দিয়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ও গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এসব তেল ও গ্যাস দেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সার কারখানা ও শিল্প কারখাগুলোতে সরবরাহ করা হয়।পেট্রোবাংলার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে প্রতিদিন অন্তত সাড়ে ৪ হাজার ব্যারেল তেল সরবরাহ করা হয়। তবে সরবরাহকৃত অপরিশোধিত এ তেলে উচ্চমাত্রার দাহ্য পদার্থ থাকায় গ্রিড লাইন ছিদ্র করে তেল চুরির সময় বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডসহ প্রাণহানি এবং পরিবেশ বিপর্যয় ঘটতে পারে। তবে সম্প্রতি একটি সংঘবদ্ধ তেল চোর চক্র মাটির নিচ দিয়ে প্রবাহিত গ্রিড লাইন ছিদ্র করে তেল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।সর্বশেষ গত জানুয়ারি মাসে মাসে জেলার বিজয়নগর উপজেলার সাতবর্গ এলাকায় তেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সাতবর্গ এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন জমির নিচ থেকে পাইপ লাইন ছিদ্র করে তেল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় একটি তেলবাহি লরিতে আগুন ধরে যায়। পরে খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও মাধবপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের প্রায় আড়াই ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।তবে জিটিসিএল এর আশুগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবদুল মোমিন সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন তেল চুরি বন্ধ ছিল, সম্প্রতি শীতে ঘন কুয়াশা এবং নিরাপত্তারক্ষীদের উদাসীনতার কারণে চোর চক্রটি আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর ফলে তেল চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে।এদিকে, তেল চোর চক্রটিকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানিযেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহরিয়ার আল মামুন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, তেল চুরি বন্ধে জিটিসিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পুলিশি টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে যেন তেল চুরির ঘটনা আর না ঘটে সেজন্য বিশেষ পরিকল্পনা করা হয়েছে।আজিজুল আলম সঞ্চয়/এমজেড/পিআর
Advertisement